একটি ভ্রমণ কাহিনী।।।।। [দাদি বাড়ি]

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন??? আজকে যে গল্পটি বলব সেটি একটি কাল্পনিক গল্প । বাস্তবতার সাথে যার কোন মিল নেই। এটি আমার 6থ গল্প সুতরাং যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে সবাই সেটিকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।।।

 

আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে ডেকে তুললো আম্মু। কারণ জানতে চাইলে আম্মু বলল আমাদের পুরো ফ্যামিলি আজ নাকি দাদুর বাসা তে ঘুরতে যাবে। আমি জানতে চাইলাম আগে তাহলে আমাকে কেন বলেননি, আম্মু বলল কাল রাতে তোমার দাদি মনি ফোন দিয়েছিল।যেহেতু কাল থেকে তোমাদের স্কুল বন্ধ তোমার আব্বুর অফিস নাকি বন্ধ হয়ে গেছে। তোমার দাদু বলল তোমার তোমার ফুপি রা ও নাকি আসছে। হঠাৎ করে প্ল্যান করাই কিছু বুঝতে পারছিলাম না। সবেমাত্র সকাল পাঁচটা বাজে এই সময় আমি কেমনে রেডি হবো কেমনে ব্যাক গোছাবো। মাথা কাজ করছিল না আম্মু বলল চিন্তা করিসনা কালকে রাতেই আমি তোর ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি। যাই হোক আমরা গ্রামে যাই নাই অনেকদিন হলো। হয় আমার স্কুল বন্ধ হয় না না হলে আব্বুর অফিস কি করার অগত্যা রেডি হলাম চটপট। সাড়ে ছটায় নাকি ট্রেন। আমরা 5:30 এর মধ্যে স্টেশনে গিয়ে পৌছালাম। এই প্রথমবারের মত আমি ট্রেনে উঠছি। বইয়ের অনেক গল্প পড়েছি ট্রেন ভ্রমণ সম্পর্কে কিন্তু কখনো বাস্তবে ট্রেন ভ্রমণ করা হয়নি। ভাগ্যিস দাদি ফোন করেছিল এজন্য গ্রাম দেখার সাথে সাথে ট্রেন ভ্রমণ তা-ও করে নেওয়া যাবে। আব্বুর সাথে আমি টিকিট কাউন্টারে গেলাম আব্বু টিকিট কাটলো। 1 টিকেটের দাম 110 টাকা। আমি পাশের দোকান থেকে খাওয়ার কিছু জিনিসপত্র কিনে নিলাম।আম্মু বলেছিল ট্রেনের একই জিনিষ পত্রের প্রচুর দাম হয় নাকি। ছয়টা দশের মধ্যে ট্রেন আসলো অন্যদিনের চাইতে আজকে ট্রেন আগে এসেছে। আম্মু বলছিল আজকে এত আগে আসলে ট্রেন অন্য দিন তো এক ঘন্টা অপেক্ষা করেও ট্রেন আসতো না। আমি বললাম দেখতে হবে না কে এসেছে ট্রেন তা জানে হু অ্যাম আই। আপু বললো থাক থাক আর পাকামো করতে হবে না। এরপর আমরা ট্রেনে উঠলাম আসলেই আমি সৌভাগ্যবান তাইতো আমার সিট জানালার পাশে পড়েছে। ছুটে গিয়ে বসলাম আমার পাশের সিটে আম্মু অপরদিকে আব্বু। হুইসেল এর আওয়াজ আর ঝুক ঝুক শব্দ ট্রেন চলা শুরু করলো। আমার খুব ভালো লাগছিল । জানালা দিয়ে বাহিরে লক্ষ্য করে দেখতে পেলাম কাজগুলো যেন দৌড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ পর একটি পুকুর দেখলাম গ্রামের মহিলারা কাপড় কাচ্ছে , থালা বাসন পরিস্কার করছে। ঘন্টা দুয়েক পর আমরা একটি ব্রিজের উপর দিয়ে গেলাম ব্রিজ টা অনেকটাই বড়। ব্রিজটা নদীর উপর দিয়ে গেছে। নদীতে কত শাপলা আর পদ্ম ফুল ফুটে আছে আমার ইচ্ছে করছিল ওখান থেকে যদি কয়েকটা ফুল নিতে পারতাম। দুপুরের কিছু পরে আমরা ট্রেন থেকে নামলাম। আব্বু বলল এবার ফেরি ঘাটে যেতে হবে। নৌকায় করে বাকিটা পথ নাকি যেতে হবে আমাদের। নৌকায় চড়তে আমার অনেক ভয় লাগছিল। আব্বু আম্মু নৌকায় চড়ে অভ্যস্ত। কিন্তু আমি নই। যাইহোকনৌকায় চড়তে যাচ্ছিলাম এমন সময় একজন মানুষকে দেখতে পেলাম আমার আব্বুর নাম ধরে ডাকছে। আব্বু তাকে দেখে বলল মফিজ মামা আপনি এখানে কি করছেন। সম্পর্কে উনি আমার দাদু হন। উনি বললেন আমার দাদু ভাইকে নিতে এসেছি। তোমার আব্বু আমাকে পাঠিয়েছেন।
তোমাদের জন্য আলাদা একটা নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আব্বু বললো এসবের কি দরকার ছিল আমরা তো এমনি যেতে পারতাম অন্য নৌকায়। এরপর দাদুর সাথে নৌকায়চললাম। নদীর বুক চিরে নৌকা চালাচ্ছিল। মাঝি গুলো অনেক দক্ষ। নদীর দুপাশ দিয়ে কাশফুলের অসংখ্য গাছ। গ্রাম্য ভাষায় এগুলোকে বিন্না উলু ইত্যাদি বলা হয়। কিছুদূর যেতেই কয়েকটা পাখি উড়ে গেল হয়তোবা মাছ ধরছিল পাখিগুলো। একটু দূর যেতেই বিশাল বড় একটি বক দেখতে পেলাম। চিড়িয়াখানা তে গিয়ে আমরা যে পাখি গুলো দেখি তার মধ্যে প্রায় অনেকগুলো পাখিকে নদীটি দেখলাম। পানি কৌর বক ধনেশ ঘুঘু ময়না আরো অনেকগুলো পাখি। পানির দিকে লক্ষ্য করে দেখতে পেলাম সোনালী শিরদাঁড়া দেখা যাচ্ছে পুটি মাছের।

একটু পরে আমরা গ্রামে পৌছালাম সেখানে সকলে আমাদের জন্য ওয়েট করছিলাম। আমাদের দেখেই দাদি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো এতদিন আসিস নি কেন ভাই আমার কথা কি তোর মনে পরেনা। আমি কিছু বললাম না আসলে এতগুলো মানুষজনকে কখনো একসাথে দেখি নি। সফট হয়ে গেছিলাম। এরপর বাসায় গেলাম খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোলাম। গ্রামে প্রায় 15 দিন ছিলাম প্রত্যেকটা দিন আমার কাছে অন্যরকম লেগেছিল।ভাবছিলাম হয়ত বা গ্রামে থেকে চাই কিন্তু কি করার,,,,,,,,,,

Related Posts

6 Comments

মন্তব্য করুন