রাঙামাটির ফুরোমন পাহাড়ে অবস্থিত বৌদ্ধবিহার

আসসালামু আলাইকুম । কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ই ভালো আছেন। আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম রাঙামাটির ফুরোমন পাহাড় সম্পর্কে কিছু বর্ণনা। যা দ্বারা ফুরোমন পাহাড় আপনাকে একবার হলেও কাছে টানবে। সুতরাং আর কোন কথা নয় জেনে নেওয়া যাক ফুরোমন পাহাড়ের বিশেষত্ব।

রাঙামাটির সর্বশ্রেষ্ট পাহাড় ফুরোমন পাহাড়। এর উচ্চতা ১৫১৮ ফুট। এটি বৌদ্ধদের জন্য একটি পবিত্র জায়গা। কারণ ফুরোমন পাহাড়ের উপর একটি বৌদ্ধবিহার রয়েছে । বিহারে যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই উচ্চতা পাড়ি দেয়ার পর ৬০০ টি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হবে। তাছাড়া চাকমা্ ভাষায় ফুরোমন অর্থ ফুরফুরে মন। যা পাহাড়ে উঠে আপনার মনকে ফুরফুরে করে তুলবে।

ফুরোমনে যখন যাবেনঃ

বৌদ্ধধর্মীদের কঠিন চীবর দান উৎসবে ফুরোমন পাহাড় নতুন রূপ ধারণ করে। যার কারণে রাস্তাঘাটে প্রচুর পরিমানে লোক দেখা যায়। এই সময়টাতে ফুরোমন পাহাড়ে খুব সহজে উঠা যায়। চারপাশে এলাকার লোকজন সাধারণ মানুষের জন্য দোকান পাট ও অন্যান্য জিনিসপত্র অস্থায়ীভাবে বিক্রি করে। রাঙামাটি সদর থেকে সিএনজিযোগে মানিকছড়ি-নানিয়ারচর রাস্তা দিয়ে ঢুকতে হবে। যাওয়ার ২০ মিনিট পর বামপাশের সাইনবোর্ডে ফুরোমন এ ঢুকার রাস্তা দেখা যাবে। অনুষ্ঠানের সময় গেলে পাহাড়ি আঁকাবাকা রাস্তা পাড়ি দেয়ার জন্য জ্বীপ অর্থাৎ চান্দের গাড়ি পাওয়া যাবে। প্রতিজনের জন্য ৫০-৬০ টাকা ভাড়া নেয়। কিন্তু অনুষ্ঠান ব্যতিত কোনো গাড়িই পাওয়া যায় না। আমি আপনাদের বলব হেঁটেই ফুরোমন পাহাড়ে উঠতে কারণ পাহাড়ে ভ্রমণ করতে গেলে হাঁটলেই মজা পাওয়া যায়। আর তার সাথে রাঙামাটি শহরের পুরো দৃশ্য দেখা যাবে। বিহারের নিচে আসলেই ফুরোমন পাহাড়ের সমাপ্তি মনে হয়। কিন্তু ভুল ভাঙে তখনই যখন সিঁড়ি উপর চোখ যায়। যার কারণে মন মরা হয়ে যায়। তাই মনকে ভালো রাখতে বিহারের নিচে অনুষ্ঠানের সময় পাহাড়িদের নানা ধরনের পিঠা, তাদের নৃত্য এবং নানা ধরনের খেলা ধুলা আয়োজন করে। আর তার নিচে চীবর বোনা হয়। যা তাদের ধর্মগুরুদের জন্য ভগবানের কাছে সমর্পণ করা হয়। নিচের এই ধাপ গুলো শেষ হওয়ার পর উপরে সিঁড়ি বেয়ে উঠলে আসল মজা হয়। উপরে উঠে একটি বৌদ্ধ মন্দির দেখা যায় । চারপাশে রাঙামাটি শহরের চিত্র ফুটে উঠে। সুদূরপ্রসারী ছোট ছোট ঘর এবং মোবাইলের টাওয়ার দেখা যায়। তার সাথে দেখা যায় রাঙামাটি শহরের কাপ্তাই লেক এবং ছোট ছোট দ্বীপ। পুরো দৃশ্য দেখলে মনে শান্তি আসে। মনে হয় যেন সেখানে বাড়ি বানিয়ে বসতি স্থাপন করি।। বিহারের পেছনে কিছু দূর গেলেই আর্মি ক্যাম্প দেখা যায়। আর্মি ক্যাম্পের পাশ দিয়ে খাদ ধরে হ্যালিপ্যাড এ যাওয়া যায়। এই সেই জায়গা যেখানে হেলিকপ্টার নামে এবং কোনো আর্মির কর্মকর্তা গুরুতর অসুস্থ হলে তৎক্ষণাৎ তাকে হেলিকপ্টার দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।। অনেক লোক জন হ্যালিপ্যাড এ এসে গান করে,, আড্ডা দেয়,, এখান থেকে রাঙামাটি শহরকে বেশিই স্পষ্ট দেখায়।। আর সেখানে বিহারের থেকে বেশি বাতাস গায়ে লাগে।। বাতাসের এত তীব্রতার জন্যে লোকজন সেখানে কম যায়। আর চারপাশে রয়েছে গভীরতম খাদ।। ফুরোমন যেমন সুন্দর তেমনি তার রয়েছে মহামারী খাদ। কিন্তু ভ্রমণপিপাসুদের কাছে ফুরোমন পাহাড় একটি চ্যালেন্জর ন্যায়। তাই ফুরোমন পাহাড়ে উঠতে হলে অবশ্যই কঠিন চীবর অনুষ্ঠানের সময় যাবেন।।।

ধন্যবাদ সবাইকে।।

Related Posts

7 Comments

মন্তব্য করুন