আসুন জেনে নেই সামাজিক ভীতি দূর করার সাতটি উপায়

স্যোসাল ফোবিয়া বা সামাজিক ভিতি-  স্যোসাল ফোবিয়া বা সামাজিক ভিতি একটি দীর্ঘকালিন ভয় যা সামাজিক কর্মকান্ডের সময় হয়ে থাকে। বিশেষ করে এটি বয়ঃসন্ধি কালে হয়ে থাকে।যাদের হয় তারা সাধারণত বাইরে চলাফেরা করতে ভয় পায় এই ভেবে যে মানুষ তাকে সবসময় বিচার করছে। তারা সাধারণত চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারে না। তাদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকে। কিভাবে বুঝবেন আপনার সামাজিক ভীতি রয়েছে। তা নিচে দেয়া হল।

সামজিক ভীতির লক্ষণ

  • ১. সবসময় দৈনিক কাজকর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তা করা। কিভাবে অপরিচিত লোকের কথা বলতে হয়, কিভাবে ফোনে কথা বলতে হয়, কিভাবে শপিং করতে হয় এসব নিয়ে চিন্তায় থাকা এবং সেসব কাজ করতে অক্ষম হওয়া।
  • ২. মানুষের সামনে খেতে অসুবিধা হওয়া । অনেক ক্ষেত্রে কার সামনে একেবারে খেতে না পারা।
  • ৩. অপমানজনক বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করা। যেমন ক্লাসে পড়া ধরলে কি অপমান হবে সেটা বেশি মত্রায় ভাবা।
  • ৪. কারও সামনে কাজ করতে লজ্জা পাওয়া। মনে হবে যেন সবাই আমার কাজ দেখছে।
  • ৫. চোখে চোখ রেখে কথা বলতে অক্ষম হওয়া। সেটা যার সাথেই হোক।
  • ৬. কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে চমকে যাওয়া, ঘেমে যাওয়া, বুক ধক ধক করা।

কিভাবে সামজিক ভীতি দূর করবেন?

সামাজিক ভীতি দূর করার কিছু কৌশল আছে। সেগুলো নিয়মিত চর্চা করলে সামাজিক ভীতি অবশ্যই চলে যাবে। সামাজিক ভীতি দূর করার উপায়গুলো সাতটি উপায় নিচে দেয়া হল।

১. শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করুন

ভীতি আপানার শরীরে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে যেমন গলা শুকিয়ে যাওয়া, বুক ধক ধক করা, নিঃশ্বাস নেয়ার ভঙ্গি পরিবর্তিত হওয়া । এসব আপানাকে আরও লজ্জাজনক অবস্থায় নিয়ে যাবে।তাই চেষ্টা করতে হবে শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে। কোথাও ভালোভাবে বসে দুই সেকেন্ড ধরে নিঃশ্বাস আটকিয়ে ছয় সেকেন্ড ধরে ছাড়ুন। এরকম কিছুক্ষণ করুন।

২. ব্যায়াম

নিয়মিত কিছু হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। তবে ব্যায়াম যেটাই করবেন তা যেন নিয়মিত হয়। ব্যায়াম করা সম্ভব না হলে নিয়মিত হাঁটতে পারেন।

৩. প্রস্তুতি নিন

যে সব সামাজিক অবস্থা আপানাকে ভিত করে তুলে সেগুলোর জন্য আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে পারেন। যেমন কোন ডেটিং এ গেলে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তা আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন। অথবা কোন বিষয়ে বক্তৃতা দিতে হবে, আগে থেকেই অনুশীলন করে নিতে পারেন কিভাবে আপনি বলবেন।

৪. ছোট বিষয় দিয়ে শুরু করতে পারেন

সরাসরি বড় কোন সামাজিক পদক্ষেপ না নিয়ে ছোট ধাপে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। যেমন একা একা বাসার আশে পাশে কিছুক্ষণ ঘুরে আসলেন। তারপর পরিচিত মানুষের সাথে হালকা কথা বললেন। অপরিচিত মানুষের মাঝে কিছুক্ষণ থাকলেন।হঠাৎ বড় পরিসরে যেমন কোন অনুষ্ঠানে গেলে সামজিক ভীতি আরও জটিল হতে পারে।

৫. নিজের দিক থেকে মনযোগ সরিয়ে নিন

নিজেকে নিয়ে চিন্তা প্রচুর মাত্রায় আসতে পারে। যেমন আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে  অথবা মানুষ আপনাকে নিয়ে কি চিন্তা করছে। মাঝে মাঝে মানুষের ফেসিয়াল এক্সপ্রেসন দেখে মনে হতে পারে সে হয়ত আপনাকে নিয়ে খারাপ কিছু ভাবছে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে সেটা মিথ্যা হয়। তাই নিজের দিকে মনযোগ না দিয়ে অন্য দিকে দৃষ্টিপাত করুন।

৬. নেতি বাচক চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করুন

কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তা আসতে পারে । সেগুলো খাতায় লিখে রাখতে পারেন এবং তার বিপরীতে যুক্তি দাঁড় করাতে পারেন। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করা যায়। নেতি বাচক চিন্তা : আমি খুব ভয় পাচ্ছি।আমার দ্বারা এই কাজ সম্ভব না। বিপরীত যুক্তি: আমি আগেও ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু কাজ করতে কোন সমস্যা হয় নাই।

৭. আপনার পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে কাজে লাগান

দৃষ্টি, গ্রাণ, স্বাদ, শ্রবণ, স্পর্শ  এই পাঁচটি ইন্দ্রিয়কে কাজে লাগিয়ে মাথা থেকে যাবতীয় নার্ভাসনেস দূর করে ফেলুন। নিজেকে বুঝান আপনার সব কিছু ঠিক আছে।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন