বাংলাদেশের ছোট পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব এবার ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিষেক করতে যাচ্ছেন। তার অভিনীত নতুন সিনেমা ‘চালচিত্র’ আসন্ন বড়দিনে, ২০ ডিসেম্বর, ভারতে মুক্তি পাবে। এই সিনেমার মাধ্যমে শাকিব খান এবং জয়া আহসানের পর ভারতে বাংলাদেশি অভিনয়শিল্পীর আরেকটি উল্লেখযোগ্য পদচিহ্ন রাখতে চলেছেন অপূর্ব।
সম্প্রতি ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনস প্রযোজিত সিনেমাটির লুক পোস্টার প্রকাশ পেয়েছে। এতে অপূর্বকে রহস্যময় এক চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। পোস্টারে তার মুখভর্তি খোঁচা দাড়ি, চোখে ধূসর দৃষ্টি এবং চোখের ওপর থেঁতলানো চিহ্ন তাকে একেবারে ভিন্ন রূপে উপস্থাপন করেছে। পোস্টারের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “তার নাম কেউ জানে না, কিন্তু তাকে ছাড়া খুনি ধরা অসম্ভব।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই লুক পোস্টার দারুণ সাড়া ফেলেছে। দর্শকরা নানান মন্তব্য করে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অক্টোবরে মুক্তি পাওয়া সিনেমার টিজারেও রহস্য এবং থ্রিলারের আভাস পাওয়া গেছে। মাত্র ৪০ সেকেন্ডের টিজারে টান টান উত্তেজনা আর চমকপ্রদ গল্পের আভাস দর্শকদের সিনেমাটির প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। টিজারে টোটা রায়চৌধুরী, রাইমা সেন, ব্রাত্য বসু, এবং অনির্বাণ চক্রবর্তীর মতো তারকাদের সঙ্গে অপূর্বের উপস্থিতি বেশ নজর কেড়েছে।
অপূর্বের দীর্ঘ অভিনয়জীবনে এটাই তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। এর আগে ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’ ছিল তার প্রথম সিনেমা, যা তার জন্য সুখকর অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেনি। এরপর দীর্ঘদিন তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকলেও, ‘চালচিত্র’-এর গল্প এবং চরিত্রের গভীরতায় মুগ্ধ হয়ে অভিনয়ে রাজি হয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে অপূর্ব বলেন, “গল্পটা এত চমৎকার এবং চরিত্রটা এত ইন্টারেস্টিং ছিল যে, লোভ সামলাতে পারিনি। আমি চেষ্টা করেছি আমার অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্মান রক্ষা করতে।”
‘চালচিত্র’ সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে কলকাতার প্রেক্ষাপটে। পূজার আগে শহরে একের পর এক মেয়ে খুন হতে থাকে। এই রহস্যময় খুনের তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। তদন্ত করতে গিয়ে তারা আবিষ্কার করে, খুনের ধরন ১২ বছর আগের একটি মামলার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ঠিক এমন সময় রহস্য সমাধানে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এক রহস্যময় পুরুষ, যাকে অপূর্ব চমৎকারভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন।
সিনেমাটিতে টোটা রায়চৌধুরী, অনির্বাণ চক্রবর্তী, শান্তনু মাহেশ্বরী ও ইন্দ্রজিৎ বসুকে পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকায় দেখা যাবে। রাইমা সেন এবং স্বস্তিকা দত্তও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
বাংলাদেশি দর্শকরা এখন অপূর্বর এই নতুন ধাঁচের কাজ দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। ভারতের সিনেমা জগতে তার এই পদক্ষেপ দেশীয় শিল্পীদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।