বন্ধুদের মিস করা নিয়ে কিছু কথা | মনে পড়ে কলেজ জীবনের বন্ধুর স্নৃতি

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই। আশা করি সকলে ভালো আছেন।এই মহকমারীকে রুখতে হলে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে। সেই সাথে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে।

বন্ধুদের মিস করা নিয়ে কিছু কথা

বন্ধুত্ত পৃথিবীর সবথেকে মধুর নাম। কত বলা না বলা কথা, কত স্বপ্ন একসাথে দেখা,কতখানি ঘুরতে যাওয়া, কতনা আবেগ অনুভূতি জড়িয়ে আছে আমাদের এই বন্ধুত্তের ছোট্ট একটি শব্দের মধ্যে।আজ আমি তেমনি বন্ধুত্তের দুষ্ট মিষ্টি গল্প তুলে ধরব আপনাদের সামনে।

আজকের গল্পটি মিমু এবং তাজরিয়ানকে নিয়ে।মিমু এবং তাজরিয়ান দুইজন একই বয়সি এবং দুইজন একই কলেজে অধ্যায়নকারী।ঘটনাটা ২০১৪ সালের দিকে। প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা শুরুর খানিকটা আগে দিয়ে তাজরিয়ান আসে মীমদের কলেজে। যখনই তাজরিয়ানকে মীম প্রথমে দেখে তখনই মীম ভেবে নেয় বন্ধু বানালে শুধু তাজরিয়ানকে বানাবে। আর অন্য কাউকে নয়।

যেহেতু তাজরিয়ান নতুন এসেছে কলেজে মিমু ভেবে নেয় নিজ থেকে গিয়ে তাজরিয়ান এর সাথে কথা বলবে।যেই ভাবা সেই কাজ। সেইদিনের পর থেকে মীমু এবং তাজরিয়ান দুইজন খুব ভালো বন্ধু হিসেবে পরিনত হয়।আসতে আসতে তাদের একসাথে ঘুরতে যাওয়া, ক্লাস বাদ দিয়ে ফুসকা খেতে যাওয়া, সবসময় দেখা করা,কলেজের বাইরেও ভালো সময় কাটানো সেই সাথে সকলের সাহায্য করা এমন হাজারো স্নৃতি রয়েছে তাদের বন্ধুত্তের মাঝে।

তাদের দেখা না হলে ফোন এ ম্যাসেজের মাধ্যমে কথা বলা,কারো বাসায় ভালো রান্না করলে তা আরেকজন এর বাসায় নিতে আনতো। এমন ছোট বড় অনেক স্নৃতি জড়িয়ে আছে তাদের বন্ধুত্তের মাঝে। এভাবে দেখতে দেখতে তাদের কলেজ শেষ হলো।দুই বান্দুবি দুই কোচিং এ ভর্তি হলো। তাজরিয়ান মেডিকেন কোচিং এ আর মীমু ভর্তি হলো ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিংয়ের মধ্যে।দুইজন এ দেখাতে ভাটা পড়লেও সাপ্তাহে একদিন তাদের ঠিকই দেখা হতো। এভাবেই চলছিল তাদের বন্ধুত্ত।

<

একসময় মীমুর পারিবারিক সিদ্ধান্তের ফলে মীমু ঢাকা আসে আর তাজরিয়ান কুমিল্লায় থেকে যায়।তখন মীমু সবচেয়ে বেশি তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে মিস করতে থাকে। তার মন খারাপ হতো। কারণ নতুন এক পরিবেশ সেই সাথে নতুন বন্ধুবান্ধব। কিন্তু মিমুর জীবনে প্রিয় বন্ধু হিসেবে তাজরিয়ানের অনুপস্থিতি মীমকে অনেক কাদায়।কয়েকদিন পর তাজরিয়ানও ঢাকা চলে আসে তার পুরো পরিবারের সাথে।দুইজন দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তাদের বব্ধুত্তে আজও ভাটা পড়েনি।মাঝে মাঝে তাদের দেখা হতো। এভাবেই সবকিছু ভালোই চলতেছিলো।

একদিন হঠাৎ তাজরিয়ানের এক সিদ্ধান্ত মিমের মাঝে হাহাকার তুলে দেয়।তাজরিয়ান সিদ্ধান্ত নেয় বাইরে পড়তে যাওয়ার। যেই ভাবা সেই কাজ। দিন যত যাই তাজরিয়ান এর যাওয়ার দিন তত ঘনিয়ে আসে। মিমু তাজরিয়ানকে তাদের বব্ধুত্তের স্নৃতি হিসেবে কিছু উপহার প্রদান করে।হঠাৎ করে নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বই তাজরিয়ানের যাবার দিন ঠিক হয়।শেষ দেখার আগে তাজরিয়ান চলে যায়।

দুইজন দুইদেশে থাকার কারণে তাদের যোগাযোগে খানিকটা ভাটা পড়ে।মিমু আজও তাজরিয়ানকে প্রতিটি মুহুর্তে স্নরণ করে।মিমু নতুন কোন বন্ধু বানাইনি কিন্তু আজও তাজরিয়ানের অনুপস্থিতিতি তাকে অনেক পিড়া দেয়। প্রতিটি দিন তাজরিয়ানের অনুপস্থিতিতি তাকে স্নরণ করে।আজও তাজরিয়ান এর অপেক্ষায় রয়েছে মিমু।কিন্তু তাই বলে তাদের বন্ধুত্তের সম্পর্কে কোন ঝিড় ধরেনি।তাদের বন্ধুত্ত আছে,ছিলো এবং সর্বদাই থাকবে চিরজীবন।

পৃথিবীতে মানুষ কয়েকদিনের মেহমান।কেউ আসে কিংবা কেউ যায়।কিন্তু যারা আপনার প্রকৃত বন্ধু তারা আপনাকে কখনো ছেড়ে যাবে না। প্রত্যেকের জীবনে তাই একজন প্রকৃত বন্ধু থাকা খুব দরকার। আপনার যদি প্রকৃত বন্ধু না থাকে আমি বলবো অবশ্যই বানান। সকলের সাথে যোগাযোগ করুন।যোগাযোগ এর মাধ্যমে অনেক ভাঙা সম্পর্কেও জোড়া লেগে যায়।

Related Posts

28 Comments

  1. সুন্দর ও সৃজনশীল লেখা। গল্পগুলো আমাদের ভেতরের অনেক হারানো স্মৃতি তাজা করে দিচ্ছে, যাতে কেউ আনন্দ কেউবা বেদনা কে অনুভব করছে। লেখকের অনুভুতির প্রতি আমাদের ভালবাসা ও সন্মান রইল।

মন্তব্য করুন