মসজিদ নির্মাণ সম্পর্কে হাদিস ও কুরআন এ কি বলা আছে?

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আপনারা কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকের বিষয়: মসজিদ নির্মাণ সম্পর্কে হাদিস ও কুরআন এ কি বলা আছে?

মসজিদ হল মুসলমানদের ইবাদতের স্থান। মসজিদের সঙ্গে একজন মুমিন বান্দার হৃদয় ও আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। আল্লাহর ঘর মসজিদ নির্মাণ, মেরামত, সংস্কার এবং এতে দান-সাহায্য করা একজন মুসলিমের অনেক সওয়াব এর কাজ। আল্লাহতালা এদের জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন। একজন প্রকৃত মুসলিমের কাছে মসজিদ অত্যান্ত প্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ স্থান মসজিদ।

মসজিদ নির্মাণ সম্পর্কে হাদিস ও কুরআন এ কি বলা আছে?

মসজিদের অত্যধিক ফজিলতের কারণেই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ২৮ জায়গায় এর আলোচনা করেছেন। আমি আপনাদের পাঁচটি আয়াত এর অর্থ পেশ করছি। যথা:

(০১) “এবং এই ওহীও করা হয়েছে যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সাথে কাউকে ডেকো না।”
[আল জ্বিনঃ আয়াত নং ১৮]

(০২) “নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।”
[আত তাওবাহ্ঃ আয়াত নং ১৮]

(০৩) “যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ। আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের) নির্ঝন গির্জা, এবাদত খানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর।”
[আল হাজ্জ্বঃ আয়াত নং ৪০]

(০৪) “এমন লোকেরা, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামায কায়েম করা থেকে এবং যাকাত প্রদান করা থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ উল্টে যাবে।”
[আন নূরঃ আয়াত নং ৩৭]

(০৫) “যে ব্যাক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে, তার চাইতে বড় যালেম আর কে? এদের পক্ষে মসজিদসমূহে প্রবেশ করা বিধেয় নয়, অবশ্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়। ওদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে।”
[আল বাকারাঃ আয়াত নং ১১৪]

মসজিদ নির্মাণ সম্পর্কে হাদিস :

মসজিদ নির্মাণ সম্পর্কে পাঁচটি হাদীস পেশ করা হল,

(০১) “রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম জায়গা মসজিদ, আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গা বাজার।”
[মুসলিম : ১৫৬০]

(০২) “হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।”
[মুসলিম : ১২১৮]

(০৩) “মসজিদ নির্মাণ হবে মুসলিমদের নিজস্ব পবিত্র মাল দ্বারা। এতে যাকাত ব্যবহার বৈধ নয়। কারণ, যাকাত হল গরীব-মিসকীন প্রভৃতি ৮ প্রকার খাতে ব্যয়িতব্য অর্থ। আর মসজিদ এ সব পর্যায়ে পড়ে না।”
[মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ৮/১৫২]

(০৪) “মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) বলেন, “যখন তোমরা তোমাদের মসজিদসমূহকে সৌন্দর্য-খচিত করবে এবং কুরআন শরীফকে অলঙ্কৃত করবে, তখন তোমাদের উপর ধ্বংস নেমে আসবে।” [ইআশা: ৩১৪৮ নং]

(০৫) “আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, একজন মুমিন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আমলনামায় যা থেকে নেকি যোগ হবে তা হলো যদি সে শিক্ষা অর্জনের পর তা অপরকে শিক্ষা দেয় ও প্রচার করে, অথবা সৎ সন্তান রেখে যায়, অথবা ভালো বই রেখে যায়, অথবা মসজিদ নির্মাণ করে যায়, অথবা মুসাফিরের জন্য মেহমানখানা নির্মাণ করে যায, অথবা নদী খনন করে যায়।”
[ইবনে মাজা : ২৪২]

পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন