বন্ধুত্বের মূল্য কিভাবে দেওয়া উচিত..

এক দেশে দুই বন্ধু ছিল।তাদের মধ্যে খুব ভাব ছিল।দুজনের পরস্পরের প্রতি ছিল যথেষ্ট আস্থা।তাদের মধ্যে কখনও কোন বিষয় নিয়ে মতের অমিল হতো না।তারা উভয়েই একে অপরের বাড়িতে আসা যাওয়া করত।ফলে উভয়ের পরিবারের মধ্যেও একটি সুসম্পর্ক গড়ে উঠল। একদিন তারা চিন্তা করল যে,তারা কোথাও ভ্রমণে যাবে। কিন্তু কোথায় যাওয়া যায় তা নিয়ে অনেকক্ষণ চিন্তা করল।পরে তারা একটি জায়গা নির্বাচন করল।জায়গাটি প্রকৃতপক্ষে একটি সমুদ্র সৈকত।সেখানে যেতে হলে প্রথমে একটি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।তারপর একটি মরুভূমির মত জায়গা যেখানে এদিক থেকে ওদিক শুধু বালি দেখা যায়।তারপর তারা সমুদ্র সৈকত দেখতে পাবে।

পরদিন দুই বন্ধু সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা দিল।তারা জঙ্গল অতিক্রম করার সময় নানা ধরনের জীবজন্তু দেখল।তারপর তারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে চলছিল। ভ্রমণের কিছু সময় পর তারা একটি মূল্যবান হীরা দেখতে পেল।দুইজনই এটি পেতে চাইল।ফলে তাদের মধ্যে তর্ক হয় এবং এক বন্ধু অন্য বন্ধুকে চড় মারে।ফলে অন্য বন্ধুটি আহত হল কিন্তু সে তার বন্ধুকে কিছু বলল না।সে বালিতে লিখল, “আজ আমার বন্ধু আমাকে চড় মারল।”

কিছুক্ষণ তাদের মধ্যে আর কোন কথা হল না।তারা সমুদ্র না পাওয়া পর্যন্ত হাঁটতে থাকল, যেখানে তারা গোসল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।কিছুদূর হাঁটার পর তারা সমুদ্র দেখতে পেল।সমুদ্রে নামতে যাবে এমন সময় যাকে চড় মারা হয়েছিল সে বন্ধুটি চোরাবালিতে আটকে গেল এবং ডুবে যেতে লাগল।তার বন্ধু চোরাবালি থেকে তাকে উদ্ধার করল।একটু সুস্থ হওয়ার পরে সে এবার একটি পাথরে লিখল,”আজ আমার বন্ধু আমার জীবন বাঁচিয়েছে।”

যে বন্ধুটি চড় মেরেছিল এবং পাশাপাশি তার প্রিয় বন্ধুটিকে বাঁচিয়েছিল সে বন্ধুটি তাকে জিজ্ঞাসা করল,”আমি তোমাকে আঘাত করার পরে তুমি বালিতে লিখেছিলে কিন্তু এখন তুমি পাথরে লিখলে কেন?”

তখন সে জবাব দিয়েছিল,”যখন কেউ আমাদের কষ্ট দেয় তখন আমাদের উচিত এটি বালিতে লিখার মত করে মনে রাখা যাতে আমাদের অন্তরের ক্ষমার হাওয়া এটিকে মুছে ফেলতে পারে।তবে, যখন কেউ আমাদের পক্ষে ভাল কিছু করে আমাদের অবশ্যই এটি পাথরে খোদাই করে রাখার মত মনে রাখা  উচিত যেন কোন দমকা হাওয়া কখনই এটিকে মুছে ফেলতে না পারে।”

এখানে শিক্ষনীয় বিষয় এই যে,আমাদের সবসময়ই খারাপ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে ভালো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।ভালো চিন্তাভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে খারাপ বিষয়গুলোকে এড়িয়ে চলার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।এর ফলে আমাদের মধ্যকার সম্পর্কগুলো হয়ে উঠবে মায়া মমতায় পরিপূর্ণ।

<

Related Posts

31 Comments

মন্তব্য করুন