তৃপ্তিময় তরুণ্য

হাজারো দুয়ারে কুলায়ে
নাহি মেলে ঠাঁই
ফিরে তবু আসি বারে বারে
নিজ গৃহময় অরণ্যে।

কত কাল যায়
কত দিবস যায়
কত মাস যায়
তবুও ফিরি নিজ অরণ্যে।

হৃদয়ের ক্ষুদা মিলে নাকো ভাই
শহর অট্টালিকার ভিড়ে
তৃষ্ণা মিটানোর জন্যই
ফিরে আসি নিজ গৃহে অরণ্যে।

এত কেন মায়া এত কেন ছায়া
মুছিতে পারি না ভাই
মুছিতে গেলে হারিয়া ফেলি
নিজের দিগকে।

ছোট কুড়ে মোর মিলে আছি তাই
মোর জন্মদাতি ‘মা’
হাজারো কুলাস ঠেকাই মুই
চলে যাই তার কোল হেথা।

তাহাকে দেখিয়া হাজারো দু:খ, বেদনা
ভুলে থাকি তুবু হেতা
যতই না কষ্ট পাই, তার কোলে
মাথা রাখিতে সব যেন ভুলে যাই।

ঈশ্বর দিয়েছে মোরে
সাত রাজার ধন
সব কিছু হারিয়ে যেনো
তাকে নিয়ে মোর সম্বল।

দরিদ্রতার ভিরে এটি মোর সম্বল
ছোট কুড়ে খানি।
কর্মের জন্য ছুটি যেন মুই
ঐ দুর শহরে ।

হাজারে কষ্টের পর মিলাতে পরি না
যেন ছোট এক খানা জব।
পেটের দারে একুল ওকুল দৌড়ে বেড়াই
তবু্ও কি ভাই মিলে একখানা জব।

শত কষ্ট করিয়া চাকুরি পেলেও
যে হাড়া ভাঙ্গা খাটুনি
সে যে কে দেখে ভাই
বলিয়া কি আর বুজাতে পারি নিজেকে নিতে তাই।

বেদনার কথা বলিয়া বলিয়া
শেষ কি আর হবে ভাই
হাজারো কষ্ট, হাজারো বেদনা নিয়েই
বেচে থাকি মিলে মিশে।

কত শহর, কত গ্রম থেকে
মানুষ আসে মোদের ছোট শহরখানিতে
হাজারো দু:খ, হাজারো বেদনা
নিয়ে মিলে মিশে সকলে থাকে এক সাথে।

পরিবারের জন্য দুপয়সা রোজ করিবে বলে
কতই না কষ্ট করে
অনেক রাত সড়কে ঘুমিয়ে
কতই না রাত কাটে।

যাদের আছে অট্টালিকা দেখে না কভু ভাই
সুজোগ পেলে বেশি খাটিয়ে
পয়সা দেনা ভাই।
দিলেও বা নিজের তা জোটে না

পরিবারকে কি দিবে ভাই
পরিবারের দায় যে মোর পিঠে
এসেছি শহরে তাই।

কারো আছে মা, বাবা
কারো আছে বৌ ছেলে, মেয়ে
সকলে যেন তাকিয়ে থাকে
গৃহ কর্তার পানে।

প্রতিদিনের গাদার খাটুনি আর কি
সহিতে পারি না ভাই, শরিরের চামড়া
খসিয়া যেন পরিতে চাই।

এতটুকু মায়া এতটুকু দয়া
কোথায় যেন নাই পাই
পেলে মুই হেথা যাইতাম
সব কিছু ছাড়িয়া ভাই ।

কি আর বলিব, কি আর বলিব
কি আর জানতে চাও
দিন মজুরি পেশা যে মোর
এ দিয়ে চলি ভাই।

পড়ালেখার দার দারি নাই
কি যে করিছি ভাই
থাকলে কি আর এ রকম হতো
কপালে আছে তাই।

বাবা যে মোর গরীব চাষা
ছিল এক কানি জমি
তা দিয়ে মা মোর সংসার
গুছাতো ছিল না কোন সংসারের ঘানি।

হঠাৎ একদিন খাজনার দায়ে
জমি খানা গেলে চলে
অভাব, অনাটনে যেন পেচিয়ে দরলো
মোদের পরিবারকে।

কি আর পরবো কি আর খাইবো
পেটের দায় যে বড় দায় হইয়া
দারাইয়া রইল তাই।
মাথার উপরে ভাই বোন যেন
চার খানা ছিল তাই
বাবা, মা যেন অভাবের দায়ে দেওলিয়া হইতে চাই।

পরসরে ভিটামাটি খানি আকরে দরিয়া
করিলাম বাপ,পুতে দিনমজুরী।
হাড় ভাঙ্গা খাটুনি দিয়া সংসার
টিকাইলাম তারাতারি ।

বয়স তখন মোর সাত চলে
কেবল স্কুলে যাই
কতটুকুই বা পরিশ্রম করিতে
পারিব ছোট শরীর খানাতে তাই ।

জমিদার পশুদের কুচক্রতে
হাজারো পরিবার পথে
‘মা’ যে মোর কাদিঁতে কাদিঁতে
দিশেহারা হেইয়া থাকে।

সন্ধ্যা নামার আসরে ঘরে ফিরিতাম
মুই আর মোর বাপ
ঘরে ঢুকিয়ায় দেখিতাম
মা যেন মোর সেজদায় লুটিয়ে আছে নির্বাক।

এ রকম করিয়া বহু দিন গেল
কাটিয়া গেল বছর
বাবা হঠাৎ রোগের দায়ে মরিয়া গেল
মা হইলো শোকে শোকে পাগল ।
পরিসরে মুই শহরে আসিলাম
দিনমজুরি দিতে ।
ভালো পয়াসা ইনকাম করিয়া
মায়ের চিকিৎসা করিব শহরে এনে।

তুমি কে ভাই বললে না তো !
শুধুই শুনছো তাই
আমি যে ভাই তোমারি মতো
মা ছাড়া কেউ তো মোর দুনিয়াতে নাই।

Related Posts

23 Comments

মন্তব্য করুন