তরুণ প্রজন্মের কাছে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহি লাঠি খেলা

প্রাচীন বাংলার সবথেকে পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহি খেলাগুলোর একটি হল লাঠি খেলা। বৃটিশ শাসন আমলে এই খেলার প্রচলন শুরু হয়। তৎকালিন জমিদাররা নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য লাঠিয়াল নিযুক্ত করতেন।তখন বিভিন্ন ধর্মানুষ্ঠানে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করার জন্য লাঠি খেলার আয়োজন করা হতো। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের নিদারুণ স্বাক্ষি এই লাঠি খেলা। যা সময়ের সাথে সাথে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে বিলুপ্ত প্রায়।

Photo source:Wikipedia.com

একটি সময় বাংলার মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল এই লাঠি খেলা। যা কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে হুমকির সম্মুখীন খেলাটির সাথে সম্পৃক্ত জীবন ও জীবিকা।

বর্তমানে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কিছু অঞ্চল এবং বাংলাদেশের কিছু জেলাতে এ খেলার অনুশীলন করতে দেখা যায়।লাঠি খেলাটির উপকরন মূলত লাঠি, মুগুর, গদা, বলা শক্ত বাঁশ দিয়ে তৈরি হয়। লাঠির সাথে শক্ত লোহার রিং যুক্ত করে এটাকে দুর্দান্ত অস্ত্রে পরিনত করা হয়। এই খেলায় ব্যবহৃত লাঠিটি পাঁচ থেকে ছয় ফুট লম্বা এবং তৈলাক্ত হয়।

এই খেলার সব থেকে মজার বিষয় হচ্ছে নৃত্যের মাধ্যমে এই খেলা শুরু করা হয়। খেলার আসরে লাঠির পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র হিসাবে ঢোলক, কর্ণেট, ঝুমঝুমি, কড়া ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এবং বিখ্যাত চুড়ি নৃত্য ও এই খেলায় প্রদর্শন করা হয়।
এই খেলায় দক্ষতা অর্জন কারি বেক্তিরা লাঠিয়াল নামেই পরিচিতি পায়।
তৎকালীন জমিদারদের সময়ে শুধু মাত্র বলিষ্ঠ বেক্তিরাই এই খেলায় অংশ নিতে পারত।
কিন্তু বর্তমান সময়ে সকল বয়সের নারী পুরুষ সকলেই এই খেলায় অংশ নিতে পারে।

ছবি:চুরি নৃত্য  
photo source:uttorergodhuli.

দু:খ জনক হলেও সত্যি যে লাঠি খেলার ইতিহাস অসাধারণ হলেও বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা খুবই কম। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা যেমন সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, জয়পুরহাট, নড়াইল জেলা গুলোতে এখনো এই খেলার আয়োজন করা হয়। যা এই খেলার সংস্কৃতি রক্ষার্থে যথেষ্ট নয়। কিন্তু সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ক্রিকেট ফুটবল ও অন্যান্য খেলা গুলো মত লাঠি খেলাটিও হতে পারে সকলের নিকট সমাদৃত এবং জনপ্রিয়।যা নতুন প্রজন্ম ও বিশ্বের কাছে বাংলার ঐতিহ্যকে নতুন রুপে তুলে ধরতে স্বক্ষম।

তথ্যসূত্র:

  • www.Wikipedi.Com
  • www.bd-pratidin.com

Featured photo source:pinterest.com

 

Related Posts