হুমায়ূন আহমেদের স্যারের ৫০ টি উক্তি – বাংলা কথা-সাহিত্যের প্রবাদ

হুমায়ূন আহমেদের স্যারের ৫০ টি উক্তি … বাংলা কথাসাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্ম থেকে সংগ্রহীত

1) ধরা যাক, এক কঠিন নাস্তিক মঙ্গল গ্রহে গিয়েছেন। সেখানকার প্রাণহীন প্রস্তর সংকুল ভূমি দেখে তিনি বলতে পারেন- এ কেউ সৃষ্টি করেন নি। অনাদিকাল থেকে এটা ছিল। তার এই বক্তব্যে কেউ তেমন বাঁধা দিবে না। কিন্তু তিনি যদি মঙ্গল গ্রহে হাঁটতে হাঁটতে একটা ডিজিটাল নাইকন ক্যামেরা পেয়ে যান তা হলে তাকে তখন বলতেই হবে, এই ক্যামেরা আপনা আপনি হয় নি। এর একজন নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা আছে।মনে করা যাক, ক্যামেরা হাতে তিনি আরো কিছু দূর গেলেন। এমন সময় তার সামনে দিয়ে একটা খরগোশ দৌড় দিল। যে খরগোশের চোখ নাইকন ক্যামেরার চেয়েও হাজার গুণ জটিল বা ভাল।তখন কি তিনি স্বীকার করবেন যে, এই খরগোশের কেউ একজন সৃষ্টিকর্তা আছে?”- রঙপেন্সিল
2) তার ডাক নাম হিমু। ভালো নাম হিমালয়। বাবা আগ্রহ করে হিমালয় নাম রেখেছিলেন যেন বড় হয়ে সে হিমালয়ের মত হয়- বিশাল ও বিস্তৃত, কিন্তু ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নয়। হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। ইচ্ছে করলে তিনি ছেলের নাম সমুদ্র রাখতে পারতেন। সমুদ্র বিশাল এবং বিস্তৃত। সমুদ্রকে হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। তার চেয়েও বড় কথা, সমুদ্রে আকাশের ছায়া পড়ে। কিন্তু তিনি সমুদ্র নাম না রেখে রাখলেন হিমালয়। কঠিন মৌ পর্বতমালা, যার গায়ে আকাশের ছায়া পড়ে না ঠিকই কিন্তু সে নিজেই আকাশ স্পর্শ করতে চায়।-দরজার ওপাশে
3) যারা বুদ্ধিমান, তারা সাধারণত অহংকারী হয়। এটা দোষের নয়। যে জিনিস তোমার নেই, তা নিয়ে তুমি যখন অহংকার করো, সেটা হয় দোষের।-অন্যভুবন;
4) একটা পরিবারে মায়ের ভূমিকা খুবই অদ্ভুত। পরিবারের যে কোন সদস্য যখন হাসে, মাকে হাসতে হয়। পরিবারের যে কোন সদস্য যখন দুঃখিত হয়, মাকে দুঃখিত হতে হয় । এটা হল পরিবারের দাবি। পরিবার এমন অন্যায় দাবি মা ছাড়া অন্য কারো ওপর করে না।”-মীরার গ্রামের বাড়ী;
5) তুমি স্বাধীন হওয়ার যোগ্য হলেই স্বাধীনতা পাবে। ভিক্ষা করে কখনও স্বাধীন হওয়া যায় না।”-আমি কেউ না
6) বড়দের পোষ মানানো সহজ, শিশুদের পোষ মানানো কঠিন। ভয়ঙ্কর কঠিন। কারণ শিশুরা অনেক কিছু বুঝতে পারে, বড়রা পারে না।”-বাঘবন্দি মিসির আলি;
7) মায়ের চেয়ে যদি অন্য কারোর প্রতি বেশি দরদ হয় তারে বলে ভান। ভান হলো শয়তান।”-আসমানীরা তিন বোন
