খাবার সময় গলায় মাছের কাঁটা আঁটকে গেলে কী করণীয়?

মা বাবা, ভাই বোন কিংবা স্ত্রী, ছেলে মেয়ে নিয়ে মনের আনন্দে খেতে বসেছেন। পোলাও, কোরমা, রোষ্ট অথবা সাদা ভাত, মাছ, তরিতরকারি ইত্যাদি খুব রসিয়ে রসিয়ে খাচ্ছেন। হঠাৎ করেই দেখা গেল আপনার গলায় আঁটকে গেল আপনার প্রিয় মাছটির ক্ষুদ্র একটি কাঁটা। এমন  পরিস্থিতির মোকাবেলা করেন নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া ভার।

গলায় আঁটকে যাওয়া এই ক্ষুদ্র কাঁটা কিন্তু তখন আর ক্ষুদ্র থাকে না! একেবারে যেন যমদূত হয়ে আপনার সামনে হাজির হয়ে যায়!!

এই পরিস্থিতির মোকাবেলায় আমাদের কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয়, সেটিই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়। তো চলুন শুরু করা যাক!

খাওয়ার সময় গলায় মাছের কাঁটা বিঁধলে আমরা সাধারণত যে ভুলগুলো করে থাকি সেগুলো হলো

১। ঘন ঘন ঢোক গিলে কাঁটা নিচে নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করা।

২। বার বার পানি খেয়ে খেয়ে পেট ঢোল বানিয়ে ফেলা।

৩। মুখে এক গাদা সাদা ভাত নিয়ে গিলে ফেলার চেষ্টা করা, যাতে ভাতের সাথে কাটাটাও পেটে চলে যায়।

৪। মুখের ভিতর আঙুল দিয়ে কাঁটা সরানোর চেষ্টা করা। (এটা সবচেয়ে মারাত্মক ও ক্ষতিকর ভুল)

সমস্যা হলো, এই কাজগুলোর যেকোন একটি করলে আপনার গলায় বিধে থাকা কাঁটা সরে যাওয়ার সম্ভবনা যতটুকু আছে, তার কয়েকগুণ বেশি সম্ভাবনা আছে গলায় কাঁটা আরো বাজেভাবে ফেঁসে যাওয়ার। তাই এসব কাজ আসলে নিরাপদ কোন সমাধান দিবে না।

এর বাইরে আমরা যা করতে পারি তা হলোঃ

যখনই বুঝবো আমার গলায় কাঁটা বিধেছে, ঢোক গেলা থেকে নিজেকে বিরত রাখবো। শান্ত হয়ে বসে কিছুক্ষন রিল্যাক্স করবো। মানবশরীরের নিজস্ব ডিফেন্স ম্যাকানিজম এর মাধ্যমেই গলায় কোন কাঁটা জাতীয় কিছু বিঁধলে মুখ-গহবর এর নিচ থেকে একধরণের এনজাইম নির্গত হয় যা খাদ্যনালীকে পিচ্ছিল করে বেধে থাকা কাঁটা সরাতে সাহায্য করে। তাই খানিক রিল্যাক্স করলে কাঁটা এমনিতেই নেমে যাওয়ার সম্ভবনা বেশি। তারপরেও যদি না নামে, তবে, হালকা গরম এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ ভিনেগার (৫% এসিটিক এসিড) মিশিয়ে তা দিয়ে গড়গড়া করা যেতে পারে। গরম পানির তাপে খাদ্যনালীর অগ্রভাগ প্রসারিত হবে এবং ভিনেগারের এসিটিক এসিড বিঁধে থাকা কাঁটার সুক্ষ্ণ অগ্রভাগকে ভোতা করে কাঁটা নামিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ভিনিগার এর পরিবর্তে আপনি চাইলে লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আধাটা লেবুর রস এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে নিন। অথবা, এক স্লাইস লেবুর রস সরাসরি মুখে দিয়ে গিলে ফেলুন। যাদুর মত কাজ করবে!

আমি ব্যক্তিগতভাবে এই দুইটা পদ্ধতি অনুসরণ করি। প্রতিবারই কাঁটা নেমে গেছে। আশা করি আপনাদের বেলাতেও কাজে দিবে।

যদি এতে করেও কাজ না হয় তাহলে, হোমিওপ্যাথির একটা Dose আছে যেটা এক ঘন্টা পর পর খেলে কাটা চলে যায়।

ধন্যবাদ।

Related Posts

6 Comments

মন্তব্য করুন