চোখে লেন্স লাগাতে কত টাকা লাগে | লেন্সের সুবিধা অসুবিধা

আজকের পোস্টে আমরা চোখের লেন্স সম্পর্কে যেমন- চোখে লেন্স লাগাতে কত টাকা লাগে, কোন ধরনের লেন্স ব্যবহার করা হয়, লেন্স ব্যবহারের সঠিক নিয়ম, চোখের লেন্স এর ধরন ইত্যাদি সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

চোখে কোন ধরনের লেন্স ব্যবহার করা হয়?

চোখে কোন ধরনের লেন্স ব্যবহার করা হয়

আমাদের অনেকে চোখে নানান ধরনের লেন্স ব্যবহার করে থাকে। কেউ নিজের চোখের সৌন্দর্য কে বৃদ্ধি করতে এই লেন্স ব্যবহার করা কিংবা কেহ চোখের সমস্যার জন্য চোখে লেন্স ব্যবহার করে থাকেন। বাজারে চোখে ব্যবহার করার জন্য অনেক ধরনের লেন্স পাওয়া যায়। সব লেন্সই কিন্তু সবার জন্য উপকারি বা গ্রহনযোগ্য নয়। তাই নারী বা পুরুষ যেই লেন্স ব্যবহার করুক না কেন তাকে অবশ্যই সতর্কতা সহিত ও সব ভালো ভাবে জেনে শুনে সেটা ব্যবহার করতে হবে। আরও পড়ুনঃ চোখে লেন্স লাগালে কি ক্ষতি হয়

কারণ চোখ হলো একটি সেনসেটিভ জিনিস। যাতে কোনো সমস্যা হলে বলতে গেলে প্রায় অন্ধও হয়ে যায়। লেন্স সরাসরি চোখের কন্টাক্টে থাকে যার কারণে এর নাম কন্টাক্ট লেন্স। তাই আমাদের উচিত বাজারের যে কোনো ধধরনের লেন্স চোখে ব্যবহার না করা। আর ব্যবহার করার আগে ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া উত্তম। কারণ চোখের কোনো সমস্যা হলে পুরো দুনিয়া টাই অন্ধকার হয়ে দাড়াবে।

চোখে লেন্স লাগাতে কত টাকা লাগে

চোখে লেন্স লাগানোর খরচ

বর্তমানে বাজাটে অনেক রকমের লেন্স রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন দামে লেন্স বিক্রি করা হয়। কিছু লেন্স রয়েছে এক বছর মেয়াদি যেগুলোর দাম ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। অনেকের চোখে ছানি পড়লে দেখতে সমস্যা হয় যা অস্ত্রোপাচার এর মাধ্যমে সরানো হয়। এর জন্য কিছু লেন্স রয়েছে যা ইন্ট্রাঅকুলার লেন্স নামেও পরিচিত। বর্তমানে ১১টি ব্র্যান্ডের রেট ঠিক করা হয়েছে। এখন থেকে ১ হাজার ২৫ টাকা থেকেও লেন্স পাওয়া যাবে। আবার দামি লেন্স ১৪০০০ হাজার টাকার পর্যন্তও রয়েছে। আরও পড়ুনঃ চোখের যত্নে খুঁটিনাটি

<

লেন্স ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

লেন্স ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

যারা লেন্স ব্যবহার করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো লেন্স ব্যবহার এর সঠিক নিয়ম। কারণ আপনি যদি এর নিয়মই না জেনে থাকেন তাহলে এটি নিরাপদ ভাবে কেমনে ব্যবহার করবেন? লেন্স ব্যবহার করার সময় অবশ্যই যে কাজ টি সর্ব প্রথম আপনাকে করতে হবে সপটা হলো হাত ভালো করে পরিস্কার করে নেওয়া।

কারণ আপনি যদি অপরিস্কার হাতে লেন্স লাগান তাহলে আপনার হাতের জীবাণু চোখে চলে যেতে পারে। ফলে চোখে দেখা দিবে নানান সমস্যা। আর কখনো ভেজা হাতে লেন্স লাগাবেন না। এতে লেন্স ভিজে গিয়ে চোখে সমস্যা হতে পারে। আর এক লেন্স একাধিক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে৷ যে পাত্রে লেন্স রাখেন সে পাত্র টি সবসময় পরিস্কার রাখবেন৷ আর কখনো চেখে লেন্স লাগিয়ে হাত দিয়ে ডলা ডলি করবেন না। আরও পড়ুনঃ চোখের পরিচর্যা কিভাবে নিবেন

এতে চোখে সমস্যা হতে পারে। আর চোখে একাধিক ও সবসময় লেন্স ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন। চোখে ব্যাথা করলে বা চোখ লাল হয়ে গেলে চোখে লেন্স পরবেন না। এতে হিতের বিপরীত কিছু হয়ে যেতে পারে। আর টানা ৮ থেকে ১০ ঘন্টার বেশি লেন্স ব্যবহার করা উচিত নয়। আর একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, সেটা হলো কখনো রাতে লেন্স পড়ে ঘুনাবেন না। চোখে যদি লেন্স পড়ার জারণে কোনো সমস্যা অনুভব হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তার এর পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন চোখ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটা নিয়ে কোনো ধরনের দায়সারা করা যাবে না।

কখন চোখের লেন্স ব্যবহার করা উচিত??