8) পৃথিবীর নিয়মই হচ্ছে ক্ষমতাবানকে ভয় করা।”-অন্যভুবন
9) আমার শৈশবটা কেটে গেছে দুঃখমেশানো আনন্দে-আনন্দে। যতই দিন যাচ্ছে সেই আনন্দের পরিমাণ কমে আসছে। আমি জানি, একসময় আমার সমস্ত পৃথিবী দুঃখময় হয়ে উঠবে। তখন যাত্রা করব অন্য ভুবনে, যেখানে যাবতীয় আনন্দ বেদনার জন্ম।”-আমার ছেলেবেলা;
10) ‘না’ বলতে পারাটা খুব বড় গুন রে, মা। বেশিরভাগ মানুষ ‘না’ বলতে পারে না। এতে তারা নিজেরাও সমস্যায় পড়ে, অন্যদেরও সমস্যায় ফেলে। আমার বাবা কখনো না বলতে পারতেন না। যে যা বলত- তিনি বলতেন আচ্ছা। শুধু এই কারনেই সারাজীবন তিনি একের পর এক সমস্যার ভেতর দিয়ে গেছেন।-মেঘ বলেছে যাব যাব
11) কেউ কারো মত হতে পারে না। সবাই হয় তার নিজের মত। তুমি হাজার চেষ্টা করেও তোমার চাচার বা বাবার মত হতে পারবে না। সব মানুষই আলাদা।”-অপেক্ষা
12) একটা বয়সে প্রতিটি যুবক কিছু দিনের জন্য কার্ল মার্কস্ হয়ে যায়। নিপীড়িত অবহেলিত মানুষের জন্য কিছু করতে হবে- এই ভূত মাথায় ভর করে। এইটা হলো এক ধরণের ভাইরাস সংক্রমণ। ভাইরাসের কোনো ওষুধ নেই। এই অসুখেরও কোনো ওষুধ নেই। কিছু দিন পর আপনাআপনি ভাইরাস মারা যায়। রোগী সেরে ওঠে।”-শুভ্র গেছে বনে;
13) নামীদামি রেস্টুরেন্টের চায়ের চেয়ে রাস্তার পাশের সস্তা দোকানগুলোর চা ভালো হয়।”-হরতন ইশকাপন
14) যারা মিথ্যা বলে না তারা খুব বিপদজনক। তারা যখন একটা দুইটা মিথ্যা বলে তখন সেই মিথ্যাকে সত্য হিসাবে ধরা হয়। এক হাজার ভেড়ার পালের মধ্যে একটা নেকড়ে ঢুঁকে পড়ার মতো। একহাজার সত্যির মধ্যে একটা মিথ্যা। সেই মিথ্যা হবে ভয়ংকার মিথ্যা।”-মেঘের উপর বাড়ি
15) কবি শুনে মেয়েরা খানিকটা দ্রবীভূত হয়। পুলিশ কখনো হয় না। পুলিশের সঙ্গে কবিতার নিশ্চয়ই বড় ধরনের কোন বিরোধ আছে।”-ময়ূরাক্ষী
16) ছেলেদের চেহারা তেমন একটা পাল্টায় না। মেয়েদেরটা পাল্টাতে থাকে। কুমারী অবস্থায় এক রকম, বিয়ের কথা পাকাপাকির সময় অন্য রকম, বিয়ের পর আরেক রকম, আবার মা হবার সময় এক দফা পাল্টায়। দ্বিতীয় দফা পাল্টায় শাশুড়ি হবার পর।”-বৃষ্টিবিলাস;
17) কোনো পুরুষ মানুষের পক্ষে একা একা সারা জীবন কাটানো সম্ভব না। পুরুষদের নানান ধরনের চাহিদা আছে। ভদ্র চাহিদা, অভদ্র চাহিদা। ওদের চাহিদার শেষ নেই।-মেয়েরা কি তার থেকে মুক্ত?-মেয়েরাও তার থেকে মুক্ত না। তবে মেয়েরা ব্যক্তিগত চাহিদার কাছে কখনো পরাজিত হয়না। পুরুষরা হয়।”-আমিই মিসির আলি;
18) ফিকশন রাইটারের ফিকশন বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য একটা ঘটনার এমন বর্ণনা হতে হবে, যেন মনে হয় – এটাই তো হবে।”-বলপয়েন্ট;
