থার্টি ফার্স্ট নাইট/ ইংরেজি নববর্ষ এবং পহেলা বৈশাখ উদযাপন সম্পর্কে কিছু মূল্যবান কথা **

পশ্চিমা দেশগুলোতে নববর্ষ উদযাপন করা হয় অত্যন্ত আনন্দ ও ফুর্তির সাথে । বিজাতীয় এ হাওয়া আমাদের দেশে ৩১ শে ডিসেম্বর রাত বারটা বাজার পর থেকে এই দিবস বরণ উপলক্ষে হৈ হুল্লোড় আরম্ভ হয়ে যায় । আতশবাজি আর স্পেসশিপ আর্থ নামক পৃথিবীর আকৃতির একটি মহাকাশযান উড়ানোর মধ্য দিয়ে এই উৎসবের সূচনা হয় । মালয়েশিয়া, ফিলিফাইন ইত্যাদিতে চলেছে ড্রাগন ইয়ার ।

তাদের পছন্দনীয় কল্পপ্রানী ড্রাগনের বেলুন উড়িয়ে নববর্ষ বরণ করেছে মালয়েশিয়া। নিউইয়র্কে বিশাল এক মানব শিশুর বেলুন উড়িয়ে সহস্রাব্দ বরণ করা হয়েছে জাকজমকভাবে। বর্ষবরণ আর সহস্রাব্দ বরণ যাই বলা হোক , এ নামে যে বিকৃত রুচির পরিচয় দেয়া হচ্ছে আর বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। পরিণতি কি দাড়াচ্ছে তা কি  আমরা ভেবে দেখেছি ? মদের বোতল,নারী নিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় যেসব কর্মকান্ড হচ্ছে তা পত্রিকার পাতায় দেখে বিবেকবান মানুষ মাত্র শিহরিত হয়েছেন ।কত নারীর যে ইজ্জত হরণ করা হয়েছে আর প্রতি বছর হচ্ছে তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই  ভালো জানেন ।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন

বাঙালিরা পূর্ব থেকেই নববর্ষ উদযাপন করছে । অথচ অতীতের নববর্ষ উদযাপন আর আজকের নববর্ষ উদযাপনের মাঝে আকাশ পাতাল ব্যাবধান । সেকালে বাংলা নববর্ষ এখনকার মত সর্বদা পহেলা বৈশাখেই পালন হতো না ।  বরং পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু করে বৈশাখের যে কোন দিন সুবিধামত সময়ে পালন করা হতো। এ বাংলা নববর্ষে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে সংঘবদ্ধ করে বীরত্ব ও শক্তি সাহসের অনুশীলন করা হতো। কিন্তু এখন অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত । এখন পহেলা বৈশাখ উদযাপন  হয় সম্পূর্ণ বিধর্মী ও হিন্দুয়ানী তরীকায়। এ ব্যাপারে মুসলমান তরুণ তরুণীদের উদ্ধুদ্ধ করেছে এ দেশীয় নামদারী কিছু বুদ্ধিজীবী। এই জ্ঞানপাপিরাই আমাদের যুবক যুবতীদেরকে বুঝিয়েছে যে , এগুলোই হলো বাঙ্গালীর বাঙালিত্ব । এগুলো না  করলে বাঙ্গালী হওয়া যায় না ।

এ ছাড়াও সূর্যোদয়ের পর থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সী ছেলমেয়েদের অবাধে ঘোরাফেরা, ঘোড় দৌড় , পুতুল নাচ ,সাপের খেলা ,বানর খেলা ,জুয়ার আসর করা ,জাদু , নাগর দোলাসহ একই প্লেটে তরুণ তরুণীর পান্তা ইলিশ ভোজ । এমনকি তারা একে অপরকে খাইয়ে পর্যন্ত দেয়। পান্তা প্লেট ২০ টাকা আর খাইয়ে দিলে ১০০ টাকা। আবার সন্ধ্যার পর শুরু হয় বিভিন্ন পার্টি । নাইট ক্লাব, গেষ্ট হাউজ , অফিসার্স ক্লাব , ও লেডিস ক্লাবে উলঙ্গপনা আর বেলাল্লাপনায়  নাচ – গানে মুখরিত অশ্লীল সানস্কৃতির অনুষ্ঠান । মধ্যরাতে শুরু হয় বিয়ার হুইস্কি, ফেন্সিডিল ,আফিম ,হিরোইন ,গাজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পানের ধুমধাম ।

সৃষ্টি হয় তাদের মাঝে যৌন উত্তেজনা, পরিণত হয় ক্লাব – সেমিনারগুলা পতিতালয়ে । মনে রাখতে হবে আমরা মুসলমান । পহেলা বৈশাখ উদযাপন ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট  বিভিন্ন প্রকার হিন্দুয়ানী ও খ্রিষ্টাননী অনুষ্ঠানের ইসলামের আদৌ সম্পর্ক নেই । ইসলাম এরূপ বাজে আনুষ্ঠানিকতা সর্বস্ব ধর্ম নয় । সুস্থ সুন্দর গাম্ভীর্যপূর্ণ তাহযীব – তামাদ্দুদ ইসলামের বিশেষ অবদান । ইসলামী আচার আচরণ ছেড়ে এসব জাহান্নামী উৎসব কখনো একজন মুসলমান কল্পনাও করতে পারেনা ।

তথাকথিত প্রগতিবাদী নামক দুর্গতি বাদীদের ষড়যন্ত্রে  বিজাতীয় কৃষ্টি- কালচারে আমরা অব্যস্ত হতে পারি না। তাই আমাদের সকলকে এ মর্মে দৃঢ় শপথ গ্রহণ করতে হবে যে ,আমরা মুসলমান । আমরা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসারী । আমাদের ধর্ম ইসলাম । ইসলামের শাশ্বত কালচারের উপর আঘাত কুঠারঘাত আসবে আর আমরা কাপুরুষের মত তা তাকিয়ে দেখবো কস্মিন কালেও তা হতে পারে না।।

Related Posts

24 Comments

মন্তব্য করুন