ডিজিটাল ইলেকট্রনিক এর মৌলিক বিষয়

Electronics শব্দটি গ্রিক শব্দ Elektron হতে উদ্ভূত। Elektron শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় বাহ্যিকভাবে প্রয়োগকৃত তড়িৎ ও চৌম্বক  এর পরমাণু আচরণ পর্যবেক্ষন ও আলোচনা। ইলেকট্রনিক তড়িৎ প্রকৌশলের একটি শাখা যেখানে ভ্যাকিউম টিউব অথবা অর্ধপরিবাহী (Semi Conductor) যন্ত্রাংশের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের প্রবাহ আলোচিত হয়। ইলেকট্রনিক প্রকৌশল প্রধানত ইলেকট্রনিক বর্তনীর নকশা প্রণয়ন এবং পরীক্ষনের কাজে ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রনিক বর্তনী সাধারণত রেজিস্ট্রার, ক্যাপাসিটর, ইন্ডাক্টর, ডায়োড প্রভৃতি দ্বারা কোন নির্দিষ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য তৈরি করা হয়। ১৯০৪ সালে জন অ্যামব্রোস ফ্রেমিং দুইটি তড়িৎ ধারক (Electrodes) বিশিষ্ট সম্পূর্ণ বন্ধ কাচের এক প্রকার নল (Vacuum Tube) উদ্ভাবন করেন ও তার মধ্য দিয়ে একমুখী তড়িৎ পাঠাতে সক্ষম হন।তাই সেই সময় থেকে ইলেকট্রনিক এর শুরু হয়েছে বলা যায়। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি বিদ্যার এমন একটি শাখা যেখানে ডিজিটাল সিগনাল দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন সার্কিট ও যন্ত্রপাতির ডিজাইন, গঠন, কার্যপ্রণালি,ব্যবহার, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি নানাবিধ বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ ও আলোচনা করা হয়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্রয় পরিবর্তনশীল এনালগ সংকেতের পরিবর্তে স্তর পরিবর্তনশীল সংকেত ব্যবহার করা হয়। এই সংকেতকে ডিজিটাল বা বাইনারি সংকেত বলা হয়।  বিচ্ছিন্ন বৈদ্যুতিক সিগনালকে ডিজিটাল সিগনাল বলা হ।। দুইটি পৃথক অবস্থায় কাজ করে এমন ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের ব্যবহারে এই সংকেত পাওয়া যায়। যেমন ট্রানজিস্টারের অন (On) এবং অফ (Off) অবস্থা দ্বারা দুইটি পৃথক অবস্থা বোঝানো সম্ভব। প্রজ্বলিত বাতি এবং নির্বাপিত বাতি অথবা টেপের চুম্বকায়িত অবস্থা এবং চুম্বকায়িত অবস্থা দিয়ে ডিজিটাল সংকেতের স্তর দুইটিকে সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব। ডিজিটাল সংকেতের স্তর দুইটিকে 0 এবং 1 দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়। এনালগ সিস্টেমের ক্রম পরিবর্তনশীল এনালগ (Analogue) বৈদ্যুতিক সংকেত ব্যবহার করা হয়। অবিচ্ছিন্ন বৈদ্যুতিক সিগনালকে এনালগ সিগনাল বলা হয়। উত্তাপ, চাপ, প্রবাহ ক্রমাগত পরিবর্তনশীল কয়েকটি এনালগ সংকেতের উদাহরণ। এসব সংকেতকে ভোল্টেজ রূপান্তরিত করলে যে ক্রম পরিবর্তনশীল বৈদ্যুতিক তরঙ্গ সৃষ্টি হয় তা এনালগ সংকেতের উদাহরণ চিত্র এ ধরনের সংকেত প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিবর্ধক, ফিল্টার প্রভৃতি এনালগ বর্তনী ব্যবহার করা হয়। রেডিও, টেপ রেকর্ডার, এনালগ কম্পিউটার কয়েকটি এনালগ পদ্ধতির উদাহরণ।

ডিজিটাল সিগনাল :

১. ডিজিটাল ইলেকট্রনিক ক্রম পরিবর্তনের বদলে সিগনালের স্তর পরিবর্তন ঘটে।

২. ডিজিটাল সিগনালের দুইটি মাত্র নির্ধারিত স্তর থাকে। যেমন : 0 ও 1।

৩. এই সিগনালের পরিমাপে কোন অনিশ্চিয়তা বা অজানা অবস্থা থাকে না।

৪. কম ব্যয়বহুল।

<

৫. সংখ্যা বা পরিমাণ পঠনে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম।

৬. এই পদ্ধতিতে অতি সহজে তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।

৭. ডিজিটাল বর্তনীতে সংকেতের 0 এবং 1 এই দুইটি মাত্র অবস্থা থাকায় ভুল নির্ণয় সহজ।

এনালগ সিগনাল :

১. এনালগ পদ্ধতিতে ক্রম পরিবর্তনশীল এনালগ (Analogue) বৈদ্যুতিক সিগনাল ব্যবহার করা হয়।

২. পর্যায়ক্রমে উঠা নামা করে। ফলে এই সংকেতে অনেক গুলো পর্যায় থাকে।

৩. এই সিগনাল পরিমাপে অনিশ্চয়তা বা অজানা অবস্থা থাকে।

৪. বেশ ব্যয়বহুল।

৫. সংখ্যা বা পরিমাণ পঠনে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৬. তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত জটিল।

৭. এনালগ বর্তনীতে বিভিন্ন স্থানে সিগনালের মানের বিভিন্নতার জন্য ভুল নির্ণয় কষ্টকর।

Related Posts

25 Comments

মন্তব্য করুন