এক ডিভোর্স নারীর গল্প

আমাদের দেশে ডিভোর্স মেয়েদেরকে সমসময় খারাপ চোখে দেখা হয়,পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়। আসলে লোকে পাপ বলতে কি বুঝে আমি জানিনা। আমি ডিভোর্সি কনো মেয়েকে বিয়ে করা খারাপ বলে মনে করিনা।কোন পাপ বলে মানিনা। আমি মনে করি এমন কাউকে বিয়ে করা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। যদি এরকম কনো ডিভোর্স মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হয় তবে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করবো।

এদেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এদের কেউ ভালোবসতে বা বিয়ে করতে চায় না কারন একটাই তারা বিবাহিত। বিবাহিত মেয়েদেরকে আমরা এবং আমাদের সমাজ এ সবাই খারাপ চোখে দেখি। আর বলি যে সে অলক্ষী।তাই সে কারনে তার সংসার ভেঙ্গেছে। তার ছেলে বা মেয়ে আছে বলে তাকে বিয়ে করা যাবে না? আমার ভাবতে অবাক লাগে,সন্তান থাকুক তাতে কি হয়েছে,সন্তান যা হোক সেও তো একজন মানুষ।
★সব ছেলেদের একটাই সুর,
“মেয়েটা কুমারী মেয়ে নয়”
অদ্ভুদ কথা, কুমারী হওয়াটা কি খুব দরকার?
সে কি আপনাকে অন্য মেয়ের মত সুখে রাখতে পারবে না?
ভালোবাসা মানেই কি কুমারিত্ব মেয়ে?

একটা বিবাহিত মেয়ে বিভিন্ন কারণে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা মেয়েটিকে পছন্দ করে না,নানাভাবে অবহেলা লাঞ্ছনা করে,ছেলের উপর চাপ প্রয়োগ করে,তার বাপের বাড়ী থেকে টাকা আনার জন্য। নয়তো বলবে, মেয়েটি অমুক,মেয়েটি তমুক। মেয়েটি ভালো না,মেয়েটার সাংসারিক মন নেই।

এভাবে ছেলেকে কুবুদ্ধি দিতে দিতে একসময় ছেলেটি তার মা বাবার কথা শুনলো।অল্পতেই বউয়ের সাথে ঝগড়ায় মেতে উটতো তারপর একসময় ডিভোর্স।

বেশ! ডিভোর্স দেয়ার পর মা বাবার কথা মত ছেলেটি আর একটা মেয়েকে বিয়ে করে নিলো আর মেয়েটা খারাপ হয়ে গেলো।এই সমাজে মেয়েটাই দোষী হয়ে গেলো,সবাই বলতে লাগলো,মেয়েটি হয়তো খারাপ ছিল তাই ছেলেটি আর একটি বিয়ে করেছে।
কিন্তু একটিবারের জন্যও এটা জানার চেষ্টা করে না যে,একহাতে হয়তো তালি বাজেনা। তালি দিতে হলে দুই হাত লাগে।
সদ্য ডিভোর্স হওয়া মেয়েটি তাকে প্রচুন্ড মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। তাকে সমাজ ভালো চোখে দেখেনা। তার আর কনো জীবনে কনো বিয়ে হবে কিনা তার কনো গ্যারান্টি নেই। স্বামী,ছেলে,মেয়ে নিয়ে হয়তো নতুন করে তাকে আরো সুখে ঘর সংসার করবে সেই আশাটুকুও নেই। নিজের বাবা-মায়ের কাছেও তিনি বোঝা।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হিসাব নিকাশ করে পথ চলতে হচ্ছে তাকে। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাকে খুব অসহায় করে দেয়।
একটা ছেলে বিয়ে ভেঙ্গে গেলে খুব তাড়াতাড়ি ডাক ঢোল পিঠিয়ে আরেকটা মেয়ের বিয়ে হয়,কিন্তু মেয়েদের বেলায় কেন এটা হয়না আমি জানিনা।

হয়তো অনেকেই বলবেে,এগুলো শুধু গল্পে বলা যায়,লিখা যায়। আমি তাদেরকে বলবো,সব গল্পই মিথ্যা নয় কিছু সত্য কাহিনী নিয়েই মূলত গল্প তৈরি হয়।

Related Posts

12 Comments

মন্তব্য করুন