আপনার জীবন পরিবর্তনকারী জাদুকরী ব্যক্তিটি আর কেউ নয়, আপনি নিজেই!

জীবন আমাদের কত ভাবেই না প্রভাবিত করে, তাই না? একটা ছোট ঘটনা হোক বা বড় কোন পরিবর্তন আসুক সমাজ ব্যবস্থায়, আমরা তা থেকে শিক্ষা নিই ঠিকই। তাহলে চলুন, আজ আপনাকে আরেকটি জীবন পালাবদলের মাধ্যম সম্পর্কে শোনাই। হতে পারে আপনিও আপনার জীবন পরিবর্তনের দ্বার প্রান্তে আছেন। তাহলে দেরি কেন আর?

আচ্ছা আমাদের জীবন কিভাবে বদলায়? কোন বাহ্যিক প্রভাবেই তো এই পরিবর্তন হয়, তাই না? এই প্রভাব বিভিন্ন ভাবে আমাদের উপর তার মায়াজাল তৈরি করে আর আমাদের জীবনের বাঁক বদলে দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই পরিবর্তনটা আসে বিশেষ কোন মানুষের দ্বারা। সেটা যে কেউ হতে পারে। আমরা অন্যের জীবনে এমন প্রভাব বিস্তারকারী আর পরিবর্তনশীল মানুষের আগমন দেখতে পাই আর মুগ্ধ হই।

অতঃপর শেষ পর্যন্ত তেমনই বিশেষ একজনের জন্য দোয়া করি যে এসে আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে। খুব করে চাই যেন এমন জাদুকরী কিছু হয়। আচ্ছা বন্ধু, যদি আপনার জীবনে ইতিমধ্যেই কেউ এসে থাকে, তবে পৃথিবীতে কীভাবে কেউ আপনার জীবন পরিবর্তন করতে পারে? যে আগে থেকেই আছে আপনার জীবন পরিবর্তনের জন্যে, তাকে কি চিনতে পেরেছেন? কনফিউশান দূর করছি।

আপনি যদি এমন একজনকে খুঁজছেন যে আপনার জীবন পরিবর্তন করতে পারে তাহলে আপনাকে আয়নার দিকে তাকাতে হবে। নাহ, কোন জাদুকরী আয়না না, শুধু আপনার ঘরের বড় আয়নার সামনে দাঁড়ান। এটির সামনে যান। এটার দিকে দেখুন ভালো করে। আপনি সঠিক ব্যক্তির দিকেই তাকিয়ে আছেন যিনি আপনার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেন এবং যার ওই ক্ষমতাটা আছে।

নিজেকেই নিজে দেখতে পাচ্ছেন, তাই তো? জ্বি, আমি আপনার কথাই বলছি যার উপর আপনি নিশ্চিন্তে আস্থা রাখুন এবং বিশ্বাস করুন। কারণ একমাত্র আপনিই যিনি আপনার প্রতিটি ত্রুটি জানেন এবং তা পুনরায় সংশোধন করার ক্ষমতা রাখেন। তাই আপনি যদি জীবন এবং গন্তব্য বদলাতে চান তবে কারো জন্য এটি পরিবর্তন করার জন্য অপেক্ষা করবেন না। কারণ এটি আপনার উপর নির্ভর করে। আপনি প্রত্যাশার বাইরে নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।

আপনি জানেন আপনার জন্য কোন সীমান্ত যথেষ্ট এবং কোন সীমানা প্রাচীর আপনি পেরিয়ে যেতে পারবেন। একটা কথা অতি অবশ্যই মনে রাখবেন, আপনাকে দোষারোপ করার, আপনাকে অভিযুক্ত করার, আপনাকে বিরক্ত করার, আপনাকে অভিশাপ দেওয়ার এবং সর্বোপরি, আপনাকে থামানোর মতো কেউ নেই। সুতরাং, আসুন আপনার অনুভূতি এবং নতুন পরিবর্তনশীল মনোভাব সম্পর্কে কিছু বড় কথা বলি। আমার চোখের দিকে তাকান এবং আমাকে বলুন আপনি সত্যিই কি চান নিজেকে নতুন এক মানুষ হিসেবে পরিবর্তন করতে? তাহলে নিচের ৩টা পয়েন্ট সব সময় মনে রাখবেন।

