বাবার সাথে স্মৃতিতে কিছুক্ষন। খু..উ..ব ভালোবাসি তোমায় বাবা।

আমার বাবার ক্যান্সার হয়েছিল।ক্যান্সারের ধরণ টা ঠিক কোন টাইফের বুঝিনা ভালোমত। সম্ভবত ফুসফুস ক্যান্সার। সম্ভবত বলছি এই কারনে কারন বাবার ফুসফুসে পানি জমেছিল এবং বুকের ডান সাইড থকথকে হয়েছিল।আমার বাবা মারা যান গত বছর ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে মঙ্গলবার রাত নয়টায় ।আমরা ছ ভাই/বোন। অর্থাৎ দুই বোন চার ভাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে এক ভাই ছাড়া বাবার মৃত্যুর সময় আমরা কেউ পাছে ছিলাম না বলতে পারেন থাকতে পারিনি। আমাদের বড় দিদি থাকেন ভারতে। বড় দাদা খাগড়াছড়ি,মেজ দাদা বাড়িতে(একমাত্র সেই ছিল),সেজ দাদা পটিয়া, ছোট দাদা কুমিল্লা আর আমি বৈবাহিক সুত্রে বান্দরবান। কর্ম সুত্রে হোক বা দূরত্বের কারনে আমরা সে সময় কেউ পাছে ছিলাম না। আমার যাওয়ার তারিখ ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু তোর পরের দিন অডিট আসার কথা তাই আমার ছুটি আপাতত ক্যান্সেল করা হয়েছিল। কথা ছিলো তার পরের দিন যাবো। কিন্তু বাবা আমাকে সেই সুযোগটুকু দিলেন না। সেদিন রাতেই তিনি মারা যান। বুকের ভেতর খুব কষ্ট হয়।
মেজ দাদার পাছাপাছি যাদের কথা না বললেই নয় তারা হলেন আমার জ্যাঠাতো বোন,দুলাভাই এদের কথা কখনোই অস্বীকার করা যাবেনা। এরা দিন রাত বাবার সেবা করে গেছেন। বাবাকে আমরা বুঝতে দিইনি যে বাবার ক্যান্সার হয়েছে। কিন্তু যেদিন তিনি বুজতে পারেন সেদিন নাকি কেদেঁছিলেন । এবং এই কারনেই নাকি আমরা তার সাথে দুরত্বে থাকতাম। আর তখন থেকেই বাবা দিদি/দুলাভাইদের বলতেন রাতে থাকার জন্য।আর তারাও নিরলস ভাবে বাবার সেবা করে গেছেন। বেচেঁ থাকার সময় বাবা আমায় খুব বলেছিলেন তার জীবনী নিয়ে কিছু লিখে দিতে। আফসোস বাবা বেচেঁ থাকতে তা করতে পারিনি। যখন আমি বাবাকে দেখতে গিয়েছিলাম বাবা আশা করে ছিলো শুনার। কিন্তু আমি শুনাতে পারিনি আমার খামখেয়ালিপনার জন্য।
মনে পড়ে আমরা যখন বাড়িতে যেতাম এবং যখন চলে আসতাম বাবা আমাদের দোকান পর্যন্ত এগিয়ে দিতো। লাস্ট যখন নভেম্বরে ২৩ তারিখ বাবাকে দেখতে যাই এবং ফেরার সময় বাবা শুধু ইজি চেয়ারে বসে উঠোন থেকে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। সে চোকের দিকে দু বার ফিরে দেখার সাহস আমার হয়নি। বাবার কাছে ক্ষমা চাইতে গিয়েও পারিনি।আজ বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাবার অসংখ্য স্মৃতি মনে পড়েছে যা লিখতে গেলেও লেখার শেষ হবেনা।
মনে পড়ে খুব ছোট থাকতে বাবাকে শাড়ি পড়ে বলতাম দেখতো বাবা আমাকে কেমন লাগছে? আমি বৌ যেতে পারবো কিনা । বাবা হেসে বলতো হ্যাঁ পারবে। মনে পড়ে সামান্য ঘুড়ির বায়না ধরে ছোট দাদাকে বাবার হাতে মার খাওয়ানোর কথা,মনে পড়ে আনারস ভর্তা খেয়ে ঝালের ছোটে যখন কান্না করছিলাম তখন বাবা অমায় এক কাঁধে ধরে ছুড়ে মেরেছিলো উঠানে। খু..উ..ব মিস করি বাবা তোমায়।তোমায় ছাড়া সব থেকেও নিজেকে বড্ড একা লাগে। তোমায় কখনো বলতে পারিনি আজ বলছি খুউব ভালোবাসি তোমায় বাবা। পরপারে যেখানেই থাকো ভালো থেকো।

Related Posts

24 Comments

মন্তব্য করুন