বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, বিশেষ করে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনা সভায় নির্বাচনের জন্য দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, “যদি আউয়াল-হুদারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে, তাহলে আমাদের কেন পারবেনা?”
মির্জা ফখরুল আরও দাবি করেন, সার্চ কমিটি গঠন করার আগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি ছিল। তাঁর মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ একটি যুক্তিসঙ্গত প্রত্যাশা, যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। তবে তিনি জানিয়েছেন যে, এই ব্যাপারে বড় ধরনের সমস্যা মনে করছেন না।
এদিকে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই।” তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অনুরোধ জানান যে, জনগণের সম্মান যেন ক্ষুণ্ণ না হয় এবং সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান করেন।
মহাসচিব আরও বলেন, “যৌক্তিক সময়ের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, দেশের জনগণ যাতে নিজেদের ভোট দিতে পারে এবং নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে পারে, সেটাই তাঁদের প্রত্যাশা। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে গিয়ে তিনি বলেন, “১৫-১৬ বছরের মধ্যে গণতন্ত্রকে তিলে তিলে হত্যা করা হয়েছে এবং অর্থনীতিকে মুচড়ানো হয়েছে।” তাঁর দাবি, বর্তমান সরকার প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে, ফলে অর্থনীতি এখন এমন অবস্থায় রয়েছে যে, দেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না।
এছাড়া, সভায় এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমানসহ আরও অনেক নেতারা বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করেন এবং দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, দলটি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে এবং সেই সাথে সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে, যেখানে সকল পক্ষের সমর্থন এবং সংলাপের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।