কি খেলে বুদ্ধি বাড়ে – ব্যাখ্যা করুন ?

কি খেলে বুদ্ধি বাড়ে – ব্যাখ্যা করুন ? মস্তিস্কের যত্ন নেয়া সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি মস্তিস্ককে কাজে লাগাতে সক্ষম হন, তবে আপনি সহজেই সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে, বুদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই বিকাশ পায়। তাই নিজের জীবন পরিচালনায় বুদ্ধিমান নির্ধারণের প্রচেষ্টা করা হয় না। যদিও বিষয়টি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কিছু খাদ্য আছে যা মস্তিস্কের জন্য অত্যন্ত উপকারী।মস্তিস্ক শরীরের সবচেয়ে জটিল অঙ্গ। এই অঙ্গটির কাজ করার ধরনও একটু আলাদা। নিজের মতোই এই অঙ্গটি বিশেষভাবে কঠিন কাজ করে চলে। এবং সেই কারণেই মানুষ অন্য সকল প্রাণীকে থেকে আলাদা স্থান নির্ধারণ করেছে।

যখনই বর্তমানের চাপ ওপরে উঠে যায় এবং আপনি বেশি চিন্তা করবেন, মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা ততটাই কমবে। এছাড়াও খাদ্য যখনই শিশুরা ঠিকমতো খেতে পায় না, তখনই মস্তিস্কের উন্নয়ন ঠিকমতো ঘটতে পারে না। তবে আর চিন্তা করে লাভ নেই। আমরা এখানে ১০টি খাদ্যের নাম উল্লেখ করছি যা মনোস্থির সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। চলুন জেনে নেই।

যে খাবার খেলে বুদ্ধি বাড়ে

১. টমেটো

প্রায় সবগুলি গবেষণা দেখা গেছে যে টমেটোতে লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা দেহে প্রবেশ করলে ব্রেন সেলগুলির ক্ষমতা বাড়ায় এবং টক্সিন ক্ষতিকারক উপাদানগুলি মস্তিষ্কে ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে না। এতে অ্যালজাইমার এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

২. অলিভ তেল

এশিয়ায় সাধারণত অলিভ তেল রান্না করার জন্য ব্যবহৃত হয় না। তবে এটি ব্যবহার করলে অবশ্যই উপকার আসবে। আসলে এই তেলে পলিফেনল একটি উপাদান থাকে, যা ব্রেনে ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এটি একাধিক গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলগুলির কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৩. হলুদ

আপনি ঠিকই শুনেছেন! এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রেন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আসলে হলুদে বিভিন্ন কার্যকরী উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের অন্দরে জ্বালানি কমিয়ে তুলে এবং বুদ্ধিমানির উন্নয়নে সহায়তা করে। সাম্প্রতিকতঃ প্রায় ৩০০০ বছর পূর্বে একটি আয়ুর্বেদিক গবেষণা এই বিষয়ে প্রমাণিত হয়েছে, যেখানে হলুদটি ব্রেন ক্ষমতা বাড়াতে কিভাবে সহায়তা করে, তা উল্লেখ করা হয়েছে।

৪. আখরোট

এটি অতিপুরো ভিটামিন, ওমেগা-৩ ফ্যাট এসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবারের এক প্রাকৃতিক উৎস। এটি মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, এটি শরীরের উপকারিতা প্রদান করে এবং ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে।ফলে মস্তিষ্কের জন্য এটি সহায়তা করে।

৫. নারকেল তেল

চুলের যত্নের জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়, তবে সাধারণত দক্ষিণ ভারতীয় মানুষ এটি খাদ্য প্রস্তুতিতে ব্যবহার করে না।

কিন্তু যদি এটি ব্যবহার করা যায়, তবে এটি জিতে নিতে পারেন! নারকেল তেলে উপস্থিত নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরে অনেক ক্ষতিকারক উপাদান থেকে মস্তিষ্কের সুরক্ষা করে।

এছাড়াও, নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মস্তিষ্কে তথ্য আদান-প্রদান দ্রুত হয়।

ফলে, কোনও কাজ সুস্থভাবে সহজেই সম্পন্ন করা যায়।

৬. কুমড়োর বীজ

জিংকের মাত্রা যত বেড়ে যায়, তত বৃহত্তর মানসিক চাপের সাথে বুদ্ধিমানতা বৃদ্ধি পেয়ে যায়।

কুমড়োর বীজে এই খনিজটি প্রচুরভাবে রয়েছে।

তাই বুদ্ধিমানতা বৃদ্ধি করার জন্য এই প্রাকৃতিক উপাদানটি সেবন করা হয়।

৭. মাছ

যেসব মাছে  ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নামে  পরিচিত একটি উপাদান রয়েছে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

এই উপাদানটি মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তির আধার হিসেবে ব্যবহার করে, যাতে মস্তিষ্কের এই অংশটির ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৮. ব্রকলি

এই সবজির ভেতর অ্যাসিড নামক একটি উপাদান থাকে, যা শরীরের ক্ষতিকারক উপাদানগুলি মুছে ফেলতে সাহায্য করে।

ফলে ব্রেন সেলের ক্ষতি ঘটার আশঙ্কা কমে যায়।

৯. জাম

জামে পরিমাণগতভাবে উপস্থিত শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষভাবে মস্তিষ্কের সেলগুলির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

এছাড়াও এটি মস্তিষ্কের অন্দরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন মস্তিষ্ক রোগগুলি থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

যারা পরিবারে অ্যালজাইমারস বা ডিমেনশিয়া পরিবারের ইতিহাস রাখেন তাদের জন্য প্রতিদিন জাম খেতে সুপারিশ করা হয়, এটি খুব উপকারী হতে পারে।

১০. ডিম

ডিমে অনেক কলেস্টেরল ও কোলিন থাকে, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ব্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আরও গবেষণা দেখাচ্ছে যে, প্রতিদিন ডিম খেলে শরীরে এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে শুরু হয়, যা ব্রেন সেলকে ক্ষতি হতে রোধ করে। এটি ব্রেন রোগের ঝুঁকিটি হ্রাস করতে সহায়তা করে।

১১. পালং শাক

বাঙালিদের পালং শাকে একটি আলাদা ধরনের দুর্বলতা রয়েছে যা  সাধারণত বুদ্ধিমান কাজে ব্যবহার করে।

এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট এবং লুটেইনের সঙ্গে পরিপূর্ণ হয় এবং ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

নিয়মিতভাবে পালং শাক খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায়।

১২. শতমূলী

শতমূলী একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা অনেক ফাইবার ও ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। এটি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী হয় এবং এর মধ্যে ফলেট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে যা বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।

Related Posts

20 Comments

মন্তব্য করুন