19) মেয়েরা পুরাপুরি পানির মত। নিজের আকৃতি নেই। যে পাত্রে রাখা হচ্ছে সে পাত্রের আকার ধারণ করছে”-ছায়াবিথী;
20) হাতে মশাল থাকলেই আগুন জ্বালাতে ইচ্ছা করে। হাতে তলোয়ার থাকলে কোপ বসাতে ইচ্ছা করে। বন্দুক থাকলে ইচ্ছা করে গুলি করতে। মানব চরিত্র বড়ই অদ্ভুত! আচ্ছা, কারোর হাত ভর্তি ফুল দিয়ে দিলে সে কী করবে? ফুল বিলাতে শুরু করবে?”-জোছনা ও জননীর গল্প;
21) মেয়েরা দুশ্চিন্তা করতে খুবই পছন্দ করে। দুশ্চিন্তার কোনো বিষয়ই না, এসব নিয়েও তারা দুশ্চিন্তা করে।”-আজ চিত্রার বিয়ে;
22) খারাপ সংবাদের নিয়ম হলো, একটা খারাপ সংবাদের পর পর দ্বিতীয় খারাপ সংবাদটা আসে। খারাপ সংবাদ কখনও একা আসে না।”-আজ আমি কোথাও যাব না;
23) একজন মানুষের জন্য অন্য একজন মানুষের অস্থিরতা দেখতে এত ভালো লাগে। এই অস্থিরতার নামই কি ভালোবাসা? ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ এই বাক্যটার মানে কি? আমি তোমার জন্য অস্থির হয়ে থাকি? কে জানে ভালোবাসার মানে কী?”-আজ আমি কোথাও যাব না;
24) সব মানুষের অন্তত একবার করে হলেও জীবন গোড়া থেকে শুরু করার সুযোগ থাকলে ভাল হত। বড় ধরনের ভুলগুলোর একটি অন্তত শোধরানো যেত।”-সাজঘর;
25) মৃত্যু হচ্ছে একটা শাশ্বত ব্যাপার। একে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। আমরা যে বেঁচে আছি এটাই একটা মিরাকল।”-কবি
26) যে পাখি যত সুন্দর তার কণ্ঠস্বর তত কুৎসিত। যেমন ময়ূর। সে দেখতে সুন্দর কিন্তু তার কণ্ঠস্বর কর্কশ। একমাত্র ব্যতিক্রম কাক। সে নিজে অসুন্দর, তার কণ্ঠস্বরও অসুন্দর”-জোছনা ও জননীর গল্প
27) মৃত্যু ভয় বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ। শুধু মাত্র নির্বোধদেরই মৃত্যু ভয় থাকে না।”-নি;
28) কোন মানুষই মহাপুরুষ না! এই পৃথিবীতে শুধু একটা জায়গাতে মহাপুরুষরা বাস করেন। আর কোথাও বাস করেন না। :মহাপুরুষরা কোথায় বাস করেন? :ডিকশনারিতে!-যদিও সন্ধ্যা
29) আত্মহত্যা সহজ পথ, তবে খুবই নিম্নমানের পথ। আত্মহত্যা খুনের চেয়েও খারাপ। খুন করার পর অনুশোচনার একটা সুযোগ থাকে। আত্মহত্যার পর সেই সুযোগও থাকে না”-মেঘের ছায়া
30) জগতের যত বড় বড় Crime তার সবের পেছনে একটা মেয়ে মানুষ থাকবে। শুরুতে সেটা মাথায় রাখলে সুবিধা হয়। ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়ে গেল হেলেন নামের নাকবোঁচা এক মেয়ের জন্য”-মাতাল হাওয়া;
31) কিছু কিছু পুরুষ আছে, যারা রুপবতী তরুনীদের অগ্রাহ্য করে এক ধরনের আনন্দ পায়। সচরাচর এরা নিঃসঙ্গ ধরনের পুরুষ হয় এবং নারীসঙ্গের জন্য তীব্র বাসনা বুকে পুষে রাখে।”-অনীশ;
