কম্পিউটার : বিজ্ঞানের বিস্ময়

সূচনাঃ বিজ্ঞানের অবদান- মস্তিকের সহায়তা কম্পিউটার – ইতিবৃত্ত -এনালগ কম্পিউটার- ডিজিটাল কম্পিউটার-কম্পিউটার বিভিন্ন কাজ। কম্পিউটারের ওপর অধিক নির্ভরশীলতার ফলে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা।মানুষের উদ্ভূত শক্তির সাহায্যে মানব সভ্যতা বিকাশে আশা।

বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এসে বিজ্ঞান মানব সভ্যতাকে একটি অত্যন্ত উঁচু শিখরে পৌঁছে দিয়েছে নানারকম আবিষ্কার ও উদ্ ভাবনার সাহায্য বিজ্ঞানেরই ফল।যন্ত্র আজ মানুষের জীবনের যে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এসেছে,রূপকথার রাজ্যকেও তা হার মানায়। ঘরে বসে কাঁচের পর্দায় সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার কার ঘটনা দেখা যায়।প্রকৃতির শীত ও উত্তাপের তোয়াক্কা তার না করলেও চলে। যন্ত্র আজ মানুষের ইচ্ছামত পরিবেশের তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম মানুষের হাত পা আজ নানা ভাবে যন্ত্রেেের সাহায্য নেয়। মোটর গাড়ির চাকা বলতে গেলে মানুষের পায়ের সম্প্রসার। সুইচ টিপলে আলো জ্বলে উঠল এমন জায়গায় যা মানুষের হাতের নাগালের বাইরে,তখন হয়ে দাড়াঁলে মানুষের হাতের সম্প্রসারণ। আস্তে আস্তে কথা বলা হল,কিন্তু টেলিফোনের সাহায্যে তা পৌঁছে গেল হাজার মাইল দূরে টেলিফোনে এখন মানুষের কন্ঠের সম্প্রসারণও সম্ভব।যন্ত্র আজ মানুষের মস্তিষ্কের  সাহায্যে এগিয়ে আসবে একথা ভাবা কিছুকাল আগেও পাগলামী বলে মনে হত। কিন্তু যন্ত্র আজ মানুষের মস্তিষ্কের পরিধি বিস্তৃত করে দেয়ার দায়িত্ব নিচ্ছে। সেই যন্ত্রেেেবে নাৃ ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার। সংক্ষেপে আমরা বলি কম্পিউটার।

কম্পিউটারের উদ্ভব : মানুষের মস্তিষ্কের সাহায্য করার জন্য মোটা একটি কাঠামোর কথা লিখে যান গনিতের একজন ইংরেজী অধ্যাপক, নাম চার্লস ব্যাচেজ।কিন্তু আধুনিক যন্ত্রটি প্রথম উদ্ভাবনের কৃতিত্ব বৈজ্ঞানিক হাওয়ার্ড একদনের  প্রাপ্য। খুব মোটা অঙ্ক কষতে পারে এ ধরনের একটি যন্ত্র তিমি আবিষ্কার করেছিলেন ১৯৩৭ সালে। হার্ভাডে বৈদ্যুতিক কম্পিউটার ব্যবহিত হতে শুরু হয় ১৯৪৪ সালে।

কম্পিউটারের দক্ষতা: তখন এর কাজ ছিল শুধু গননা করা এবং খুব তাড়াতাড়ি গণনা করা। এনালগ কম্পিউটার এক সেকেন্ডের দেশ লক্ষ ভাগে  একভাগ সময়ের মধ্যে বিয়োগ করে ফেলে এবং সেকেন্ডের কয়েক হাজার ভাগে একভাগ সময়ে গুণ ভাগ করতে পারে। এই ধরনের কম্পিউটার পরে আরো দক্ষ হয়ে ওঠে এবং জটিল একটি পদ্ধতির সাহায্য যোগ, বিয়োগ, গুণ দু’ টি রাশির আনুপাতিক পার্থক্য ইত্যাদি ঠিক করতে পারে।যেসব জটিল সমীকরণের সমাধান করা সাধারণ উপায়ের সময়সাপেক্ষে,এনালগ কম্পিউটারের সাহায্য তা অতু দ্রুত ও অনায়াসে করা সম্ভব হয়।

কম্পিউটার এখন মানুষের অনেক কাজ করে দিতে পারে।বিভিন্ন পতিষ্টান ও কলকারখানায় প্রতিদিনকার কাজেকর্মে তারা ক্রমবর্ধমান হারে সাহায্য করে চলেছে।অনেক ইন্সুইরেন্স কোম্পানি লক্ষ লক্ষ বীমাকারির হিসাবপত্র সাধিত হয়  আজ কম্পিউটার সাহায্য। রাসায়নিক ও পেট্রোলিয়াম শিল্পের জন্য কম্পিউটার সাহায্য গ্রহণ করা অপরিহার্য। আণবিক শক্তি উৎপাদন কারখানায় কম্পিউটারই প্রধান অবলম্বন বলা যায়।

উন্নতবিশ্বের কম্পিউটার : সোভিয়েত ইউনিয়ন এই ক্ষেত্রে এত উন্নতি করেছে যে তাদের অনেক কারখানায় শতকরা ৮০ভাগ কাজ করে কম্পিউটার দ্বারা করা হয়ে থাকে।এদের খুব বড় একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৯৪০ সালে ২৯০ জন প্রকৌশলী ছিলেন,এখন সেখানে কাজ করেন মাত্র ৬ জন। এরা কম্পিউটার পরিচালন করেন,কাজকর্ম সব করে কম্পিউটার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরবড় বড় কৃষিখামারে কম্পিউটার প্রচলন রয়েছে।অনেক দূরে বসে কৃষকরা সুইচ টেপেন,এর ফলে ট্রাক্টর চলে,বীজ বোনার কাজ করে কম্পিউটার; সুইচ টিপে সার দেওয়া হয়,ফসল তোলা হয় ফসল মোড়ানো হয়।এমন কি ফসল গুদামে এনে কাঁচের বড় বড় বাক্সে ভরবার কাজটি ও কম্পিউটার করে।কোন কোন কারখানায় যন্ত্রেেেবে ভুলধরে একটি কম্পিউটার,ভুল সংশোধন করে আরেকটি কম্পিউটার। সামগ্রিক তত্বাবধানে জন্য উঁচু জাতের কম্পিউটার প্রস্তুুত রয়েছে।কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে কারখানায় পণ্য উৎপাদন অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ।

<

মানুষের মহাকাশ অভিযানের সর্বাধিক সহায়ক শক্তি হল কম্পিউটার।কম্পিউটারের সাহায্যেই এই ক্ষেত্রে এতটা সফলতা এসেছে।

উপসংহার : কম্পিউটারের ব্যাপক প্রচলনের ফলে তার উৎপাদন এবং অন্যান্য কাজের সঙ্গে সরাসরি ভাবে সম্পর্কহীন হয়ে পড়বে।বিজ্ঞানের ওপর এই আত্মনির্ভরশীল মানুষের সাধারণ মানবিক বৈশিষ্ট্য সমূহ খর্ব করতে পারে। যা হোক এখন পর্যন্ত কম্পিউটার মানুষের পরিশ্রম লাঘব করেছে,মানুষের শক্তির অপব্যয় ও কমে গেছে।এই উদ্বৃত্ত শক্তি মানব সভ্যতার বিকাশে সাহায্য  করবে- আমরা আজ এই আশা পোষণ করি।

Related Posts

39 Comments

মন্তব্য করুন