ছেলেরা কিভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করে | প্রেম নাকি বন্ধুত্ব

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমিও ভালো আছি। আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব ছেলেরা কিভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করে, কিভাবে মেয়েদের কি প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া উচিত সেই সম্পর্কে, প্রেম নাকি বন্ধুত্ব কোনটার শক্তি সবচেয়ে বেশি? সেই সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের অনেক ভাল লাগবে।

ছেলেরা কিভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করে

ভালোবাসা প্রকাশ

একজন ছেলে কিভাবে তার মনের প্রেমের অনুভূতি বা ভালোবাসা প্রকাশ করে, সেটির উপর নির্ভর করে তার ভালোবাসার মানুষটির তার প্রতি ভালোবাসার প্রতিক্রিয়া। ভালোবাসতে যেকেউ জানলেও ভালোবাসার অনুভূতি সবাই প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়। আর এই ব্যর্থতা থেকেই ভালোবাসার ইতি ঘটে।

তবে কারো থেকে দেখে কিংবা শুনে কখনো ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ করা যায়না। আপনার মনে, আপনার ভালোবাসার মানুষটির প্রতি যে অনুভূতির উদয় হয়েছে সেটি কেবল আপনার দ্বারা প্রকাশ পাবে।

তাহলে প্রশ্ন, আপনি কিভাবে আপনার প্রেম বা ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারেন? কিংবা আপনি কিভাবেই বা আপনার প্রিয় মানুষকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারেন সেটা নিয়ে আজকের পরামর্শ। এছাড়াও শেষে আপনাদের বলবো বর্তমান দিনেও প্রেম নাকি বন্ধুত্ব, কোনটির শক্তি সবচেয়ে বেশি সে ব্যাপারে। তবে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কিভাবে ভালোবাসা বা প্রেমের অনুভূতি প্রকাশ করবেন?

১. বক্তা নয় বরং শ্রোতা হওয়া শ্রেয়

আমরা সবাই বলতে ভালোবাসি। খুব কম সংখ্যক মানুষ আছেন যারা শুনতে ভালোবাসেন। আর তাই যদি ভালোবাসা প্রকাশ করার কোনো শ্রেষ্টতম উপায় থাকে তবে সেটি হচ্ছে নিজেকে একজন শ্রোতা হিসেবে তৈরি করা। বিষয়টা কেমন অগোছালো লাগছে তাই না?

<

দেখুন আমরা সবাই চাই আমাদের কথা কেউ শুনুক। ঠিক তাই যখন কেউ আপনার কথা মন দিয়ে শুনে তার জবাব দেয় তখন আপনি অনেক খুশি অনুভব করেন। আর তাই, আপনি যদি কাউকে ভালোবেসে থাকেন এবং তাকে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন তবে আপনি শ্রোতা হতে শিখুন। বলা নয় বরং তার কথা গুলো শুনতে শিখুন।

২. আচরণের ধরণ মার্জিত হওয়া আবশ্যক

আমাদের আচরণের দ্বারা আমাদের ব্যক্তিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। যে ব্যক্তির আচরণ যেরূপ সে সেরূপ ব্যবহার পেয়ে থাকেন। তাই নিজের প্রিয় মানুষের সাথে আপনার আচরণ হওয়া চাই মার্জিত।

মার্জিত বিষয়টা একটু খোলামেলা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কথা বলার ধরণ, দৃষ্টিভঙ্গি, হাঁটাচলা, পোশাকের ধরন ইত্যাদি। সবসময় চেষ্টা করুন যতটুকু কাম্য ঠিক ততটুকু কথা বলতে। চেষ্টা করুন নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক রাখতে, এছাড়াও হাঁটাচলা যেন মার্জিত হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন। নিজের ইচ্ছেমত নয়, বরং আপনার ভালোবাসার মানুষের পছন্দ অপছন্দের ভিত্তিতে নিজের অভ্যাস বা আচরণকে প্রাধান্য দিন।

৩. প্রেমিক কিন্তু প্রকৃত বন্ধু হওয়া আবশ্যক

একজন প্রকৃত বন্ধু হচ্ছে সে ব্যক্তি যেকিনা আপনাকে সব পরিস্থিতিতে সঙ্গ দিবে। আপনার বিপদ বা ভালো সময়ে আপনার সাথে সর্বদা থাকবে।

