এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম

আজ থেকে তিনি মুক্ত। নেই কোনো বাধা। অবসান হয়েছে দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষার। হ্যাঁ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের কথাই বলা হচ্ছে। এখন থেকে সব ধরনের ক্রিকেটে খেলতে পারবেন তিনি। আজ সোমবার, ১৩ আগস্ট শেষ হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর নিষেধাজ্ঞা। এমন দিনেরই অপেক্ষায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এই তারকা।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৩ সালে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আশরাফুল। এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে তিনি বলেন, ‘সত্যিই খুবই ভালো লাগছে, আজকের এই দিনে। পাঁচটি বছর ধরে অপেক্ষা করছিলাম, কবে ১৩ আগস্ট ২০১৮ আসবে— আমি জাতীয় দলের খেলার জন্য যোগ্য হব। বিপিএল খেলতে পারব। এই দিনে বাবা থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। বাবা নেই দুই বছর হয়েছে। আমি যেন ভালো মতো ফিরতে পারি সেই দোয়া চাইব সবার কাছে। ভক্তদের জন্য আবার ফিরে আসতে পারি, সেটাই এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য।’

গত পাঁচটি বছর ভালো কাটেনি ঠিক, তবে হতাশ হননি সাবেক এই অধিনায়ক। বলেছেনও, ‘শেষ পাঁচ বছরে কখনোই আমার মনে হয়নি, আমি ফিরতে পারব না। এই আত্মবিশ্বাস আমার মধ্যে ছিল। সবসমই মনে হয়েছে আমার পক্ষে সম্ভব আবার ফিরে আসা। আমি কখনোই হতাশ হইনি।’

আশরাফুলের এখন লক্ষ্য ঘরোয়া আসরে ভালো খেলা। তাহলেই জাতীয় দলে ফেরাটা সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি, ‘গত প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলতে পেরেছি। পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলাম। এবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো খেলা আমার লক্ষ্য। তা সম্ভব হলে হয়তো আমার স্বপ্ন পূরণ হবে, জাতীয় দলের জার্সি আবার পরতে পারব। আমি আশাবাদী তা পারব। আর তা সম্ভব হলে, এটি হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।’

সব বাধা পেরিয়ে যাওয়ায় এখন অনেকটাই নির্ভার আশরাফুল। এব ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘গত পাঁচটি বছর খুবই কষ্টে কেটেছে, এটা ঠিক। বিশেষ করে শুরুর দিকে, যখন খেলতে পারছিলাম না। এখন আল্লাহর রহমতে ভালো লাগছে, সব বাধা উঠে গেছে। তবে কষ্টের সময়টায় আমার পরিবার, বন্ধুদের কাছ থেকে খুবই সহযোগিতা পেয়েছিলাম। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও আমাকে সহযোগিতা করেছে। যতটুকু দূরত্ব ছিল গত দুই বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে তা কমাতে পেরেছি। সামনের দিনগুলোতে বাকি থাকা দূরত্বগুলোও কমিয়ে ফেলতে পারব।’

তবে কষ্টের সময়টার ক্রিকেট বোর্ডের সহযোগিতা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি, ‘সেই সময়ে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি এবং অন্য কর্মকর্তারা আমাকে খুবই সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

বাংলাদেশ দলে ফিরতে খুবই আশাবাদী হলেও খুব একটা সহজ হবে না বলেও মনে করেন আশরাফুল, ‘বাংলাদেশ দলে ফেরাটা খুবই টাফ হবে। তবে আমি যদি পারফর্ম করতে পারি, তাহলে অনেক জায়গা আছে যেখানে আমার খেলা সম্ভব হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমি তা পারব।’

Related Posts