অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধ করে দেয়া নিয়ে সরকারের তরফ থেকে গত দুই বছরের নানা ধরনের কথা শোনা গেছে। যেমন এখন আবারও শোনা যাচ্ছে এপ্রিল মাস থেকে বন্ধ করা হবে অবৈধ মোবাইল সেট। এ নিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে কিছু সহজ প্রশ্নের উত্তর এবং এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে জানা যাচ্ছে।
আসলে আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে আসলে অবৈধ মোবাইল সেট আসলে কোন গুলো? অবৈধ মোবাইল সেট আসলে সেগুলো যে মোবাইল সেট গুলো বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে আমদানী বা প্রস্তুত করা হয়নি সে সবই অবৈধ সেট। সরকার ২০১৮ সাল থেকে অনুমোদিত সব মোবাইলের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি বা আইএমইআই(IMEI) নাম্বার দিয়ে একটি ডেটাবেজ তৈরি করেছে। এই ডেটাবেজে যদি মোবাইল সেটের তথ্য না থাকে সেগুলোই অবৈধ।
আপনার ফোনটি বৈধ নাকি অবৈধ সেটি আসলে কিভাবে পরিক্ষা করবেন? তো চলুন সে বিষয়েও জানা যাক। এজন্য একটি পদ্ধতি রয়েছে, তার জন্য আপনার মোবাইলের আইএমইআই(IMEI) নাম্বারটি আগে জানতে হবে। সেটি জানার জন্য আপনার মোবাইলে *#06# এই কোডটি টাইপ করলেই চলে আসবে মোবাইলের আইএমইআই নম্বর। কোডটি টাইপ করলে দুটি নাম্বার আসতে পারে, আপনি যেকোনো একটি কপি করে নিন বা কোথাও লিখে নিন। এরপর KYD লিখে একটি স্পেস দিয়ে আইএমইআই নাম্বারটি লিখে ম্যাসেজ দিন ১৬০০২ নম্বরে। এবার ফিরতি ম্যাসেজ আসবে আপনার কাছে। যদি বলা হয় ডিভাইসের আইএমইআই বিটিআরসি ডেটাবেজে পাওয়া গেছে তাহলে সেই ফোনটি বৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে এবং এ নিয়ে আপনার আর কোনো দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আর সব ঠিকঠাক পাঠানোর পরও যদি মেসেজ আসে যে ডেটাবেজে এই নাম্বার পাওয়া যায়নি তাহলে বুঝতে হবে সেটটি বৈধ নয়।
বিটিআরসি থেকে জানানো হচ্ছে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের শুরুর দিকে এর বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্য রয়েছে। এখানে বলে রাখা দরকার আপনি যদি নতুন মোবাইল কিনতে চান তাহলে অবশ্যই উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করে নিশ্চিত করে নিবেন যে সে মোবাইলটি বৈধ কিনা। নাহলে পরবর্তীতে ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে।
যদি বিটিআরসির ডাটাবেজে আপনার ফোনের তথ্য না থাকে তাহলে কি করবেন? যখন এই প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন শুরু হবে তখন সরকার চাইলে আপনার ফোনটি বন্ধ করে দিতে পারে। তবে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এক্ষেত্রে জানিয়েছেন যে মোবাইলটি দিয়ে যদি কোনো অনিয়ম, জালিয়াতি বা প্রতারণা না করা হয়ে থাকে তাহলে তারা সেটিকে কোনোভাবে রেজিস্ট্রেশন ভুক্ত করার চেষ্টা করবেন। আর সমস্যা হলে সেটা সমাধান করার চেষ্টাও থাকবে বিটিআরসির। এ বিষয়টি এখনো যেহেতু প্রক্রিয়াধীন তাই ঠিক কি হবে? কিভাবে হবে? সেটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
বিটিআরসি থেকে বলা হচ্ছে ২০১৮ সালের আগের অর্থাৎ ডেটাবেজ নথিভুক্ত শুরু হওয়ার আগের ফোনগুলো বন্ধ করা হবে না। বিদেশ থেকে আনানো মোবাইলের ক্ষেত্রে যেহেতু শুল্ক বিভাগের অনুমতি থাকে, তাই এক্ষেত্রে অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ দেয়ার মত চিন্তা আছে বিটিআরসির। এক্ষেত্রে দুই একটা ফোনের জন্য নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এইজন্য কিনে আনা রশিদ ঠিকমতো রাখার পরামর্শ দিচ্ছে বিটিআরসি। কিন্তু অনেক বেশি সংখ্যক আনা হলে সেগুলোর অনুমোদন সহজ হবে না। তবে এসব বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত করা সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে স্মার্টফোন এবং বেসিক ফোন সব ফোনই রয়েছে।