লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় আছে কি?

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকের বিষয়ঃ লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায় । তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায়

লম্বা হওয়া নিয়ে আমাদের দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরণের মিথ প্রচলিত আছে। সাধারণত জন্মের পর থেকে আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে। জীববিজ্ঞানের ভাষায়, এই লম্বা হওয়া নির্ভর করে হরমোন, বয়স, বংশগতি আর শরীরের পুষ্টির উপর। তাই বাড়ন্ত বয়সে ছেলেমেয়েদের সুষম খাবার খেতে দেয়া খুবই জরুরী।

আজকে এই পোস্টে আলোচনা করবো লম্বা হওয়ার কয়েকটি প্রাকৃতিক উপায় যা ইংল্যান্ডের গবেষণায় উঠে এসেছে। খাবার আর পর্যাপ্ত ঘুমের পাশাপাশি ব্যয়াম আপনার দেহের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে। স্ট্রেচিং ব্যয়াম, ঝুলে থাকা, বাইসাইকেল চালানো এগুলো আপনার উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

১.ঝুলে থাকা

ঝুলে থাকা একটি দারুণ ব্যয়াম। বিজ্ঞানীরাও মত দিয়েছেন যে, ঝুলে থাকা একধরণের শরীরচর্চা যা হাত ও মেরুদন্ডের পেশি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে হাতের পেশি মজবুত হয়। তবে প্রত্যাশিত ফল পেতে হলে এই শরীরচর্চা নিয়মিত করতে হবে আর ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে।

ঝুলে থাকা এটা বেশ কার্যকরী একটা পদ্ধতি আপনাকে ওঠানামা করার দরকার নেই যতক্ষণ সম্ভব ঝুলে থাকলেই হবে তবে এখানেও ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে এটা আপনার মেরুদন্ড এবং বাহুর পেশি সম্প্রসারণে সহায়তা করবে আপনার বাহু বেশি শক্তিশালী করতে প্রতিদিন ১ থেকে ২ মিনিট ঝুলে থাকলে যথেষ্ট।

২. কোবরা আসন

কোবরা আসন যোগব্যয়ামের সময় সাধারণত করা হয়। এটি খুবই কার্যকরী ব্যয়াম যা আপনার মেরুদন্ডকে সোজা করে উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করবে। কোবরা আসন করার জন্য পেটের উপর ভর দিয়ে মাথা তুলুন। হাত আর পা টানটান রাখুন। হাত সামনের দিকে বাড়িয়ে দিন। এই অবস্থায় পুরো শরীর ব্যালেন্স করন। প্রথমে ১৫ সেকেন্ড থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে।

৩. ভলিবল অথবা বাস্কেটবল

এই ধরণের খেলা উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে কারণ এতে হাত ও পায়ের পেশি সঞ্চালন হয়। আপনি চাইলে লাফালাফিও করতে পারেন। এতে আপনার হাড়ে গঠন ভালো হবে।

৪. ব্রিজ ওয়ার্কআউট

কোবরা আসনের মতো ব্রিজ একধরণের ব্যয়াম যা আপনার মেরুদন্ড আর পায়ের পেশি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

৫. সাঁতার

আপনি যদি প্রাকৃতিকভাবে উচ্চতা বাড়াতে চান তাহলে সাঁতার এক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ পানির নিচে সাঁতার কাটতে গেলে আপনার পুরো শরীরের স্ট্রেচিং ব্যয়াম হয়।

৬. খাবার

উচ্চতা বাড়াতে গেলে অবশ্যই খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। পরিমিত আর সুষম খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। ফল, শাকসবজি খেতে হবে। কারণ এতে প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেল থাকে।

৭. ঘুম

নিয়মিত ঘুমাতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের মধ্যেও আপনার উচ্চতা ০.১৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। যেহেতু ঘুমের মধ্যে শরীর রিল্যাক্স থাকে তাই হরমোন নিঃসরণ ভালো হয়।

৮.স্কিপিং

অনেকে মনে করেন, স্কিপিং বা দড়িলাফ করলেও পায়ের পেশির প্রসারণ ঘটে থাকে। আর এটি উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক।

৯. চাপমুক্ত থাকুন

উচ্চতা বাড়াতে চাইলে আপনাকে মানসিক চাপ কমাতে হবে। এতে প্রাকৃতিকভাবেই আপনার শরীরের হরমোন নিঃসরণ ভালো হবে। আর একইসাথে গ্রোথ হরমোনের উৎপাদন আর কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পাবে আপনার দেহে। গবেষকেরা মনে করেন, ঝুলে থাকা, দড়িলাফ, সাঁতার কাটা- এগুলো মানসিক চাপ কমাতে বেশ কার্যকর।

১০. যোগব্যয়াম

এছাড়া যোগব্যয়ামের বেশ কিছু আসন আছে যা দেহের উচ্চতা বৃদ্ধি আর গড়ন সুন্দর করতে প্রাকৃতিকভাবেই কাজ করে।

১১. Sprinting Workout

আপনার বয়স ২১ বা তার বেশি হলে sprinting workout আপনার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। এই ব্যয়ামের সাহায্যে আপনি ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত উচ্চতা বাড়াতে পারবেন বলে গবেষকেরা মনে করেন।

১২. সাইকেল চালানো

সাইকেল চালাতে হাত ও পায়ের সমন্বয়ের দরকার হয়। অনেকে মনে করেন সাইকেল চালানো উচ্চতা বৃদ্ধি করতে পারে। এক্ষেত্রে প্যাডেল কিছুটা উঁচুতে থাকবে আর বডি সোজা রাখতে হবে।

১৩. Supplement গ্রহণ

অনেকে নিজের উচ্চতা নিয়ে সন্তুষ্ট না হবার কারণে supplement গ্রহণ করে। Niacin এমনই একটি supplement যা উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। এছাড়া গ্রোথ হরমোন ইনজেক্ট করা ছাড়াও হাড়ের সার্জারির মাধ্যমে দেহের উচ্চতা বাড়ানো যায়।

এই ছিলো কয়েকটি উপায় যার মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবেই আপনি আপনার উচ্চতা বাড়াতে পারবেন। তবে এটি বেশ সাধনার বিষয়। একদিনে হবে না। ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হবে। আর পুষ্টির ঘাটতি বা হরমোনের সমস্যার কারণে দৈহিক বৃদ্ধি না ঘটলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

একটা কথা বলে রাখি, উচ্চতা বৃদ্ধির নাম করে যে সমস্ত পানীয়, চা বা টোটকা বাজারে বিক্রি করা হয় তার বেশিরভাগই কার্যকারিতা দেখাতে পারেনি। তাই এই ধরণের পণ্য কেনার সময় অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

আজ এই পর্যন্তই (লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায়)। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

4 Comments

মন্তব্য করুন