<

১) সময়ানুবর্তিতা: আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সময় বজায় রাখা এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করা। কারণ আপনি যখন সময়ের প্রতি মনোযোগ দেওয়া বন্ধ করেন এবং আপনার পছন্দ মতো সময় পার করেন, তখন আপনার চারপাশের জীবন পরিবর্তন হতে শুরু করে। আপনি অলস হবেন এবং আপনার জীবনকে অলস হিসাবে ধরে নেওয়া হবে। শীঘ্রই এটি আপনার সমস্ত ভাল এবং মহৎ কাজ দখল করবে। আপনি আপনার সততা, লক্ষ্যগুলির জন্য আবেগ, কঠোর পরিশ্রমী মানসিকতা এবং উদ্ভাবনী শক্তি হারিয়ে ফেলবেন। তাই অনুগ্রহ করে, সময় বজায় রাখুন। যদি সম্ভব হয়, আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মের একটি রুটিন তৈরি করুন। এটি আপনাকে সময়নিষ্ঠ হতে সাহায্য করবে। সর্বদা মনে রাখবেন যে পৃথিবী তাদের সম্মান করে যারা তাদের কাজে সময়নিষ্ঠ।

২) কঠোর পরিশ্রমী মানসিকতা: আপনি যদি প্রতিদিনের রুটিন অনুসরণ করেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করেন তবে আপনি আপনার লক্ষ্য অনুসরণ করছেন। এখন আপনার আবেগী লক্ষ্যে পৌঁছাতে এই তীব্র ইচ্ছা জাগিয়ে রাখতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু কেন? কারণ শুধু সময়ের প্রয়োজন মেটালেই হবে না। আরও কিছু উপকরণ দরকার। উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি দামী গাড়ি কিনতে পারেন। এর জন্য লোকেরা আপনার প্রশংসা করবে।

কিন্তু রাস্তায় গাড়ি চালানোর জন্য আপনার জ্বালানি দরকার নাহয় আপনাকে গাড়ি না চালিয়ে বসেই থাকতে হবে। সেই লোকজনই আবার হাসাহাসি করবে। একটি গাড়ি কেনা আপনার ড্রাইভিং ক্ষমতা প্রমাণ করবে না। সেই মতো, সময় বজায় রাখা প্রমাণ করবে না যে আপনি সফলতার এত কাছাকাছি। বিশ্বকে দেখানোর জন্য আপনার কঠোর পরিশ্রমী মানসিকতা দরকার যে আপনি আপনার স্বপ্নগুলি ছেড়ে দিচ্ছেন না। নিজেকে একটি অটুট পাহাড়ে রূপান্তরিত করার জন্য আপনাকে আপনার শরীর ঘামাতে হবে। আপনার চোখ সেই সাফল্যের সন্ধান করবে যা এখন খুব বেশি দূরে নয়।

৩) সততা: এটা আর না বললেই নয় যে এই পুরো নিবন্ধটি সততার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। খারাপ কাজ করার সময় কেউ কঠোর পরিশ্রম করতে পারে। আমি তাদের সমর্থন করছি না কারণ এটি কখনই আমার লক্ষ্য না। সৎ থাকুন এবং এটির সাথে থাকুন। আমি মানুষকে তাদের লক্ষ্যে প্রবেশ করার আগে সৎ থাকতে দেখেছি কিন্তু একবার তারা তাদের স্বপ্ন পূরণে সফল হলেই নিজের আবেগ এবং জীবনকে কলুষিত করতে শুরু করে। এই পরিবর্তন নিশ্চয়ই আপনি চান না? সুতরাং, আপনার আত্মাকে সততার সাথে সংযুক্ত করুন এবং আমার কথাটি ঠান্ডা মাথায় বোঝার চেষ্টা করুন। সাফল্য আপনার পিছনে ছুটবে।

এখন, আপনি আয়নার দিকে তাকাতে পারেন এবং আপনি আপনার জীবনের ব্যাপক পরিবর্তন দেখতে পাবেন। দেখুন ভালো করে। আপনার ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন করার জন্য আপনার কারও প্রয়োজন নেই। আপনি নিজেই নিজের জীবান পালটে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাই পরের বার যখন আপনি জীবনে সফল হবেন, তখন একটি আয়নার সামনে আবার দাঁড়াবেন এবং আপনি বুঝতে পারবেন কেন আপনাকে স্ব-অনুপ্রাণিত ব্যক্তি বলা হয়। শুভ কামনা আপনার জন্য।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন