চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের বিষয়বস্তু, চরিত্র, রিভিউ

আজকের পোস্টে আমরা চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের বিষয়বস্তু, চরিত্র, রিভিউ নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের লেখকের নাম কি, চাঁদের অমবস্যা উপন্যাসের চরিত্রগুলো ও চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের সারসংক্ষেপ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এ পোস্টে কথা বলতে যাচ্ছি। তো শুরু করা যাক।

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের লেখক কে?

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের লেখক কে

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের লেখক হলেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। তিনি ছিলেন একজন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্প ও নাটক লেখক। তা জন্ম ১৯২২ সালের ১৫ই আগস্ট চট্টগ্রাম জেলায়। তিনি বাংলা সাহিত্য শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিকদের একজন। ‘লালসালু’ তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস ও তাঁর সেরা সাহিত্যকর্মের একটি।

শুধু তারই নয় বাংলা সাহিত্যের সেরা উপন্যাসগুলোর একটি হলো এই লালসালু। এছাড়াও তার অন্যান্য বিখ্যাত সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪), কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৬৮), নয়নচারা (১৯৪৬), দুই তীর এবং অন্যান্য গল্প (১৯৬৫), বহিপীর(১৯৫৫)। তিনি তার সাহিত্যকর্মের জন্য নানা পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৬৫ সালে আদমজী পুরস্কার পেয়েছেন।

১৫০+ বন্ধুর জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস, জনপ্রিয় ক্যাপশন ও উক্তি

এছাড়াও ১৯৮৪ সালে তিনি একুশে পদক পেয়েছেন। কর্মজীবনে তিনি নানা ধরণের রেডিওতে চাকরি করেছেন। এছাড়াও নানা ধরণের খবরের কাগজে তিনি সম্পাদক হিসবে কাজ করে। তিনি ইউনেস্কোতেও কাজ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১০ই অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে এই প্রতিভাবান লেখকের মৃত্যু ঘটে।

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের চরিত্র সমূহ:

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের চরিত্র সমূহ

চাঁদের অমাবস্যা উপনাসে বেশি একটা চরিত্র নেই। মোটে দুই-তিনটি। নিচে এ চরিত্রগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচউ দেওয়া হলো।

আরেফ আলী: তিনি এই উপন্যাসের মূল চরিত্র। তাকে ও তার কাযকর্মকে ঘিরেই এই উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে। তিনি মাত্র মাত্র একটি মাইনর স্কুলে শিক্ষক হিসেবে চাকরি পান। বয়স ২২ থেকে ২৩ বছর। এই বিদ্যালয়ে চাকরি পর থেকেই তার জীবনে কি কি হয় তা এই উপন্যাসের ভিত্তি। বিভিন্ন ধরণের সমাজের বাস্তব জিনিস তার সামনে এসে দাঁড়ায় যা আসলে আশা করেনি। এখানে আরেফ চরিত্রটি প্রথম দিকে শান্তশিষ্ট ও ভীত দেখানো হলেও কাহিনী আগানোর আগানোর সাথে সাথে তার মধ্যে বিদ্রোহী মনোভাবে ও সাহসের সৃষ্টি দেখা যায়।

জীবনের খারাপ সময় নিয়ে উক্তি

কাদের মিয়া: কাদের মিয়া যাকে গ্রামে ‘দরবেশ’ হিসেবে মানা হয়। তিনি গ্রামের বড় বংশের একজম ব্যক্তি। সবাই তাকে সম্মানের চোখে দেখে এবং একজন ভালো মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু আসলে সে মোটেই একজন ব্যক্তি নন। তিনি অনেক টাই ধূর্ত প্রকৃতির। আরেফ আলীর আকদের মিয়ার সাথে টিচারস রুমে বসে কথা হয়।

সাদামাটা দুই এক মিনিট কথা হয়। দরবেশ কাদের মিয়া মূল চরিত্র সমূহের একটি। তার নির্মম ও খারাপ কর্মকান্ড আরেফ আলী প্রত্যক্ষভাবে দেখে এবং তার মাধ্যমে আরেফ আলীর জীবন অনেকটাই প্রভাবিত হয়। আরেফ আলীর চরিত্রের বিল্ডআপে কাদের মিয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

