নবম শ্রেণির বাংলা অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর (৪র্থ সপ্তাহ -২০২১)

“আসসালামু আলাইকুম” কেমন আছো শিক্ষার্থী বন্ধুরা? কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পূর্ণবিন্যাসকৃত পাঠ্যসুচির ভিত্তিতে দেয়া নবম শ্রণির বাংলা ১ম পত্রের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে আজ তোমাদের সামনে হাজির হয়েছি। আশাকরি তোমরা উপকৃত হবে।

  • এসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ –

“অভাগীর স্বর্গ ” গল্পে মানবিক সমাজ গঠনের যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা কিভাবে দূর করা যেতে পারে বলে তুমি মনে করো? যৌক্তিক মত উপস্থাপন করো।

হ্যাঁ। আমি মনে করি “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে মানবিক সমাজ গঠনে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা দূর করা যেতে পারে। এজন্য আমাদের কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মানুষের ভালো ভাবা ও মানুষের জন্য ভালো কিছু করার প্রচেষ্টা করা বা করাকে মানবিকতা বলে। মানবতার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মানুষের তথা সমাজ ও জাতির উন্নয়ন বা কল্যাণকরা। আমরা আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি ও বিবেক দিয়ে মানবিকতা অর্জন করি। কিন্তু আমাদের পঠিত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে এই মানবিকতার দিকটি দেখা যায়নি। যার কারণে বলা যায়, “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে মানবিক সমাজ গঠনে একেবারে ব্যর্থ। কারণ এখানে সমাজ গঠনে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেগুলো নিচে ক্রমান্বয়ে উপস্থাপন করা হলো :

১।ধনী-গরীব বৈষম্য: “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে যে বিষয়টি ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে তা হলো ধনী গরিবের বৈষম্য, গল্পে ধনী শ্রেণীর লোকেরা অনেক টাকা পয়সার মালিক হওয়ার কারণে তারা আরাম-আয়েশ করত। কিন্তু গরিবের দুঃখ কষ্ট বোঝার তেমন কোনো চেষ্টা করত না।

২।জাতি ভেদাভেদ: “অভাগীর স্বর্গ” গল্পের অভাগী ও তার ছেলে কাঙালী দুলে সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে সমাজের কোনো লোক তাদেরকে কোন মূল্য দিত না। যার কারণে অভাগীর মৃত্যুর পর তার দাহ করার জন্য কাঠটুকু পর্যন্ত পায়নি। এজন্য গরীব হয়ে জন্ম নেওয়াটা অনেক বড পাপের।

৩।ন্যায় বিচার: “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে ন্যায় বিচার না থাকার কারণে গরিব লোকেরা কোন সময় তাদের প্রাপ্ত অধিকার পায়নি।

৪।শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন-অত্যাচার: শাসকেরা আমাদেরকে শাসন করে। দেশের সকল ক্ষমতা থাকে তাদের হাতে। কিন্তু এই শাসকই অনেক সময় শোষকে পরিণত হয়। “অভাগীর স্বর্গ” গল্পে উল্লিখিত জমিদার ও ধনী শ্রেণীর লোকদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে এই বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়েছে।

৫।সামাজিক মর্যাদা: আমাদের সমাজে বসবাস করতে হলে একটি সামাজিক পদমর্যাদার সাথে বসবাস করতে হয়। যখন কোন মানুষ সমাজে সামাজিক মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারে না তখন সমাজে কলুষিত হয়ে যায়। যোগ্য লোকেরা পায়না তাদের ন্যায্য মূল্য।

প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উপায়: প্রতিবন্ধকতা ভুলে গিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে একটি মানবিক সমাজ গঠন করা সম্ভব। নিম্নে মানবিক সমাজ গঠনের কিছু উপায় আলোচনা করা হল:

১ সঠিক ও সুন্দর শাসনব্যবস্থা: একটি দেশের শান্তি সমৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে ন্যায় বিচারের উপর। আর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে মানব সমাজ গঠন করা সম্ভব।

২।সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান :সমাজের অনেক হিজড়া, বেদে ইত্যাদি লোকদের অাবজ্ঞান করে থাকে। তাদের সমাজের অংশ মনে করে না। কিন্তু সামাজিক স্বীকৃতি পেলে তাদের সম্মান অনেক বাড়বে ও সকলে মূল্যবোধ প্রদর্শন করবে। যাতে গড়ে উঠবে মানবিক সমাজ

৩।ধনী – গরিব বৈষম্য দূরীকরণ: বহু বছর ধরে চলে আসা ধনী-গরিবের বৈষম্য নাগরিক সমাজ গঠনে অন্যতম প্রধান বাধা। তাই আমাদের মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে সবার আগে অবশ্যই ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করতে হবে।

৪।অসাম্প্রদায়িকতা: এক জাতের সাথে অন্য জাতের তুলনা না করে মানুষই বড় পরিচয় মনোভাব প্রকাশ করতে হবে।

৫। মূল্যবোধ সৃষ্টি ও ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরণ: আমাদের মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।

আর এভাবেই আমরা সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে একটি সামাজিক ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে পারব।

এটি একটি নমুনা উত্তর দেয়া হলো। ভালো নম্বর পেতে সম্পূর্ণ কপি না করে এর থেকে সাহায্য নিয়ে নিজের মতো করে লিখবে।

এ্যাসাইনমেন্ট এর সকল শ্রেণির প্রশ্ন ও সমাধান পেতে grathor.com এর সাথেই থাকুন।

ধন্যবাদ।

Related Posts