সত্যিই কি মেয়েদের কোনো ঘর নেই?আসলে মেয়েদের ছাড়া কোনো ঘরই পূর্নতা পায় না,,

~যে মেয়েটা ঘুম থেকে একটু দেরি করে ওঠে তাকে কথায় কথায় শুনতে হয় শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কি করবি? কাজ করে একটু ক্লান্ত হয়ে পড়লে পাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কি করবি শ্বশুর শাশুড়িকে কিভাবে খাওয়াবি?নিজের বেডরুম একটু এলোমেলো করে রাখলেই কেউ একজন বলে ওঠে শ্বশুরবাড়ি কিভাবে নিজেকে নিজের ঘর গুছিয়ে রাখবি? আচ্ছা নিজের ঘর কি এটা নয় এখন সে যেখানে অবস্থান করছে? যদি এটা না হয় তাহলে অবস্থান পরিবর্তন করে অন্য কারো ঘরে কি সেটা তার ঘর হবে?মেয়েটা যদি প্রতিবাদী হয় কিছু মানুষ বলা শুরু করবে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে একদিনও থাকতে পারবে না,পাঠিয়ে দিবে শ্বশুরবাড়ি থেকে। এরপর তার যখন বিয়ে হয় তখন তার মানসিক অবস্থাটা ভালো থাকার কথা নয়। কারন ঐ বাড়ি সম্পর্কে তার আগেই ধারনা হয়ে গেছে।সে যখন ভুল করে তখন ভয়ে থাকে, কে জানি কি বলে। প্রতিটা ভুলের বেশিরভাগ ভুলই সে ভয় করে করে। সে ধরে নেই এখানে তার সুখ নেই, আপন মানুষ নেই।আপনার সেই কথাগুলো তখন থেকেই সে মনে সেভ করে নিয়েছিল। সেই কথাগুলোই জাগতে শুরু করে। সে ধরেই নেয় এখানে আসলে সুখ নেই। একটু কষ্ট পেলেই ভাবতে শুরু করে আপনি আসলে ঠিকই বলেছিলেন। এখানে আরাম-আয়েশের মুখ দেখা যাবে না। এরপর যখন সে আপনার কাছে আসে মনটা একটু হালকা করতে কথা বলতে।তখন আপনি তাকে বলেন তোর ভাগ্যটাই আসলে খারাপ,তা না হলে তোর কপালে কেনো এমন শাশুড়ী জুটবে।
আপনি সহানুভূতি দেখিয়ে এখন যা বলছেন,তখন ও কিন্তু তাই বলছিলেন,যখন ছোট খাটো ভুল হতো।কিন্তু একটা বার ভেবে দেখেছেন আপনার এই কথা গুলো তার মানুষিকতার সেই প্রভাব ফেলে ছিলো কি না?
আর এখন যা বলছে তা কি সেই মেয়েটার জন্য সুখ বেয়ে আনবে?মোটে ও না।

একজন মানুষকে ছোট থেকেই বুঝিয়ে আসছেন।অন্যের বাড়িতে গিয়ে তাকে ভুল করা যাবে।কারো সাথে প্রতিবাদ করলে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।আপনার মতো করে তাকে কেউ ভালোবাসবে না।
আগেই তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন তার ঘর বলতে কিছুই নেই।
ভাগ্যের আড়ালে আপনি শশুর বাড়ির লোককে খারাপ বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু আসলেই কি খারাপ?বা মেয়েটা যে মন থেকে গ্রহন করছে না,সেটা কি তার একার দোষ।শশুর বাড়িতে সে থাকতে চায় না,কারো কোনো কথা সহ্য করতে পারছে না।এরজন্য কি সে দায়ী?নাকি তার চরিএ।

আপনি যাই বলেন না কেনো।আমি একটা কথাই বলবো।এর জন্য আপনিই দায়ী।সেই ছোট্ট বেলা থেকে আপনিই তার মনে ডুকিয়ে দিয়েছেন।শশুর বাড়িটা আসলে নিজের বাড়ি নয়,সেখানে কোনো ভুল করা যাবে না।কারো কোনো কথার প্রতিবাদ করা যাবে না।প্রতিবাদ করলে ফিরিয়ে দিবে।আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনি তার মনে যা ঢুকিয়েছেন তা হলো, কেউ সেখানে তাকে বকাবকি করলে বা কিছু বললে সেটা হবে নির্যাতন।আপনার আপনার কথা তার মনে এমন ভাবে গেথে নিয়েছে যে সে ধরেই নিয়েছে একদল লোক বসেই রয়েছে তাকে ভুল ধরার জন্য।প্রথম থেকেই শশুর বাড়ি সম্পর্কে একটা নেগেটিভ চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়েছেন।সে ধরেই নিয়েছে অন্য কেউ তাকে ভালোবাসবে না।

আসলে দোষ কারোই না।সেই আদিকাল থেকেই মেয়েদের মনে এই কথাই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে,যা আপনি আমি আমরা শুনছি এবং করছি।এটা কিন্ত মোটে ও ঠিক নয় নিজেদের চিন্তা ধারা পরিবর্তন করা উচিত।

Related Posts

23 Comments

মন্তব্য করুন