32) আমরা মুখে অনেক কথা বলি না, কিন্ত আমাদের শরীর বলে। মনের ভেতরের কথা শরীর প্রকাশ করে দেয়। আমাদের মন অনেক কিছু বলতে চায় না। কিন্ত শরীর বলে দেয়”-মিসির আলি! আপনি কোথায়?;
33) ব্যবহার না করলে বুদ্ধি কিন্তু নষ্ট হয়ে যায়। তোমাকে যদি একমাস একটা ঘন অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হয়, একবারও যদি সেই ঘরে আলো না জ্বালা হয়, তাহলে একমাস পর দেখা যাবে তুমি চোখে কিছুই দেখছ না। তুমি পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেছ। এটা বৈজ্ঞানিক সত্য।-শুভ্র গেছে বনে;
34) সুখ এবং দুঃখ আসলে একই জিনিস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুখ বদলে গিয়ে দুঃখ হয়ে যায়। দুঃখ হয় সুখ। জীবনের প্রবল দুঃখ ও বেদনার ঘটনাগুলি মনে পড়লে আজ আমার ভালো লাগে। প্রাচীন সুখের স্মৃতিতে বুক বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়।”-অচিনপুর
35) বড় ধরনের বিপদের সামনেই একজন মানুষ অন্য একজনের কাছে আশ্রয় খুঁজে ।তাই পৃথিবীতে ভয়াবহ বিপদ আপদেরও দরকার আছে”-পারাপার
36) একজন ঘুমন্ত মানুষের সঙ্গে আরেকজন ঘুমন্ত মানুষের কোন প্রভেদ নেই। জাগ্রত মানুষই শুধু একজন আরেকজনের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়।” -আঙুল কাটা জগলু;
37) আলো যেমন চারপাশ আলো করে তোলে একজন পবিত্র মানুষও তার চারপাশ আলো করে তুলবেই”-পারাপার;
38) মিথ্যা কখনো এক লাইনে বলা যায় না। মিথ্যা বলতে হয় আটঘাঁট বেঁধে। সত্যি কথার কোন ডিটেল ওয়ার্কের প্রয়োজন হয় না, কিন্ত মিথ্যা মানেই প্রচুর ডিটেল কাজ।” -আকাশ জোড়া মেঘ
39) যে জিনিস চোখের সামনে থাকে তাকে আমরা ভুলে যাই। যে ভালোবাসা সবসময় আমাদের ঘিরে রাখে তার কথা আমাদের মনে থাকে না। মনে থাকে হঠাৎ আসা ভালোবাসার কথা।”-বহুব্রীহি
40) লজিক হচ্ছে সিঁড়ির মতো। লজিকের একটা সিঁড়িতে পা দিলে অন্য সিঁড়ি দেখা যায়।”-হরতন ইশকাপন
41) মদ না খেয়েও মানুষ মাতাল হতে পারে। একটি ভালো কবিতা পড়ে মাতাল হতে পারে, একটি সুন্দর সুর শুনে মাতাল হতে পারে, প্রেমে পরেও মাতাল হতে পারে।”-দিনের শেষে;
42) ঘরে খাবার পানি না থাকলে সঙ্গে সঙ্গে পানির পিপাসা পেয়ে যায়। তৃষ্ণায় বুকের ছাতি শুকিয়ে আসে। ঘরে পানি থাকলে কখনো এত তৃষ্ণা পেত না।”-বাঘবন্দি মিসির আলি;
43) অনেকদিন পর মেয়ে বন্ধুরা একত্রিত হলে একটা দারুণ ব্যাপার হয়। আচমকা সবার বয়স কমে যায়। প্রতিনিয়ত মনে হয় বেঁচে থাকাটা কি দারুণ সুখের ব্যাপার।”-নির্বাসন
44) লেখালেখি এক ধরনের থেরাপি। ব্যক্তিগত হতাশা, দুঃখবোধ থেকে বের হয়ে আসার পথ। আমি এই থেরাপি গ্রহণ করে নিজের মনকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করি।”-বলপয়েন্ট;