কাউকে ভালোবাসলে কিংবা কারো প্রেমে পড়লে সর্বপ্রথম আমরা সবাই নিজেদের প্রেমিক বা ভালোবাসার পুরুষ ভাবতে শুরু করে দেই যেটা কাম্য নয়। আর তাই প্রেমিক হওয়া থেকে একজন প্রকৃত বন্ধু হয়ে ওঠা আবশ্যক। সর্বদা তার পাশে থাকার মাধ্যমে একজন প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠার সাথে সাথেই হয়ে উঠা হয় একজন প্রকৃত প্রেমিক।

এই ৩ টি পরামর্শ যদিওবা ছোট তবে কোন মানুষ যদি এসব মেনে তার ভালোবাসা প্রকাশ করেন তবে আপনার ভালোবাসা অত্যন্ত সাবলীল ভাবে প্রকাশ করতে পারবেন আপনি।

কিভাবে মেয়েদের প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া উচিত

কিভাবে মেয়েদের প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া উচিত?

একজন ছেলে হিসেবে আপনার মনে প্রশ্ন থাকতেই পারে যে আপনি কিভাবে একজন মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিবেন। গতানুগতিক পদ্ধতিতে, ইংরেজি বাক্য ‘I love you’ বলে ভালোবাসা প্রকাশ করলেই যে সে মেয়ে আপনার ভালোবাসা গ্রহণ করবে সেটা নাও হতে পারে। সবকিছুর জন্য একটি উপযুক্ত সময় আছে, এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়।

কখন প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া উচিত?

দেখুন কোনো মেয়েকে প্রেমের বা ভালোবাসার প্রস্তাব দেওয়ার আগে তার সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। কেবল ভালো লাগা মাত্র কাউকে ভালোবাসি বলে দেওয়াটা সঠিক নয়। আর তাই প্রথম কাজ হবে আপনি যাকে আপনার ভালোবাসার কথা বলতে চান তার বিষয়ে জেনে নেওয়া।

অতঃপর তার বিষয়ে জানার পর এটা জেনে নিতে হবে সে কাউকে ভালোবাসে কিনা। আপনি হয়তো তাকে আপনার ভালোবাসা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন কিন্তু সেও হয়তোবা কারো সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে থাকতে পারে। তাই পূর্বে জেনে নেওয়াটা আবশ্যক।

এই পর্যায়ে সবশেষে আপনার জন্য তার কেমন অনুভূতি সেটা বুঝে নিতে হবে। আপনি যখন তার আশেপাশে থাকেন তখন তার আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি, কথাবার্তা দেখে যদি আপনার মনে হয় সে আপনাকে পছন্দ করতে পারে তবে আপনি তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি কিছু উপহার বা নিজের মুখে সেটা প্রকাশ করতে পারেন। তবে অন্য কারো দিয়ে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করাটা কাম্য নয়।

প্রেম নাকি বন্ধুত্ব

প্রেম নাকি বন্ধুত্ব কোনটার শক্তি সবচেয়ে বেশি?

একটা ছোট প্রশ্ন তবে উত্তর খুঁজছেন অনেক। সত্যি বলতে,প্রেম আর ভালোবাসা দুটি পৃথক জিনিষ। প্রেম হচ্ছে একটি পবিত্র বিষয় যেটির মানে যত্ন। অন্যদিকে বন্ধুত্ব হচ্ছে একটি পবিত্র বন্ধন যার মানে পাশে থাকা। যখনই প্রেমের মূল অর্থ বুঝে কেউ এই সম্পর্কে আবদ্ধ হয় তখন সেটি পবিত্র। আর বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে যারা প্রকৃত বন্ধু তাদের বন্ধন পবিত্র। তাই দুটোর শক্তি, একটি থেকে অন্যটি কম নয়। তবে বন্ধুত্বের বন্ধন পৃথিবীর অন্য সকল বন্ধনের তুলনায় শক্তিশালী

শেষ কথা

আজকে আপনাদের ভালোবাসা প্রকাশ করার উপায় এবং প্রেম ও বন্ধুত্বের বন্ধন নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি আশা রাখছি, আপনারা আপনাদের মনের সকল প্রশ্নের যথাযোগ্য উত্তর পেয়ে গেছেন।

সর্বোপরি, যদি আপনার এই ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নির্দ্বিধায় মন্তব্য করে জানাবেন। একটি কথা মাথায় রাখা উচিত “প্রেমিক নয় বরং কিন্তু একজন প্রকৃত বন্ধু হওয়া আবশ্যক”

পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts