পরের বেলায় কেনো তোমার ভাবনা গুলো আঁটসাঁট!

আমরা মানুষেরা অন্যের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াতে সদা প্রস্তুত থাকি।এদিকে আমাদের নিজেদের জীবনের প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে, চিন্তাভাবনায়, জীবনব্যবস্থায় যে ভুলে পরিপূর্ণ তা আমরা দেখেও যেনো দেখিনা। সর্বদা নিজেদের পছন্দ, রুচি, ইচ্ছা গুলো অন্যের ওপর চাপাতে থাকি।  কখনো এটা মাথায় নেই না যে, প্রত্যেকটি মানুষ ধরনে -গড়নে আলাদা, তার চিন্তাভাবনাও নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও আমার থেকে ভিন্ন হবে।

আমরা ;বিশেষত মেয়েরা রাস্তায় অন্যের পোশাক পরিচ্ছদ নিয়ে অনেক বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করি। কিন্তু কেনো?
আপনাকে ভালো লাগছে সেটাতেই সন্তুষ্ট থাকুন না। আর যদি বলতেই হয়, তো পারলে তার সামনে গিয়ে নম্র ভাষায় বুঝিয়ে আসুন। যদি তা না পারেন তো দমে যান।পেছনে কথা বলে বেড়ানোতে নিজের ব্যাক্তিত্ব তো হারাচ্ছেন ই সাথে সাথে নিজের মধ্যকার স্বচ্ছতা, শুভ্রতা,পবিত্রতাকেও বিসর্জন দিচ্ছেন৷ বুঝতে পারছেন কি?

আমাদের প্রত্যেকেরই প্রথম আর শেষ বিচার -বিবেচনা হওয়া উচিৎ নিজের ক্ষত্রে। আমি নিজে কতটা সঠিক তা আগে বোঝা উচিৎ। পৃথিবীতে কোনো মানুষই সর্বদিক দিয়ে উৎকৃষ্ট হয় না। আর যদি কারো ব্যক্তিত্ববোধ দৃঢ় হয় তবে সে কখনোই অন্যের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে মাথা ঘামাবে না। প্রয়োজনে সাহায্য করবে, তবে অপ্রয়োজনে নজর এড়িয়ে চলবে।

আমরা নিজের বেলায় সবসময় বিশাল আকাশ সমান ভাবি। কিন্তু অন্যের বেলায় সেই আকাশটার কয়েকগুচ্ছ মেঘই অন্যের জন্য রাখি।
যখন অন্য কারো বিষয়ে আমাদের নাক সিঁটকানোর উপক্রম হয় তখন সেই মুহূর্তেই অপর পাশের ব্যক্তির পরিস্থিতি উপলব্ধি করার মতো মন -মানসিকতা আমাদের থাকা উচিৎ নয় কি? আপনার কোনো সহপাঠী বা সহকর্মী বা আপনার বাড়ির খাদেম বা খাদেমা, তাদের জামা-কাপড় বা আর্থিক অসচ্ছলতার জায়গাটা তাদের দুর্বলতা জেনে, সেই কারণটাকে লক্ষ্য করে অস্বস্তিকর বা কষ্টদায়ক আচরণ বা মন্তব্য করা বর্তমানে আমাদের কাছে নিজের স্হানটা পাকাপোক্ত করার বা নিজেকে তথাকথিত বড়লোক বলে প্রকাশ করাটা ফ্যাশন হিসেবে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আসলে কি আপনি যা প্রকাশ করতে চাইছেন তা পারছেন?
না। পারছেন না। বাহবা যদি পেয়েও থাকেন, তো বুঝে নেবেন যারা বাহবা দিয়েছে বা দিচ্ছে তারাও আপনার মতোই ঘষা কাঁচের মতো মন নিয়ে সমাজে বিচরণ করছেন।

আপনি তখনই বড়লোক হতে পারবেন যখন প্রকৃত অর্থে আপনার মানবিক মূল্যবোধ ও মনুষ্যত্ব আপনার কাজে-কর্মে, আচার-ব্যবহারে প্রকাশ পাবে।
তখন আপনার চারপাশের সকলে আপনাকে শুধু আপনার টাকা দেখেই বড়লোক বলবে তা নয়, তখন তারা আপনার ব্যক্তিত্ববোধ যে কতটা উচ্চমানের তাে পরিচয় পাওয়ার মাধ্যমেই আপনাকে বড়লোক ও বড় মনের অধিকারী বলবেন। অর্থ যে আজ আছে কাল নেই তার বহুল প্রমাণ কিন্তু আমাদের চারপাশের হাজারো ঘটনার মধ্যে আমরা পেয়ে থাকি।

সর্বোপরি, আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ অন্যের খারাপ পরিস্থিতি, কষ্টদায়ক অবস্থায় নিজেকে তাদের আসনে বসিয়ে বিচার করা। অন্যের অসময়ে তাদের পাশে থেকে সমস্যার সর্বোৎকৃষ্ট সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

তাই নিজের ব্যপারে খোলামেলা ভেবে অন্যের ব্যাপারে মনটাকে আঁটসাঁট না করে, অন্যের ব্যাপারেও আমরা তাই করবো যা নিজের বেলায় করতাম।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন