একটি বিদ্যালয়ের আত্মকথা রচনা

আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় পাঠক এবং পাঠিকাগন। কেমন আছেন আপনারা সবাই ?আশা করি আপনারা সকলেই যে যার অবস্থানে  এবং সুস্থ আছেন। আপনারা সকলে আপনাদের নির্দিষ্ট অবস্থানে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন সেই কামনায় করি। একটি বিদ্যালয়ের আত্মকথা রচনা:

আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়। আমি সেই প্রতিষ্ঠান যেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুল এবং কলেজের পাঠ চুকিয়ে দশ বছরের শিক্ষাজীবন শেষ করে ভর্তি হয়। আমি দুয়ারে প্রতিবছর শিক্ষার্থী আসে, শিক্ষার্থী যায়। কতশত শিক্ষার্থী তাদের রঙিন স্বপ্ন বুকে ধারণ করে উচ্চতর শিক্ষাগ্রহনের উদ্দেশ্যে আসে আমার এইখানে।

প্রথম প্রথম নবীন শিক্ষার্থীরা আমার কাছে আসতে এক ধরণের আতঙ্ক অনুভব করে।নতুন পরিবেশ কেমন হবে, পড়াশোনার মান কেমন হবে এইসব নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে আমার আঙিনা তাদের কল কাকলিতে মুগ্ধ হয়ে থাকে।

কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীরা অনেক সময় আমার এইখানে অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপে জীবন যখন বিষিয়ে উঠে,তখন তারা ক্ষণ গণনা করে কবে আমার থেকে বের হবে। কিন্তু ঠিক কয়েকদিন পর যখন বের হবার সময় আসে তখন তারা আমাকে জড়িয়ে ধরে সেই কি কান্না করে তার কোন ধরণের হিসাব নাই।

আমার কোলে পিঠে হয়ে ঊঠে তাদের ভবিষ্যত গঠনের সোপান। প্রতিদিন কত শিক্ষার্থী আমার এইখানে আসে। প্রতিটি সকাল তাদের কলকাকলিতে মুগ্ধ হয়ে ঊঠে।বিশ্বাস করুন যেইদিন কোন ছুটির দিন থাকে আমি খুব বিষন্নতায় ভুবি। চারপাশ এর কোন শিক্ষার্থীদের সাড়া শব্দ না পেলে চারপাশটা অনেক খালি খালি লাগে।

মাঝে মাঝে বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা থাকে, সকলে মিলে আড্ডা দেয়। কেউ কেউ থাকে। কিন্তু এখন করোনা মহামারী পরিস্থিতির কারণে ক্যাম্পাস পুরোই খালি খালি লাগে। কেউ নেই চারপাশে। কবে আবার পরিস্থিতি ঠিক হবে কবে আবার সবাই আসবে আমার আঙিনায়! আমার প্রতিটি গাছ, প্রতিটি স্থান, প্রতিটি বেঞ্চ শিক্ষার্থীদের মনে করছে তার উয়ত্তা নেই।

আমি প্রতিটি শিক্ষার্থীকে স্বপ্ন দেখাই এক নতুন ভবিষ্যৎতে এগিয়ে যাওয়ার।অনেকে আমার কাছে হয়তো নতুন স্বপ্ন নিয়ে আসে নতুবা কোন স্বপ্ন থাকে না।কিন্তু যখন সকল শিক্ষার্থীরা এইখান থেকে বেরিয়ে যায় এখন নতুন ভবিষ্যৎ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যায়।

আমার প্রতিটি বেঞ্চ এ শতশত শিক্ষার্থীদের নামের স্নৃতি বহন করে। কত গল্প কাহিনি যে আমার আঙিনায় প্রতিনিয়ত হাজিরা দেয় তা আর হিসাব করা যাবে না। আমার এই আঙিনায় আমি শিক্ষার্থীদের দুইহাত ভরে দেই।

তারা যাতে পাঠ্যবইয়ে ডুবে না থেকে সেইজন্য তাদের জন্য নানান ধরণের প্রতিযোগিতা, সেমিনার এর আয়োজন করে থাকি।আপনারা জানেন প্রতিটি বিশেষ দিন খুব আনন্দ এবং তাৎপর্যের সহিত পালন করা হয়। ছেলে মেয়েদের নতুন নতুন রং ধারণ আমার চারপাশের পরিবেশকে এক নতুন আঙিকে সাজিয়ে তুলে।

কিন্তু এই বছর করোনার কারণে সকল আনন্দ উৎসব এখন বন্ধ রয়েছে। আবার কোন এক সময় সকল পরিস্থিতি সুস্থ হবে, কোন এক সময় তোমাদের কল কাকলিতে মুগ্ধ হবে আমার আঙন। সেই আশা মনে নিয়ে এখনো দিন পার করছি।

সামনে আবার নতুন কোন টপিক নয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে।ধন্যবাদ সবাইকে।

ঘরে থাকুন
সুস্থ থাকুন

Related Posts

14 Comments

মন্তব্য করুন