৯ম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও সমাধান (৪র্থ সপ্তাহ)

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আমার এই পোস্টে ৯ম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও সমাধান নিয়ে। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।

অ্যাসাইনমেন্ট বা নিধারিত কাজ-

‘পরিবেশ বাচলে বাচবে পৃথিবী’ এ বিষয়ে অনাধিক ৩০০ শব্দের মধ্য  একটি প্রতিবেদন তৈরি কর-

সংকেত-

সূচনা

পরিবেবেশের উপাদান

ভূগোলের শাখা

ভূগোল ও পরিবেশের আন্তসম্পর্ক

পরিববেশ রক্ষায় আমার ভুমিকা

উপসংহার

সূচনা:

মানুষের বসবাসের যোগ্য এলাকাকে বলে। পরিবেশের সাথে মিলেমিশে মানুষ বা অপরাপর প্রাণীর জীবনের বিকাশ ঘটে।পরিবেশ দূষণ বর্তমানে প্রাণীকুলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া।
পৃথিবীর নানা ধরনের দূষণের ফলে গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়ার বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল,এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু অঞ্চল সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় উদ্ভিদের কোন বিকল্প নেই পরিবেশ দূষণের কারণে উদ্ভিদের অস্তিত্ব আজ প্রশ্নের সম্মুখিন।

পরিবেশ দূষণ সাধারণত ৩ ধরণের হয়ে থাকে।

পানি দূষণ, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ

বায়ু দূষণ-

জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন শিল্প-কারখানার ধোয়া ইত্যাদি থেকে নির্গত গ্যাস বায়ু দূষিত করে। এসব গ্যাসের মধ্যে কার্বন, কার্বন মনো অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন ইত্যাদি অবস্থান করে যা জীবদেহের জন্য ক্ষতিকর।তেল জাতীয় জ্বালানি দূষণের ফলে ক্ষতিকর গ্যাস উৎপন্ন ধোয়া সঙ্গে সঙ্গে কারখানার, অটোমোবাইল, মোটরগাড়ি ইত্যাদি থেকে নির্গত হয়।যা জীবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।এছাড়াও আবর্জনা,মৃতদেহ পচনের ফলে বায়ু দূষিত হয়।

পানি দূষণ –

মানব সমাজের উৎকৃষ্ট সাধনের সাথে সাথে শিল্পের প্রসার ও অন্যান্য প্রয়োজনে পানির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু জনসংখ্যার বৃদ্ধি, শহরের নালাসমুহের নির্গমন, কলকারখানার বর্জ্য, তরল পেট্রোলিয়াম, বিষাক্ত হাইড্রোকার্বন, কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা ইত্যাদি এই পানি সপ্দকে ব্যাপক হারে দূষিত করছে। আমরা নদী থেকে খাবার পানি সরবরাহ করে থাকে।এগুলো সাধারণত নর্দমার ময়লা দ্বারা দূষিত। শহর অঞ্চলের নর্দমা গুলো সাধারণত নদীতে গিয়ে শেষ হয় এবং এগুলো দ্বারা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের ও অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা নদীতে পতিত হয়। সঠিকভাবে এই পানিকে দূষণমুক্ত করা না গেলে এবং এই পানি পান করলে কলেরা টাইফয়েড, জন্ডিস ইত্যাদি রোগের সৃষ্টি হয়। শিল্পসমূহ হতে নদীর পানি দূষিত হবার একমাত্র কারণ। এছাড়া মানুষ উন্নতমানের বীজ, রাসায়নিক সার, উন্নত ধরনের সেচ ব্যবস্থার বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও আগাছা দমনের ঔষধ ইত্যাদি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা করছে এগুলো বৃষ্টির পানির সাথে নদীতে পতিত হয়ে নদীর পানিকে দূষিত করে। দূষিত পানি সংক্রামক রোগ ছড়ায়।

শব্দ দূষণ- শব্দের মাত্রা যখন স্বাভাবিকতা হারিয়ে ও অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে তখনই সেটা হয় শব্দ দূষণ। শহরের বিভিন্ন শিল্প কারখানার বিকট শব্দ, মোটরযানের আওয়াজ, মাইকের আওয়াজ, রেডিও-টেলিভিশনের শব্দ, চেচামেচি, বিভিন্ন আনন্দ-উৎসবের শব্দ ইত্যাদি শব্দ দূষণ সৃষ্টি করছে। এই শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শ্রবণশক্তি, উচ্চরক্তচাপ হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি প্রভৃতি অসুবিধা দেখা যায়।

ভূগোল ও পরিবেশের আন্তসম্পর্ক-

পৃথিবী মানুষের বাসময়, পৃথিবীর জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি, উদ্ভিদ প্রাণীর নদনদীর খনিজ সম্পদ তাকে বিভিন্ন ভাবে প্রবাহিত করে মানুষের ক্রিয়া-কলাপ এর ফলে পরিবেশে নানা রকম পরিবর্তন করে। ঘরবাড়ি অফিস-আদালত রাস্তাঘাট, শহর -বন্দর নির্মাণপ্রকৃতি ও পরিবেশ বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তিত করে।
বনভূমিকে কেটে ঘরবাড়ি তৈরি হয়,গাছকেটে ভরাট করে খাল-বিল পুকুর প্রকৃতি মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে এই মিষক্রিয়ার একটি সম্পর্ক আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে নানা রকম পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং মানুষ ও মানুষের বিভিন্ন রকম সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এসব বিষয় ভূগোল ও পরিবেশ এর আলোচ্য বিষয় ।

পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের ভূমিকা-

পরিবেশ সংরক্ষণের ভূমিকা অপরিসীম।কিছু সর্তকতা অবলম্বন করলেই খুব সহজেই আমরা পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি। যেমন –

১/ জাতীয় পরিবেশ নীতি সফল বাস্তবায়ন করতে হবে।

২/ কাঠেরর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার ও বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে।

৩/ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে।

৪/পুকুরের পানিতে ময়লা কাপড় চোপড় কাচা থালা , বাসন মাজা, গোসল করা গোসল করানো প্রভৃতি বন্ধ করতে হবে অকারনে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে।

৫/ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ করতে হবে।

৬/ শিল্পকারখানা গৃহস্থলী ইত্যাদির ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে এবং পরবর্তীতে তা সরকারিভাবে পরিশোধেননগারে ব্যবস্থা করতে হবে।

৭/পরিবেশ দূষণ রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

৮/ প্রাকৃতিক সম্পদ এর ব্যবহার করতে হবে।

উপসংহার-

প্রাণের অস্তিত্ব পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। কারণ পরিপূর্ণ পরিবেশ প্রাণের অস্তিত্বের পক্ষে মানুষ যেমন -তার প্রয়োজন পরিবেশকে নিজের উপযোগী করছে ঠিক তেমনি সভ্যতার ক্রমবিকাশ সাথে সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানুষ এবং পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে প্রাণের অস্তিত্ব প্রশ্নহীন।জনসংখ্যা বৃদ্ধি অসচেতনতা এবং অপরিকল্পিত পরিকল্পনা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরিবেশ রক্ষা, ও সংরক্ষন করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব তাই পরিশেষে বলা যায় “পরিবেশ বাঁচলে বাঁচবে পৃথিবী”।

এখানে একটি নমুনা উত্তর দেওয়া হলো আশা করি উত্তরটি দেখে ধারণা নিয়ে আপনার অ্যাসাইনমেন্ট কে ভালোভাবে লিখতে পারবেন।

সবাইকে ধন্যবাদ।

Related Posts

6 Comments

মন্তব্য করুন