দুর্নীতির কারন ও প্রতিকার

বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি দুর্নীতি নামক সামাজিক ব্যাধিটির অস্তিত্ব রয়েছে । কিন্তু এ ব্যাধিটি বাংলাদেশে মারাত্মক আকার ধারন করেছে । কারন , দুর্নীতিই আজ এক শ্রেনির মানুষের কাছে প্রধান নীতি হয়ে দাড়িয়েছে ।রাস্টীয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরে দুর্নীতির কালো থাবা বিস্তার লাভ করেছে । দুর্নীতির কারনে জাতীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে , অগ্রগতির চাকা পশ্চাতমুখী হচ্ছে ।আমাদের এই সামাজিক ব্যাধি সারাতেই হবে । দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ । দেশটি এখন স্বাধীনতার আটতিশ বছরের পথ অতিক্রম করছে । কিন্তু এই চলার পথ ম্লান করে দিয়েছে দুর্নীতির কালো থাবা ।অত্যন্ত লজ্জার বিষয় যে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল জরিপে দেশটি পর পর পাচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দুর্নীতিবাজ জাতি হিসাবে আমরা চিহ্নিত হয়েছে,নিন্দিত হয়েছে। দুর্নীতি বাংলাদেশে কোন ক্ষেত্তে নেই। ব্যাংক ঞ্ঝন হজম , সরকারি সম্পত্ত দখল , গরিবের বরাদ্দকৃত টাকা ,টিন ,খাদ্য ,বিদ্যুৎ , পানি ,গ্যাস চুরি, আয়কর ফাকি ,চাকরির নামে হায় হায় কোম্পানী, টেন্ডারবাজি ,চাদাবাজি স্বজনপ্রীতি , সবকিছুতে চলছে দুর্নীতি

রাজনৈতিক দলগুলো দেশের মূল চালিকা শক্তি । কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষেত্তেই চলছে ব্যাপক দুর্নীতি । রাজনৈতিবিদরা জনগনের সাথে অঙ্গগীকার করে তা বরখেলাপ করে, ক্ষমতায় থাকাকালে নিজ পদ ও ক্ষমতা ব্যবহার করে রাস্টের সুযোগ সুবিধা অন্যায়নভাবে গ্রহন করে , নিজেদের স্বজনপ্রীতি , বন্ধু-বান্ধব ও দলের কর্মীদের নিজের স্বার্থে কাজে লাগায় , ঠিকাদারি , হাঠ-বাজারে ইজারদারি । বিভিন্ন কাজে কমিশন গ্রহন করে ।

অর্থনীতির ক্ষেত্তে এখানে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। ব্যবসায়ীমহল মজুরদারির মধ্যমে দ্রব্য- বাজারে কৃত্তিম সঙ্কট সৃস্টি করে অতিরিক্ত মুনাফা লুফে নেয়। তারা বিভিন্ন অজুহাতে দেখিয়েও দ্রব্য দফায় বৃদ্ধি করে ।চোরাকারবার , খাদ্যে ভেজাল , নকল পন্য উৎপাদন , ওজনে কম , সরকারি কর ফাকি দেয়া সহ এ ধরনের অর্থনীতিক দুর্নীতিতে তারা ব্যাপৃত রয়েছে ।

শিক্ষার ক্ষেত্তে দুর্নীতি ও কম নেয় । শিক্ষা প্রতিস্টানের অর্থ আত্মসাৎ , শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা , ভালোভাবে না পড়িয়ে প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারে পাঠদান করা ।

দুর্নীতি দমনে আমাদের সদিচ্ছার অভাবও রয়েছে । দুর্নীতি করে অর্থ উপার্জন , সরকারি সম্পদের আত্মসাৎ ,ক্ষমতা অপব্যবহারের জন্য চাকরিচ্যুত বা বিচারের সম্মুখীন করার জোরালো ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই । দুর্নীতিবাজদের সাথে শাসনগোস্টীর গোপন আতত থাকায় দর্নীতি দমনে সরকারের শিথিলতা লক্ষ্য করা যায়

দুর্নীতির প্রতিরোধ পদক্ষেপগুলো 

দুর্নীতি দমনে দুর্নীতি বিরোধী টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে । এই টাস্কফোর্স দুর্নীতির সাথে জড়িত সকল প্রাসঙ্গগিক ইস্যু মূল্যায়ন , এবং দক্ষ , যোগ্য ও অভিজ্ঞ নাগরিকদের সমন্ব্যে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে ।

দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বেশি প্রয়োজন। রাজনীতিবিদদের মধ্যে গনন্তের চর্চা থাকতে হবে । তাদের সৎ ও আর্দশবান হতে হবে । দুর্নীতিবাজদের দল থেকে বের করতে হবে , সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের কে নির্বাচন মনোনয়ন করতে হবে । প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে ।

দেশের আইনের শাসন প্রতিস্টান হলে দুর্নীতি হ্রাস পাবে । এই জন্য দরকার স্বাধীন বিচার বিভাগ । আইনের দৃস্টেতে অনুসন্ধান এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে গনমধ্যম দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যকরি ভূমিকা পালন করবে ।

দুর্নীতি রোধে স্বাধীন গনমধ্যম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারবে ।

বেসরকারি, সরকার কর্মকতা , কর্মচারীদের জন্য বাজারের সাথে সমন্বয় সুষম বেতন কাঠামো এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্তে পারিশ্রমিক নির্ধারন করতে হবে ।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক ও নৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে , মানুষের মাঝে নৈতিক মূলবোধ জাগ্রত করতে হবে ।কেননা নৈতিক ও ধর্মীয় মূলবোধ সম্পন্ন ব্যাক্তি কখনো দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারবে না  ।

বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এ ব্যাপারে গুরুত্বর্পূন ভূমিকা পালন করতে হবে । দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে হবে ।

 

Related Posts