45) গাঁজা গাছের স্ত্রী-পুরুষ আছে। দুই ধরণের গাছেই ফুল হয়। তবে শুধু স্ত্রী গাছই গাঁজা, ভাং এবং চরস দেয়। পুরুষ গাছের মাদক ক্ষমতা নেই। ধিক পুরুষ গাঁজা বৃক্ষ!”-বৃক্ষকথা;
46) মেয়ে জাতটা বড় অদ্ভুত। কী বললে পুরুষ মানুষের মন ভালো হয় সেটা যেমন জানে, আবার কী বললে পুরুষ মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায় সেটাও জানে।” -জনম জনম;
47) আধুনিক সমাজে বাস করার এই অসুবিধে। মনের কথা খোলাখুলি কখনো বলা যায় না। একটি মেয়েকে ভালো লাগলেও সরাসরি তাকে সেই কথা বলা যাবে না। অনেক ভণিতা করতে হবে।”-আকাশ জোড়া মেঘ;
48) মানুষ পৃথিবীতে দুই হাত নিয়ে এসেছে কাজ করার জন্যে ভিক্ষা করার জন্যে না। আল্লাহ্‌ যাদি চাইতেন মানুষ ভিক্ষা করবে তাহলে তাকে একটা হাত দিয়েই পৃথিবীতে পাঠাতেন। ভিক্ষার থালা ধরার জন্য একটা হাতই যথেষ্ট।”-বাঘবন্দি মিসির আলি
49) মানুষের সব শখ মেটা উচিত নয়। একটা কোনো ডিসস্যাটিসফেকশন থাকা দরকার। তাহলে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে। সব শখ মিটে গেলে বেঁচে থাকার প্রেরনা নষ্ট হয়ে যায়। যে সব মানুষের শখ মিটে গেছে, তারা খুব অসুখী নুষ।”-দেবী
50) বিবাহ এবং মৃত্যু এই দুই বিশেষ দিনে লতা-পাতা আত্মীয়দের দেখা যায়। সামাজিক মেলামেশা হয়। আন্তরিক আলাপ আলোচনা হয়।” একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা
51) পুরুষের হচ্ছে ভালোবাসা ভালোবাসা খেলা। মেয়েদের ব্যাপার অন্যরকম, তাদের কাছে ভালোবাসার সঙ্গে খেলার কোন সম্পর্ক নেই। একটা মেয়ে যখন ভালোবাসে তখন তার ভালোবাসার সাথে অনেক স্বপ্ন যুক্ত হয়ে যায়। সংসারের স্বপ্ন, সংসারের সঙ্গে শিশুর স্বপ্ন। একটা পুরুষ যখন প্রেমে পড়ে তখন সে শুধু তার প্রেমিকাকেই দেখে আর কাউকে নয়।”-সে আসে ধীরে;

নোটঃ
——–
হুমায়ুন আহমেদ স্যারের নাস্তিকতার ব্যাপারে কেউ সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারবে বলে মনে হয় না। আমার জানা মতে অর্থাৎ আমি যতো বই পড়েছি … তাঁর কোন লেখাতেই নামাজ, কোরআন কখনই অসম্মানিত হয়নি । কিংবা পর্দা নিয়ে ব্যাঙ করা হয়নি । স্যারের প্রায় প্রতিটি লিখাতেই টুপী পরা ভদ্রলোক কিংবা তসবিহ হাতে কোন নারীকে পাওয়া গেছে ।
এবং তার লিখনির মইধ্যে মাঝে মাঝে হাদীস উইঠা আইত যার প্রত্যেকটাই ছিল সহীহ্ হাদীস। আচ্ছা একজন নাস্তিকের কি প্রোয়োজন লেখার মইধ্যে হাদীস দেয়ার? তাও আবার সহীহ্ হাদীস। শোনা যায় স্যার মৃত্যুর আগে তার প্রিয় কয়েকটা কুরআনের আয়াত পড়ছিলেন। আচ্ছা তিনি যদি নাস্তিক হইতেন তাইলে তিনি মৃত্যুর আগে কুরআনের আয়াত গুলা কেন পড়ছিলেন?
