বিফোকাল লেন্স ও বিফোকাল মনন এর মিল

একই সাথে কাছের এবং দূরের দৃশ্য ভালোভাবে দেখার জন্য যে লেন্স ব্যবহার করা হয়, তাকে বিফোকাল লেন্স  বলা হয়। এ ধরনের লেন্সে একইসাথে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক পাওয়ার দেওয়া থাকে। যা নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী উভয়ক্ষেত্রেই দৃষ্টিকে সহায়তা করে। সাধারণত বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়, যা বিফোকাল লেন্স  এর মাধ্যমে সমাধান করা হয়।

দ্বিমুখী মনন

বিফোকাল লেন্স

সংবাদ সম্পাদনার ক্ষেত্রে একজন সম্পাদককে বিভিন্ন দিকে নজর রাখতে হয়। এজন্য তাঁকে যেসব গুণাবলীর অধিকারী হতে হয় তার মধ্যে দ্বিমুখী মনন হচ্ছে অন্যতম। বিফোকাল লেন্স  এর সাথে দ্বিমুখী মনন এর ধারনাগত মিল রয়েছে। বাই ফোকাল লেন্স যেমন একই সাথে কাছের ও দূরের বস্তু দৃষ্টিগোচর করে, তেমনি বাই ফোকাল মাইন্ড ও একজন সহ-সম্পাদককে সংবাদ কপির নিকটবর্তী ও দূরবর্তী ভুল চিহ্নিতকরণ ও সংশোধনে সহায়তা করে।

দ্বিমুখী মনন
এখানে নিকটবর্তী ভুল বলতে সাধারণত খালি চোখে ধরা পড়ে এমন ভুলগুলোকে বোঝানো হয়েছে। যেমনঃ শব্দগত, বানানগত, ভাষাগত, ব্যাকরণগত ভুল। বাক্যে এইধরণের কোন ভুল থাকলে একজন সহ-সম্পাদককে তা চিহ্নিত করতে হবে এবং সংশোধন করতে হবে।

সংবাদ কপির দূরবর্তী ভুল বলতে এমন ভুলগুলোকে বোঝানো হয়েছে যেগুলো সাধারণত খালি চোখে ধরা পড়ে না। অর্থাৎ এক-দুবার কপিটি পড়লেই সেটি ধরা পড়বে না। এর জন্য একজন সহ – সম্পাদককে আরো উন্নত চিন্তা ধারা ও জ্ঞানের অধিকারী এবং বিচক্ষণ হতে হবে।
যেমনঃ কোন সংবাদ কপিতে বলা হল, চট্টগ্রামে এক সড়ক দূর্ঘটনায় শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন: আয়েশা (১৯), রফিক (২৫) এবং আজাদ (৩৩)। এ সংবাদে কোন বানান বা বাক্যগত ভুল না থাকলেও তথ্যগত ভুল রয়েছে। কপিতে শিশু আহত বলা হলেও সর্বনিম্ন বয়স ১৯ বলা হয়েছে। অর্থাৎ, হয় এখানে কোন শিশু আহত হয়নি অথবা আয়েশার বয়স আরো কম। এক্ষেত্রে সহ-সম্পাদককে যাচাই করে নিতে হবে সঠিক তথ্যটি।

আবার, ধরা যাক, অন্য কোন কপিতে বলা হল: চট্টগ্রামের ঝাউতলা বাজারে আগুন লেগে কমপক্ষে ৩৫০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ।
এ সংবাদেও কোন সাধারণ ভুল চোখে না পড়লেও সহ-সম্পাদক যদি বিচক্ষণ হন তাহলে তিনি যাচাই করবেন সত্যিই এতগুলো দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা। কেননা, স্বল্প পরিসরের ওই বাজারে ৩৫০ টি দোকান থাকারই কথা নয়। কাজেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। এ ধরনের ভুল গুলোকে দূরবর্তী ভুল বলা হয়েছে, যেগুলো ঠিক খালি চোখে ধরা পড়েনা।

এখানে নিকটবর্তী ভুল বলতে বাক্য, শব্দ বা বানানগত ভুলের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে, দূরবর্তী ভুল বলতে তথ্যগত অথবা অনুধাবনগত ভুলগুলোকে নির্দেশ করা হয়েছে। এই দুই ধরনের ভুল চিহ্নিতকরণ ও সংশোধনের জন্য একজন সহ-সম্পাদককে অবশ্যই দ্বিমুখী মননের অধিকারী হতে হবে

Related Posts

5 Comments

মন্তব্য করুন