কাঁঠালের সাতকাহন, কখনো জানিনি এত স্বাদ! কি কাঁঠাল! কি মুচি!

আমাদের দেশের গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে রাস্তার আশেপাশে অথবা প্রতিটি বাড়িতে কাঁঠাল গাছ নেই ,কথাটা শুনলে অবাক লাগবে। তবে আমরা সকলেই জানি কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। কিন্তু জাতীয় ফল হিসেবে কতটাই বা আমরা তার গুরুত্ব বুঝতে পারি। কোথায় আছে বেশি থাকলে গুরুত্ব কম। কিন্তু অন্যান্য ফলের চেয়ে কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ক্ষমতা অনেক অনেক গুণ বেশি। আমরা সকলেই জানি, তবুও এই ফলটি কেন জানি অবহেলায় পড়ে আছে।

যদিও বর্তমানে অনেক কোম্পানি আমের জুস বানাচ্ছে, শোনা যাচ্ছে ভবিষ্যতে কাঁঠালের জুস পাওয়া যাবে। বিষয়টি খুব আশাবাদী ও গর্বের। বাঙালির জীবনে সবকিছু থাকবে কিন্তু কাঁঠাল থাকবে না এমনটা ভাবা ই বোধহয় বোকামি। আমরা অনেকেই কাঁঠাল খাই। অনেকেই খাইনা।তবে কাঁঠাল যে শুধু মানুষের খাদ্য তা কিন্তু নয়। বর্তমানে কাঁঠাল পশু পাখির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। দেখা যায় অনেকে কাঁঠাল খাওয়াচ্ছেন তার গরু ও ছাগল কে। কাঁঠালের কোন অংশ ফেলে দেবার নয়। এর প্রতিটি অংশই অত্যন্ত মূল্যবান। এর ছাল পশু-পাখির খাদ্য, এর ফল মানুষের খাদ্য, এর বিচি ও ভেজে খাওয়া যায়, কি ভর্তা, অনেকে তো আবার রান্নায় ব্যবহার করে থাকেন।

আধুনিক যুগে এটি একটি জনপ্রিয় খাবার। মাঝে মাঝে শোনা যায় কাঁঠাল নাকি এক্সপোর্ট হচ্ছে। বাঙালি হিসেবে বিষয়টি নিয়ে খুব গর্ব বোধ হয়। সুতরাং কাঁঠালকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। পুষ্টিহীন আমাদের এই দেশে এই ফলটি হয়তো আমাদের পুষ্টির অনেকাংশে মিটিয়ে নিতে পারে। আমরা অনেকেই জানিনা এর পুষ্টিগুণ ক্ষমতা। যদি আমরা এর পুষ্টি এবং গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে আমরা সবাই কাঁঠাল কে আর অবজ্ঞা না করে ভালোবেসে বেশি বেশি কাঁঠাল গাছ লাগাব। বর্তমান সময়ে আরেকটি মজার ব্যাপার যেটি ইদানিং দেখা যাচ্ছে।

কাঁঠালের মুচি খুব সুস্বাদু, এটি ভর্তা বানিয়ে অনেকে খেয়ে থাকেন। আমি যখন প্রথম এই মুচি ভর্তা খাই, আমি বুঝতে পারিনি যে আমি কি খাচ্ছি। অদ্ভুত এবং অন্য রকম নতুন এক ধরনের টেস্ট। তারপর থেকে আমি এর ভক্ত হয়ে গেছি। তাই ভেবে দেখলাম বিষয়টি শেয়ার করা দরকার। আমরা অনেকে সেটা জানি। অনেক মানুষই হয়তো সেটা জানিনা।
কাঁঠালের মুচি দুইভাবে খাওয়ার নিয়ম এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে:

নাম্বার ওয়ান:। এটি আপনি লবণ এবং মরিচের গুঁড়ো দিয়ে খেতে পারেন। তবে এটি খুব সাধারন একটি খাবার। পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে খেতে ভীষণ সুস্বাদু। নরমালি খাওয়া যায়। কাঁচা মুচি গুলো দাঁত দিয়ে কামড়ে কামড়ে খাওয়া যায়। একেক জন একেক ভাবে খায়। তবে আমি দুটি পদ্ধতির কথা বলে দিলাম।

নাম্বার টু:২... এই কাঁঠালের মুচি গুলো আপনি ব্লেন্ডারে পেস্ট করে অথবা পাটায় পিষে পেস্ট তৈরি করে নিয়ে, এতে বিভিন্ন রকম মসলার সংযোজন করতে পারেন/তখন এর টেস্টটা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়/যেমন ধরুন মরিচের গুঁড়ো, হলুদের গুঁড়ো, এবং টেস্টি মসলা, সাথে কয়েক টুকরো তেতুলের অংশ একত্রে মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন অসাধারণ এক মুচি ভর্তা।

<

যারা এখনো খেয়ে দেখেন নি তারা একবার হলেও খেয়ে দেখতে পারেন। শুধু এতোটুকুই বলব এর টেস্ট একটু অন্যরকম। তবে খাবার সময় একটু কম কম খাবেন। বেশি খেলে অনেকের পেটে সমস্যা হতে পারে। তবে আপনি যখন এর পরিপূর্ণ টেস্টি পেয়ে যাবেন। আপনার কাছে এটি হয়ে উঠবে একটি প্রিয় ফল। যার কোনো অংশই আপনি আর ফেলে দিবেন না। কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠাল আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। বাঙালি হিসেবে আমরা সবাই কাঁঠাল কে ভালবাসবো।

Related Posts

17 Comments

মন্তব্য করুন