যারা স্যারকে নাস্তিক বলেন তারা শোনেন,একজনার সম্বন্ধে আগে না জাইনা স্রেফ শুনে মন্তব্য করা উচিত না …।
তাছাড়া তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম তিনি আস্তিক আস্তিক হলেই কি জান্নাতে যাওয়া নিশ্চিত ?
যারা আজ হুমায়ুন স্যারকে নাস্তিক বলছেন, তাদের কাছে
প্রশ্নঃ – আপনি তো আস্তিক ।
আপনি কি ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন ? –
আপনি কি সদা সত্য কথা ও সত্যের পথে চলেন ? –
রাস্তায় ক্ষুদার্থ কে দেখে এগিয়ে যান ? –
পরনারীর দিকে কি আপনার চোখ যায়না ?
সে চোখে কি কাম জাগেনা ?
আপনার মাঝে কি লোভ ও স্বার্থ কাজ করে না …!
কারো সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে তার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন । সাহিত্য ও ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা জেনে আসুন ।
কারো বই না পড়ে স্রেফ শুনে তাকে নাস্তিক প্রমান করে কি বেহেস্তের একটা খালি সিট আপনি পেয়ে যাবেন ভাবছেন ?
তাছাড়া উনি নাস্তিক কি আস্তিক সেটা আমার দেখার বিষয় না । উনি একজন সাহিত্যিক এটাই আমার বড় কথা । আল্লাহ পাকের সৃষ্টির সেরা মানুষকে তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভালবেসে গিয়েছেন । হতাশাগ্রস্ত ও দরিদ্র জনসাধারন কে ছোট ছোট আনন্দ দানের মাঝে বাঁচতে শিখিয়েছেন ।উনি দেখিয়ে দিয়েছেন সহজবোধ্যভাবে কিভাবে পাঠকের মন ছুয়ে যেতে হয়, অতি সহজ লেখা দিয়েও জীবনের কঠিনতম দর্শন কে কিভাবে পাঠকের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হয়।পরাজিত বেকার যুবকদের নতুন স্বপ্নে উদ্দীপ্ত করেছেন । এই জন্যই হুমায়ুন স্যার পাঠককুলের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন যুগ যুগ ধরে । আর নিশ্চয়ই তার এই অবদান, সুবিচারক মহান আল্লাহ পাকের বিবেচনার বাইরে থাকবে না ?
মৃত মানুষ সম্পর্কে বাজে আলোচনা বা মন্তব্য না করাই ভাল। তিনি এখন যেখানে আছেন আমরা নিজেরা তাকে নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ না করে এর ভারটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলেই পারি।
সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন দেখি এইসব আস্তিক ও নাস্তিক নিয়ে এমন একজন মানুষ ক্যাচাল করে যে নিজের ধর্মের সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে না … তাকে যদি সূরা আল ফাতিহা বাংলা অনুবাদ জিজ্ঞেস করা হয় সে বলতে পারবে না …
কারো সম্পর্কে এই ধরনের ক্যাচালে যেতে হলে আগে কোরআন ও হাদিস ভালো করে অর্থ বুঝে পড়ুন ।
Keyword:
হুমায়ুন আহমেদ উক্তি,
হিমুর উক্তি,
হুমায়ুন আহমেদ এর জীবনী,
হিমুর বিখ্যাত উক্তি,
হুমায়ুন আহমেদ এর ছোট গল্প,
হুমায়ুন আহমেদ এর গান,
হিমু রূপা উক্তি,
হুমায়ুন আহমেদ এর জন্মদিন,
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস|

Related Posts

21 Comments

মন্তব্য করুন