পৃথিবী উৎপক্তির ইতিহাস

কতই না সুন্দর, বাসযোগ্য ও রহস্যঘেরা আমাদের এই পৃথিবী । কোথাও সারা বছর মেঘ তো কোথাও সারা বছর বৃষ্টি হয় আবার কোথাও হচ্ছে তুষারপাত । সত্যি কত নীলা চলছে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে । সাগর, নদী , গাছ, পাহাড়, তরু, লতা, আগ্নেয়গিরি, ঘর্ণা সহ কোতই বিচিত্র জীবের বসবাস আমাদের এই পৃথিবীতে লোকস্রুতি আছে এই সুন্দর পৃথিবীতে নাকি ফেরেসতারাও তাদের বাস ভূমি হিসেবে তাদের অধিকার স্থাপন করতে চায় । কিন্তু আমরা আমাদের এই সুন্দার পৃথিবীর সঠিক ব্যবহার করছি না । আমরা কি কখনো ভেবে দেখিছি পৃথিবী কত সাধনার পর আমাদের জন্য বাসযোগ্য করেছে তার এই ভূমি । চলুন তাহলে আজ যেনে নেয়া যাক পৃথিবী উৎপক্তির ইতিহাস ।

সৌরজগৎ সৃষ্টির মোটামুটি ১০০ মিলিয়ন বছর পর একগুচ্ছ গ্রহের সংঘর্ষের ফল হলো পৃথিবী। আজ থেকে ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী নামের গ্রহটি আকৃতি পায়, পায় লৌহের একটি কেন্দ্র এবং একটি বায়ুমণ্ডল। সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে দুটি গ্রহের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছিল। সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, এ সময় একাসাথে জুরে  যায় গ্রহ দুটি। পৃথিবী নামক গ্রহের সঙ্গে চরম সংঘর্ষ হয়েছিল থিয়া নামে একটি গ্রহের। সংঘর্ষের সময় পৃথিবীর বয়স ছিল ১০ কোটি বছর। সংঘর্ষের জেরে থিয়া ও পৃথিবী একসাথে  জুড়ে যায়, তৈরি হয় নতুন গ্রহ। সেই গ্রহটিতেই আমরা বাস করছি। তিনবার চন্দ্র অভিযানে পাওয়া চাঁদের মাটি এবং হাওয়াই অ্যারিজোনায় পাওয়া আগ্নেয়শিলা মিলিয়ে চমকে যান গবেষকরা। দুটি পাথরের অক্সিজেন আইসোটোপে কোনও ফারাক নেই। গবেষকদলের প্রধান অধ্যাপক এডওয়ার্ড ইয়ংয়ের কথায়, চাঁদের মাটি আর পৃথিবীর মাটির অক্সিজেন আইসোটোপে কোনও পার্থক্য পাইনি। থিয়া নামক গ্রহটি তখন পরিণত হচ্ছিল। ঠিক সেই সময়েই ধাক্কাটি লাগে এবং পৃথিবীর সৃষ্টি হয়।

সৌরজগতের ভেতরে অবস্থিত সবচেয়ে পুরনো পদার্থের বয়স প্রায় ৪.৫৬ শত কোটি বছর ।  আজ থেকে ৪.৫৪ শত কোটি বছর আগে পৃথিবীর আদিমতম রূপটি গঠিত হয়। সূর্যের পাশাপাশি সৌরজগতের অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুগুলিও গঠিত হয় ও এগুলোর বিবর্তন ঘটতে থাকে। তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি  আণবিক মেঘ থেকে একটি  সৌর নীহারিকা  মহাকর্ষীয় ধসের মাধ্যমে কিছু আয়তন বের করে নেয়, যা ঘুরতে শুরু করে এবং চ্যাপ্টা হয়ে তৈরি হয় পরিনাক্ষত্রিক চাক্তিতে,  এবং এই চাকতি থেকেই সূর্য এবং অন্যান্য গ্রহের উৎপত্তি ঘটে। একটি নীহারিকাতে বায়বীয় পদার্থ, বরফকণা এবং  মহাজাগতিক ধুলি  (যার মধ্যে আদিম নিউক্লাইডগুলিও অন্তর্ভুক্ত) থাকে। নীহারিকা তত্ব অনুযায়ী  সংযোজন  প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অতিক্ষুদ্র গ্রহগুলি গঠিত হয়। এভাবে আদিম পৃথিবীটি গঠিত হতে প্রায় ১ থেকে ২ কোটি বছর লেগেছিল।

চাঁদের গঠন নিয়ে বর্তমানে গবেষণা চলছে এবং বলা হয় চাঁদ প্রায় ৪.৫৩ বিলিয়ন বছর পূর্বে গঠিত হয়। একটি  গবেষণারত অনুমানের তথ্য অনুসারে, মঙ্গল গ্রহ  আকারের বস্তু  থিয়ার সাথে পৃথিবীর আঘাতের পরে পৃথিবী থেকে খসে পড়া বস্তুর পরিবৃদ্ধি ফলে চাঁদ গঠিত হয়। এই ঘটনা থেকে বলা হয়ে থাকে যে, থিয়া গ্রহের ভর ছিল পৃথিবীর ভরের প্রায় ১০% যা পৃথিবীকে আঘাত করে কৌনিক ভাবে এবং আঘাতের পরে এটির কিছু ভর পৃথিবীর সাথে বিলীনও হয়ে যায়। প্রায় ৪.১ থেকে ৩.৫ বিলিয়ন বছরের মধ্যে অজস্র গ্রহাণূর আঘাত যা ঘটে, যার ফলে চাঁদের বৃহত্তর পৃষ্ঠতলের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে, আর এর কারণ ছিল পৃথিবীর উপস্থিতি।

এ তো গেল পৃথিবী উৎপক্তির ইতিহাস কিন্তু এর পরেও আছে বায়ুমন্ডল, গাছ, পানি, জীব, প্রানী, মানুষ কিভাবে এল এই পৃথিবীতে এসব কিছু জানতে হলে আমাদের হয়ত সাঁরা জীবন পার করে দিতে হবে । তবুও আমরা সমপূর্ন ভাবে জানতে পারবোনা এই পৃথিবী ইৎপক্তির ইতিহাস । আমাদের  এই পৃথিবির অনেক কিছুই এখনো অনেকের কাছে অজানা । চলুন আমরা না পারলেও চেষ্টা করি পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু কাজ আমরা যেন না করি । বিশেষ করে আমাদের নিত্য বেবহার্য্য বস্তু প্লাস্টিক যেখানে সেখানে না ফেলে নিদিষ্ঠ স্থানে ফেলি ।

 

Related Posts