কখন চোখের লেন্স ব্যবহার করা উচিত

সব জিনিস এর ব্যবহার এর একটা সময় থাকে৷ সব জিনিস সব সময় ব্যবহার করা যায় না। তাই অন্য জিনিস এর মতে লেন্স এর ও কিছু সময় রয়েছে যে আপনি চাইলে লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। আবার এমন কিছু সময় ও রয়েছে যখন আপনি লেন্স ব্যবহার করতে পারবেন না। কন্টাক্ট লেন্স নিয়মিত তরল দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে ও মেয়াদ উত্তীর্ণ তরল ব্যবহার করা যাবে না। জারণ চোখে মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কিছুই ব্যবহার করা ভালো নয়। বিশেষ  করে গোসল এর সময় বা সাতার কাটার সময় লেন্স ব্যবহার করা যাবে না কোন ভাবেই। আর সস্তার জন্য খারাপ মানের লেন্স না নিয়ে ভালো ব্র্যান্ডের পণ্য কিনুন।

চোখের লেন্স এর ধরন

চোখের লেন্স এর ধরন

চোখের মধ্যে সাধারণত যেসব লেন্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলো বিভিন্ন ধরনের আছে৷ এমনই কয়েকটি লেন্স সম্পর্কে আমরা এই অংশে জানার চেষ্টা করবো।

হার্ড: এটি এমন একটি লেন্স যেটি পরার পরে চোখের ভেতরে অক্সিজেন আসতে পারে না৷ ফলে এতে চোখের জন্য সমস্যা হয়ে দাড়াতে পারে। যার ফলে এটি পরার ৩ বা ৪ ঘন্টা পর পর খুলে ফেলতে হয়। আবার পুনরায় ধুয়ে এটা পড়তে হয়৷ এটি ভালো মানের ও পরিষ্কার লেন্স এবং দামেও সাশ্রয়ী।

সেমি সফট: এই লেন্স এর অন্য এক নাম হলো আরজিপি লেন্স। এটি হার্ড লেন্স থেকে একটু ভিন্ন ধরনের। এই লেন্সে আপনার মূল যে সুবিধা রয়েছে সেটা হলো এটা অক্সিজেন পরিবহণ করতে পারে৷ ফলে হার্ড লেন্স এর মতো ৩ বা ৪ ঘন্টা পর পর খুলে খুলে পড়তে হয় না৷ এই লেন্স টি অন্য দিক থেকে সকল হার্ড লেন্সের মতো সুবিধা প্রদান করে।

সফট: এই লেন্স টি অন্য লেন্স গুলো থেকে একটু ভিন্ন। অন্যান্য লেন্স এর তুলনায় এটি অনেকটা নরম বা সফট হয়ে থাকে। এটিও একটি প্লাস্টিক জাতীয় লেন্স। তবে এটির মূল একটা সুবিধা হলো এই লেন্স পরে আপনি আরাম অনুভব করতে পারবেন। কিন্তু এর এর একটা খারাপ দিক হলো এটি নরম হওয়াতে বেশি দিন ঠিকে না ও খোলার সময় ছিড়ে ও যেতে পারে। এটি চোখ থেকে খুলে সলিউশনে ডুবিয়ে রাখতে হয়।

লেন্স ব্যবহার এর সুবিধা

লেন্স ব্যবহার এর সুবিধা

অনেক সময়ে চোখের সমস্যায় চশমা ভালো ভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে তখন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে লেন্স। যাদের চোখের সমস্যা তীব্র তারা চশমা ব্যবহার করে ফল না পেলে লেন্স ব্যবহার এর মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আর খেলাধুলার মধ্যে চোখের দৃষ্টি লাগে নিখুঁত। ফলে এ সময়ে লেন্স ভালো কাজে দেয়। আর স্পষ্ট দৃষ্টি পেতে এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

লেন্স ব্যবহারের অসুবিধা

লেন্স ব্যবহারের অসুবিধা

লেন্স ব্যবহার করে যেমন কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়, এর ফলে কিছু অসুবিধাও রয়েছে।

১. লেন্স ব্যবহার এর ফলে আমাদের চোখে যে পানি জমতে থাকে, তার থেকে চোখের মধ্যে ঘা সৃষ্টি হতে পারে।

২. লেন্স ব্যবহার করার ফলে ঘোলা হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. অতিরিক্ত লেন্স ব্যবহার এর ফলে চোখের দৃষ্টি কমে যেতে পারে।

৪. চোখে চুলকানি বা এলার্জি দেখা দিতে পারে।

৫. লেন্স ব্যবহার এর ফলে চোখ লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে।

পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

5 Comments

মন্তব্য করুন