করিম ও তার স্ত্রী: করিম বা তার স্ত্রী কারো ব্যাপারেই তেমনভাবে কিছু ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। করিম সাহেব পেশায় একজন মাঝি। এবং উপন্যাসের এক প্রান্তে তার স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে। এভারঅল উপন্যাসটি তা নিয়েই।

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের বিষয়বস্তু

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসের বিষয়বস্তু, চরিত্র, রিভিউ

উপন্যাসে বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের সমাজব্যবস্থা, বাস্তবতা, কিভাবে ধণীরা বা উচ্চশ্রেণির ব্যক্তিরা গরিবদের সুযোগ নেয়, নির্যাতন করেও সমাজের কাছে তারা ভালো মানুষ হিসেবেই থাকে। শুধু সেসময়ের জন্যই নয় এসকল সামাজিক বিভক্তি ও শ্রেণি এখনো আমাদের আশেপাশে বিদ্যমান। এই উপন্যাস আমাদেরকে ভীতিহীন হতে শেখায় ও সর্বদা মিথ্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখায়। আমাদের মানবতা ও বিবেককে জাগ্রত হতে শেখায়।

উপন্যাসের সারাংশ: এখানে যথাসম্ভব কোনো সিরিয়াস স্পয়লার না দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

উপন্যাসের শুরুতে আরেফ আলী নামক একজন যুবককে দেখা যায়। বিধবা মাতার একমাত্র সন্তান সে। ছোটবেলা থেকে হতদরিদ্র অবস্থায় বড় হয়েছে। সে পাশের গ্রামে একটি স্কুলে একজন শিক্ষক হিসেবে মাত্র চাকরি পেল। একদিন সে স্কুলের টিচারস রুমে বসে দরবেশ খ্যাত কাদের মিয়ার সাথে কিছু কথা বলে।

কাদের মিয়া চলে গেলে পরে আরেফ আলী কৌতুহল বশে তার পিছে পিছে যায় কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তাকে হারিয়ে ফেলে। হঠাৎ করে বাশঝার থেকে চিৎকারের শব্দ শোনে এবং সেখানে সে এক নারীকে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। সে সেখান থেকে তৎক্ষনাৎ দৌড়ে পালিয়ে যায় এই ভয়ে যে সে এই সমস্যার মধ্যে পড়ে যেতে পারে।

পরবর্তীতে সে বুঝতে পারে কে এই কাজ করেছে এবং সে যে ওখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে তা নিয়ে অনুতপ্ত বোধ করে। পরবর্তীতে সে এই বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন বোধ করে এবং নিজেকে দায় করতে থাকে। সে নিজেকে স্থিত করার চেষ্টা কিরতে থাকে এ বলে যে সে কোনী নৃশংসতা বা অপরাধে সংযুক্ত না।

হতাশা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়, স্ট্যাটাস, উক্তি

পরবর্তীতে সে নারীর লাশট খুঁজে পাওয়া যায়। এবং কয়েকদিন সে চিন্তা করতে থাকে এখন কি করবে? এই ঘটনাকে গোপন রেখে ধীরে ধীরে ভুলে গিয়ে নিজেকে ঠিক রাখবে নাকি সে থানায় গিয়ে নিজের জীবনকে শংকায় রেখে সে রাতে কি হয়েছিল তা জানাবে?

চাঁদের আমাবস্যা উপন্যাসটি কোন বইয়ের

চাঁদের আমাবস্যা উপন্যাসটি কোন বইয়ের?

চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটি একটি বইয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এখনো হার্ডকপি (ফিজিকাল কপি) পেতে পারেন। এছাড়া রকমারি থেকে আপনি চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটি কিনতে পারবেন। ওভারওল এটি একটি ভালো সচেতনতামূলক উপন্যাস। চাইলে কিনে পড়ে দেখতে পারেন।

তো পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

4 Comments

মন্তব্য করুন