ক্রিকেটে বাংলাদেশঃ ওডিআই, টেস্ট এবং বিশ্বকাপ

বাংলাদেশে ক্রিকেটের শিকড় অতি গভীরে প্রােথিত। বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে স্বাধীনতার পরপরই। স্বাধীনতা লাভের অল্প দিনের মধ্যে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ
ক্রিকেট কন্ট্রোল বাের্ড বা বি.সি.সি.বি গঠিত হয়। এর বর্তমান নাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বাের্ড বা বিসিবি। বাংলাদেশ আইসিসির সহযােগী সদস্য দেশ নির্বাচিত হয় ২৬ জুলাই, ১৯৭৭ সালে। আন্ত র্জাতিক ক্রিকেটে ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ করে ১৫ জুন, ১৯৯৭ সাল। আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্য বা টেস্ট
স্ট্যাটাস লাভ করে ২৬ জুন, ২০০০। প্রথম বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৯ সালে। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে।

এক নজরে ক্রিকেটে বাংলাদেশের অগ্রগতি :
১৯৭৩ : বাংলাদেশ ক্রিকেট বাের্ড গঠন
১৯৭৫ পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট বাের্ড গঠিত হয়।
১৯৭৬ : MCC ক্লাব বাংলাদেশ সফর করে। কোন বিদেশী দলের এটাই প্রথম সফর।
১৯৭৭ : আইসিসির সহযােগী সদস্য পদ লাভ।
১৯৭৯ : প্রথম আইসিসি কাপে অংশগ্রহণ।
১৯৮৬ : প্রথমবারের মত এশিয়া ট্রফিতে অংশগ্রহণ।
১৯৮৮ : তৃতীয় এশিয়া কাপের আয়ােজন। এটাই প্রথম কোন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের আয়ােজক হয় বাংলাদেশ।
১৯৯৬ : ‘বিসিসিবি’ নাম পরিবর্তন করে বিসিবি’ নামকরণ ।
১৯৯৭ : বিশ্বকাপ খেলার যােগ্যতা অর্জন
: প্রথম বারের মত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ
২০০০ : বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস লাভ।
২০০১ : বিদেশের মাটিতে ১ম টেস্ট সিরিজে অংশগ্রহণ ।
২০০৫ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জয়।
২০১১ : যৌথভাবে এবং প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ আয়ােজন (১০ম বিশ্বকাপ) করে। প্রথমবারের মত
এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে এবং রানার আপ হয়।
২০১৫ : বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতাে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে।
বাংলাদেশ ইতােমধ্যে সব ধরনের ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছে। সেগুলাে হলাে :
ক. আইসিসি ট্রফি
খ. টেস্ট ক্রিকেট
গ. একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
ঘ. বিশ্বকাপ ক্রিকেট
ঙ. টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট
চ. টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ : ২৬ জুন, ২০০০ বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। এ দিন বাংলাদেশ লাভ করেছে স্বপ্নের টেস্ট স্ট্যাটাস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনের সবচেয়ে অভিজাত ক্লাবে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে টেস্ট খেলুড়ে দেশের সংখ্যা ১০টি। লন্ডনের লর্ডসে আইসিসির সভায় টেস্ট খেলুড়ে ৯টি দেশের পূর্ণ সমর্থন পেয়ে বাংলাদেশ ১০ম টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয়। সে সময় আইসিসি’র ২৬টি সহযােগী দেশের পূর্ণ সমর্থনও পায় বাংলাদেশ। মােট ২৬+৯=৩৫টি ভােট পেয়ে বাংলাদেশ টেস্ট খেলুড়ে দেশের মর্যাদা লাভ করে।বাংলাদেশের প্রয়ােজন ছিল টেস্ট খেলুড়ে ৭টি দেশের ভােট। ইংল্যান্ড প্রথম বাংলাদেশকে সমর্থন না করলেও পরে আইসিসি’র সভায় ইংল্যান্ডসহ ৯টি দেশই বাংলাদেশকে সমর্থন করে। বাংলাদেশ সর্বপ্রথম টেস্ট খেলে ১০-১৪ নভেম্বর, ২০০০ ভারতের বিপক্ষে। ১০ নভেম্বর, ২০১২ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্টে এক যুগ পূর্তি হয়।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ : প্রত্যেকটি ক্রিকেট দলের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা। বাংলাদেশ
১৯৭৭ সালের ২৬শে জুলাই আইসিসি’র সহযােগী সদস্য হলেও বিশ্বকাপে খেলার যােগ্যতা অর্জন করে
১৯৯৭ সালে ষষ্ঠ আইসিসি কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে। ১৭ মে, ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপের ১ম
ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। ‘৯৯ এর বিশ্বকাপে বাংলাদেশ প্রথমবারের মত
অংশগ্রহণ করে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কেড়েছিল। প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশ পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, স্কটল্যান্ড,
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সাথে প্রতিযােগিতায় অবতীর্ণ হয়। ২০১৫ বিশ্বকাপ এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। ২০১৯ এর বিশ্বকাপের সাফল্য দিয়ে ঐ বছরের টিমকে বিবেচনা না করলে এই টিমকে সর্বকালের সেরা একাদশ বলা যেতে পারে।

Related Posts

16 Comments

মন্তব্য করুন