কতিপয় বিজ্ঞানী ও একজন কৃষকের কান্ড

অনেক অনেক দিন আগের কথা। এক দেশে ছিল এক রাজা। সে ছিল খুবই শিক্ষানুরাগী এবং বিজ্ঞান প্রিয় মানুষ। গবেষক ও বিজ্ঞানীদের তিনি সব সময় প্রাধান্য দিতেন এবং তাদের গবেষণার জন্য সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যেতেন। হঠাৎ হলো কি! তার রাজ্যে এক বিজ্ঞানীর কথা ছড়িয়ে পড়ল।

সে নাকি ঘাসকে বিশেষ প্রসেসিং করে দুধ বানিয়ে ফেলতে পারবে। রাজা তাকে দরবারে আমন্ত্রণ জানালেন। বিজ্ঞানী বলল, আমার এই যন্ত্রটি বানাতে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হবে। রাজা বলল, সমস্যা নেই। কিন্তু আমার সেই মেশিনটি চাই, যা দিয়ে ঘাস থেকে দুধ তৈরি হবে। বিজ্ঞানী প্রায় দশ বছর গবেষণা করে রাজাকে সেই মেশিনটি বানিয়ে দিল। কিন্তু সমস্যা হলো প্রায় এক মন ঘাস দিয়ে মাত্র এক কেজি দুধ তৈরি করা যায়। তবুও রাজা খুবই খুশি।

রাজা খুশি হয়ে বিজ্ঞানী ও তার পরিবারকে আজীবন রাজ মহলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। বিজ্ঞানীর এত সম্মান ও সুবিধা দেখে সবাই নতুন নতুন আবিষ্কারের চিন্তায় মগ্ন হয়ে থাকতো।
-দিন যায় দিন আসে..
হঠাৎ আবার গুঞ্জন উঠলো যে, আরেক বিজ্ঞানীর নাকি উদয় হয়েছে! সে নাকি ঘাস দিয়ে চামড়া তৈরি করতে পারবে, যা দিয়ে গরু মহিষের চামড়ার মতই জুতা, ব্যাগ ইত্যাদি তৈরি করা যাবে।

রাজা তাকে দরবারে আমন্ত্রণ জানালেন। বিজ্ঞানী বলল, এই যন্ত্র বানাতে প্রায় দুই কোটি টাকা ঘরচ হবে। রাজা বলল, সমস্যা নেই। তুমি আমাকে মেশিনটি বানিয়ে দাও। বিজ্ঞানী প্রায় বার বছর গবেষণা করে একটি যন্ত্র বানিয়ে দিল, যা দিয়ে ঘাসকে প্রসেসিং করে চামড়া তৈরি করা যায়। কিন্তু সমস্যা হলো- প্রায় দুই মন ঘাস দিয়ে মাত্র একটি গরুর চামড়ারর মত দৈর্ঘ্য চামড়া তৈরি করা যায়। তবুও রাজা খুশি। রাজা তাকেও পরিবারসহ আজীবন রাজমহলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।
দিন যায় দিন আসে..

হঠাৎ আরেক বিজ্ঞানীর কথা শুনা গেল। রাজা তাকে দরবারে আমন্ত্রণ জানালেন। সে রাজাকে বলল, আমি আপনাকে এমন একটি মেশিন বানিয়ে দিব যা দিয়ে ঘাস থেকে গোশত তৈরি করা যাবে। কিন্তু এই মেশিন তৈরি করতে প্রায় তিন কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। রাজা বলল, তাকে কী? তবুও আমার মেশিনটি চাই।

বিজ্ঞানী প্রায় পনের বছর গবেষণা করে মেশিনটি বানিয়ে দিল। কিন্তু সমস্যা হলো- প্রায় পাঁচমন ঘাস দিয়ে মাত্র এক কেজি গোশত বানানো যায়। রাজা তবুও খুসি। বিজ্ঞানী ও তার পরিবারকে আজীবন রাজমহলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।
বিজ্ঞানীদের এমন কদর দেখে মানুষজন তাদের সন্তানদের বিজ্ঞানী বানানোর জন্য চেষ্টা করতো। শিক্ষার্থীরাও লেখাপড়া করে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। (গল্পের দ্বিতীয় পর্ব)

<

Related Posts

7 Comments

মন্তব্য করুন