পাশের বাসার আন্টি

পাশের বাসার আন্টি:
তো নাম ধাম বলার কিছুই নাই পারলে আমার প্রোফাইল গিয়ে দেখে আসুন।
আমাদের পাশের বাসার একটা ভাড়াটিয়া এসেছে আজ ৫ দিন হল।শুনেছি তার ছেলে নাকি এবার আপনাদের সাথেই এসএসসি দিছে। আল্লাহর রহমতে কোন রকমে টেনেটুনে পাশ করেছি।শুনেছি উনার ছেলে নাকি gpa ৫ পেয়েছে।আন্টির আনন্দ আর দেখে কে।এদিকে আমার বাড়িতে ঘর অশান্তি।
আন্টিকে প্রথমে অতটা বক্তা টাইপের ভাবিনি।কিন্তু যেদিন তিনি আমাদের বাড়িতে আসলেন মনে হয় বাড়ির উপর দিয়ে একটা তাণ্ডব চলে গেল।এমনিতেই তার কোয়েক দিন আগে ফনি মনি এসে কয়েক্ ঘা লাগিয়ে দিয়েছে।
– ভবি কেমন আছেন(আন্টি)
– আছি ভবি ভালই আছি। তো আপনাকে তো চিনলাম না!
– আরে ঐযে আমরা পাশের ফ্ল্যাটে কোয়েক্ দিন আগে ঢুকেছি।
– ওওওও আচ্ছা।বসেন ভবি।
– আরে বসবনা,নিন একটু মিষ্টি মুখ করুন!
– কিসের মিষ্টি?
– ঐযে আমার ছেলে রনি এবার এসএসসি তে gpa ৫ পেয়েছে।সেই আনন্দে!
– ওওওও আচ্ছা ভাবী তো খুব ভালো ।
– (একটু হেসে) শুনলাম ভবি আপনার ছেলেও নাকি এবার পরীক্ষা দিছে! উম!
– হ্যা ভাবী।
– তো কি রেজাল্ট করলো?
– ৫ আসে ভাবী।
– হুম।এইতো এইটাই আপনাদের দশ। ছেলে কে আদরে আদরে বদর করাটাই আপনাদের বড় ভুল হয়েছে।
সেই থেকে শুরু। এর মাঝে কিকি হয়েছে,কেমন কেমন মেন্টাল টর্চার আমার উপর দিয়ে গেছে সেটা আমি ভালো বুঝি।প্রতিটা ঘটনা এক কথায় প্রকাশ করতে লাগলেও ১ দিন ১ রাত লাগবে।
তবে এইভাবে বেশি দিন আর চলল না।
তো আমার মাকে এইরকম জ্ঞান দিতে দিতে শুধু মামাকে নয় আমার বড় বোনের উপর ও জ্বালাতন শুরু করল।আমার বোন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরত।আমাদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে হয় না।শুনেছি আন্টির নাকি একটা মেয়েও আছে।সেও নাকি বুয়েট থেকে পাস করা ।আর আমার বোন ড্রপ দিতে দিতে তার অবস্থা খারাপ।প্রায় সমবয়সী।তবে আমার বোনের সাথে ভালই মিল আছে।একদিন আমি আমার আর আন্টির মেয়ে গল্প করছিলাম।
হটাৎ করে আন্টির মেয়ে বলে উঠলো;
– সুমনা তুমার এই বোরকা টা আমার খুব পছন্দ হইসে।কোন দোকান থেকে অর্ডার দিছো?
সেই কথোপকথন শেষে আন্টির মেয়েও একটা সেইম বোরকা বানিয়ে নিল।
একদিন সকালে আমার বোন ভার্সিটিতে যায়।একটা ক্লাস শেষ করে মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে দেখে ৭৮ টা মিসকল।যারা কোনদিন কল দেইনি তারাও দিছে।খালি আব্বা আম্মাই দে নি।
এক সময় মামা কল দিছে
– হেল মা এতক্ষণ কল ধরিস নি কেন?
– মামা আমি তো ক্লাসে ছিলাম।
– ওওওও আচ্ছা ঠিক আছে।
– আচ্ছা মামা kicuubki হয়েছে?
,- না। মা কিছুই হোয়নি।
কল কেটে দিল।
আপু তার পর ভার্সিটি থেকে বাসায় আসলো।
আমিও সেই সময় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় আসছি।
আপুকে দেখা মাত্র আমার আব্বু আম্মু তো আপুকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল।
দেখছো সুমনার মা আমি বলছিলাম। আমাদের সুমনা এরমকম মেয়েই না।
তার পর বিচার ডাকা হল।পাড়ার আর সব লোকেরা আসলো।
আন্টি বলে উঠলেন,
না আমি আসলে ওর মতই একটা মেতে দেখছিলাম।এইতো এইরকম বোরকা পরা।আমার পাশ দিয়ে মোটর বাইক নিয়ে এক ছেলের সাথে বেরিয়ে গেল।
সব ভুল বুঝাবুঝি মিতে গেল।
কিন্তু ঐদিকে আবার আরেক কান্ড ঘটেছে।আন্টির মেয়ে আজ ২ দিন হল নিখোঁজ।তারপর বর নিয়ে হানিমুন করে একেবারে বাড়ি ফিরেছে।আন্টি বাড়িতে তুলবেই না,তারপর অনুরোধ বিনোরোধ করলো পাড়া পড়শীরা।
বাচ্চা মেয়ে।ভুল হতেই পারে।
এর পর থেকে আন্টি আর আমাদের বাড়ি মুখু হয় নি।
বেশ ভালই আছি।
আর্টিকেল ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ।

Related Posts

20 Comments

মন্তব্য করুন