ঘুরে আসি কুয়াকাটা পর্ব 1

আমি রাজশাহীর মেয়ে। তবে মনের ইচ্ছে সারা বিশ্ব ভ্রমণ করার। আর সেই ইচ্ছে থেকেই চলে গেলাম কুয়াকাটা ঘুরতে। রাজশাহী থেকে কুয়াকাটা এগারো ঘন্টার রাস্তা, কিন্তু আমাদের যেতে সময় লাগল তের ঘন্টা। কারণ যাবার সময় আমাদের গাড়িটা দুইবার খাবার এর জন্য বিরতি দিয়েছিল। প্রথমবার থামল ঈশ্বরদীর একটা খাবার হোটেলে, সেখানে সবাই যার যার নিজের মতো খেয়ে নিলাম।
তারপর গাড়ি ছুটতে শুরু করলো তার আপন গতিতে। আর আমরা চলতে শুরু করলাম আমাদের গন্তব্যে। আমরা রওনা দিয়েছিলাম সন্ধ্যায়, তাই রাতটা বাসের সিটে হেলানা দিয়েই ঘুমিয়ে নিলাম। কিন্তু ঘুম ভাংলো খুব সকালে, তখন প্রাই সাড়ে চারটা বাজে। বাসের ঝাকুনিতে ঘুম থেকে উঠেই দেখি আমরা পটুয়াখালীর ফেরি ঘাটে। ফেরিতে করে পার হলো আমাদের বাস। তারপর আবার চলা শুরু হলো, কিন্তু মন আর মানছে না শুধু মনে হচ্ছে কখন পৌছাব। হোটেলে পৌছাতে আমাদের বেশ সময় লাগল। তাই সেই দিন আর সকাল বেলায় সুর্যদয় দেখার সৌভাগ্য হলো না। আমরা সকাল সাতটা তিরিশ এ হোটেলে পৌছালাম। আগে থেকেই আমাদের হোটেল বুক করা ছিল, তাই পৌঁছনোর পরে আমরা সকলে যার যার রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে বিশ্রাম নিলাম কিছু সময়। তারপর দুপুরের গোসলের কিছু সময় আগে আমরা চলে গেলাম কুয়াকাটা সি বিচ এ। আমাদের হোটেল টা সি বিচ এর খুব কাছেই, তাই আমরা পায়ে হেঁটেই চলে গেলাম সি বিচ এ গোসল করতে। কি বিশাল বিশাল ঢেউ আসছে সমুদ্রের বুক থেকে। সমুদ্র দেখতে আমি এর আগেও এসেছি কিন্তু কুয়াকটাতে ঘুরতে আসা এবার ই প্রথম। আমি যখন ক্লাস সিক্স এ পড়ি তখন আমরা সপরিবারে কক্সবাজার গিয়েছিলাম। সেই গল্পও একদিন তোমাদের সঙ্গে করব। আর এখন কলেজের বন্ধুদের সাথে চলে এলাম কুয়াকাটা। ও যেটা বলছিলাম ঢেউ, সমুদ্রের বুক থেকে ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে, আবার সেই ঢেউ ফিরে যাচ্ছে সমুদ্রের বুকে। সেই ঢেউ এর সাথে নাচানাচি করছে আর গোসল করছে হাজারো পর্যটক, আমি ই বা তাই বাদ যাব কেন। আর হ‍্যা গোসলের আগে আমরা সকলে একটা করে ডাব খেলাম, যাওয়ার আগে অনেকের মুখে সেখান কার ডাবের খুব সুখ‍্যাতি শুনেছিলাম। তবে সত্যিই কুয়াকটার ডাব গুলো এতো বড় বড় যে একা একটা ডাব খেয়ে শেষ করা যাচ্ছিল না। মনের আনন্দে বেমালুম ভুলেই গেছিলাম যে সমুদ্রের জলে আমাদের গা আঠালো হয়ে গেছে। কিন্তু যখন গোসল শেষে হোটেলে ফিরছিলাম তখন বুঝতে পারলাম যে পুরো শরীর আঠালো হয়ে গেছে। তাই হোটেলে ফিরেই আগে গোসল সেরে নিলাম ভালো করে। তারপর গোসল সেরে একটু বিস্রাম নিলাম , শরীর যেন আর চলে না। একটু বিশ্রাম নিতে গিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। তারপর ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে চলে এলাম অতিথি হটেলে। খাবার হোটেলে গিয়ে সকলে সমুদ্রের রুপচাঁদা মাছ দিয়ে সেরে নিলাম মধ‍্যার্ণ ভোজন।

আজ আর নয়, আমার এই ছোট্ট ভ্রমণের বাকি অংশ থাকবে পরের পর্বে।

আমার এই ভ্রমণ কাহিনী যদি কারো ভালো লাগে কমেন্ট করে জানাবেন অবশ্যই। আপনাদের ভালো লাগাই আমাকে লেখার প্রেরনা যোগাবে।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন