পুনর্জন্ম বাস্তব নাকি কাল্পনিক

বর্তমানে আমরা প্রায়ই একটা জিনিস বেশি শুনতে পাচ্ছি। তা হলো পুনর্জন্ম। যা বর্তমানে প্রত্যেক মুভিতে আমরা লক্ষ্য করছি। আসলে এই পুনর্জন্ম জিনিসটা কী এটা কী বাস্তব না কাল্পনিক এই বিষয়টা জানার জন্য আমার সকলের মনের ভিতর একটি প্রশ্ন আনচান করছে। পুনর্জন্ম বাস্তব নাকি কাল্পনিক –

তাহলে মূল বিষয়ে আশা যাক। পুনর্জন্ম এটা ইসলাম কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারে না। এমনকি আহলে কিতাব ভুক্ত যতগুলো ধর্ম আছে সবগুলো ধর্মই এই পুনর্জন্ম কে একটি কাল্পনিক কল্পকথা মনে করে। হ্যাঁ, তবে হিন্দু ধর্মে এর ভালো রেওয়াজ আছে।

অনেক আগে থেকেই হিন্দুরা এই বিশ্বাস নিয়ে বেচে আছে যে, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে পূন্য করবে সে মারা যাওয়ার পর আবার মানুষ হয়ে পুনর্জন্ম গ্রহণ করবে। আর যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করবে, সে পরের জন্মে কুকুর, বিড়াল, অর্থ্যাৎ যে যত বেশী পাপ কাজ করবে। সে অত্যন্ত নিকৃষ্ট প্রাণী হয়ে পুনরায় জন্ম লাভ করবে। তো আমরা দেখতে পারলাম যে শুধু হিন্দু ধর্মের মধ্যেই এই বিষয়টা খুব জোড়ালো ভাবে চালু আছে। আর কোন ধর্মই এই বিষয়টাকে অত একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না।

মূল বিষয়ে আসি, যে জন্য আমি এই আর্টিক্যেলটি লিখার ইচ্ছা করলাম। সে কারণটি হলো,

কিছুদিন পূর্বে আমি প্রবন্ধ পড়ছিলাম। প্রবন্ধটির মধ্যে বিখ্যাত উর্দূ সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক মাওলানা মুহাম্মদ আবূ তাহের নাক্কাশ। একটি অদ্ভুত ঘটনায় বর্ণনা করেছেন। ঘটনাটি হলো

“এক সবজি বিক্রেতা পরিবারে তার সাতজন ছেলে/মেয়ে একজন স্ত্রী। এর মধ্যে চতুর্থ ছেলেটির নাম ইসমাঈল। কিন্তু ছেলেটির বয়স যখন আটমাস হলো। তখন থেকেই সে অস্বীকার করতে শুরু করল যে, না আমার নাম ইসমাঈল না আমার নাম আবেদ সুৎযুলিমস।

<

আমি একজন বড় ব্যবসায়ী। আমাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মা-বাবা যতই চেষ্টা করে। তাকে ইসমাঈল নাম আত্মস্ত করাতে ততই তারা ব্যার্থ হয়। এমনকি তার মা-বাবা জানে না যে, তুরস্কে আবেদ সুৎযুলিমস নামের কোন ব্যক্তি আছে কি না। তো একজন একজন করে অনেক মানুষ এই কথা জেনে ফেলল। এবং এমনকি যারা আবেদ সুৎযুলিমস কে চিনত তারাও তাকে দেখতে আসল। এক পর্যায় তার এই অদ্ভুত কাণ্ড দেখে তার মামা অতিষ্ট হয়ে বলে ফেলল।

ইসমাঈল তুমি এগুলো কি শুরু করেছ। হ্যাঁ, তোমার এই দুষ্টামি আর ভালো লাগছে না। বন্ধ কর তোমার এই দুষ্টামি। তখন ইসমাঈল বলে উঠল। তুমি এখন আমার সাথে এমন করছ। যখন তুমি আমার ওখানে কাজ করতে তখন তোমার সাথে খুবই উত্তম ব্যবহার করতাম। তার মামা এই কথা শুনে একদম হতবাক হয়ে গেল। আসলেই তার মামা আবেদ সুৎযুলিমসের ওখানে কাজ করত।

তার মামা এই কথা শুনে খোজখবর নিতে শুরু করল। তখন সে দেখল সত্যিই আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে আবেদ সুৎযিলমসকে অত্যন্ত নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। যখন তাকে আবেদ সুৎযুলিমসের বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো। তখন সে আবেদ সুৎযুলিমসের বাসার সব কিছু এমন ভাবে বলল যেন, সেই এই বাসা তৈরী করেছে। এবং এই বাসায় সে সারা জীবন অতিবাহিত করেছে। একসময় যখন সে বাড়িতে প্রবেশ করল তখন সে আবেদ সুৎযুলিমসের ১৭ বছরের মেয়ে গুলশিরীনকে চিনতে পারল। এবং খুব কষ্টের সাথে বুকে জড়িয়ে ধরে। বলতে লাগল আম্মু আম্মু তুমি এখন কেমন আছো আম্মু।

তারপর সে ঘড়ের ভিতর প্রবেশ করল, অতঃপর এক মহিলার দিকে ইশারা করে বলল, এ হলো আমার প্রথম স্ত্রী আর আমি তাকে এইজন্য তালাক দিয়েছিলাম যে, আমার দ্বীতিয়া স্ত্রী তাফহিমী এর থেকে বেশী সুন্দরী ছিল। আর এর কোন সন্তানও ছিল না। অতঃপর সে বলতে লাগল, সে দিন ছিল ৩১-ই জানুয়ারী ১৯৫৬ সাল যেদিন আমাকে হত্যা করা হয়েছিল।

তার কিছুদিন পূর্বে মোস্তফা রমযান নামক দুই ভাই এবং বেলাল নামক একজন লোককে নিয়ে আমার কাছে আসল এবং বলল, আমি যেন তাদের বন্দোবস্ত করে দেই। অতঃপর আমি তাদের আমার বাগানের কর্মচারী পদে নিয়োগ দিলাম। জুমার দিন রমযান আমাকে এই বলে আস্তাবলে নিয়ে গিয়েছিল যে, একটি ঘোড়া ভিষণ অসুস্থ। কিন্তু যখন আমি নুয়ে আমার ঘোড়াটিকে দেখতে গেলাম। তখনই সে আমার উপর হামলা করে। অতঃপর বাকি দুইজনও হামলা করে বসে। আমি তাদের হামলার টাল সামলাতে পারিনি।

অতঃপর প্রহরীদের অদূরে এক কবরের সামনে নিয়ে গিয়ে বলল, এই যে এই কবরে আমাকে দাফন করা হয়েছিল। আর এটা এমনই একটা বিষয় ছিল যে, কোন মানুষই এটাকে অস্বীকার করতে পারবে না। কারণ বাস্তবেই আবেদ সুৎযুলিমসকে ওখানে দাফন করা হয়েছিল।

ইয়ারগিল উইনিভার্সিটির এক ডাক্তার যিনি বিশেষ করে তার এইসব কাণ্ড কারখানার কথা শুনে তাকে দেখতে এসেছেন। তিনি বললেন, আমার কাছে ৪৪ টি প্রমাণ আছে এই চার বছরের শিশু ইসমাঈলই আবেদ সুৎযুলিমস। কিন্তু আমি আপনাদেরকে তার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারব না। কারণ আমি এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না যে, একজন মানুষ মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হতে পারে।”

তো আশা করি আপনারা সবাই বিষয়টা সম্পর্কে একটু হলেও বুঝতে পেরেছেন। আমি মুসলমান হিসাবে আমিও এটা বিশ্বাস করতে পারি না যে, একজন মানুষ মৃত্যুর পর পুনরায় জন্ম নিতে পারে। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা, এখন অপেক্ষায় রয়েছি দেখি এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বাহির হয় কি না।

তো বন্ধুরা আবার দেখা হবে নেক্সট কোন আর্টিক্যেলে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।  এবং গ্রাথোর.কমের সাথেই থাকুন।

Related Posts

16 Comments

মন্তব্য করুন