ঢাকা, শুক্রবার: ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর, দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়েছে। শুক্রবার বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির তৃতীয় কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে দৃঢ় বক্তব্য রাখেন। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সভায় উপস্থিত জনগণের সামনে সাকি শ্রমিকদের অধিকার, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব এবং ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
সাকি জানান, ছাত্র-জনতা-শ্রমিকের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক অন্যায় ঘটেছে। তার অভিযোগ, ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে বিশাল ক্ষতি করেছে। এছাড়াও, তিনি জানান যে, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে থাকা সুযোগ, মর্যাদা ও ইনসাফের প্রতিশ্রুতি এখনও এ দেশের মানুষ পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি।
সভায় সাকি বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান সব ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রিভূত করে রেখেছে, যা দেশকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেতে বাধা দিচ্ছে। তিনি জানান, এই সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা দেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আনার পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এই ব্যবস্থা বাংলাদেশকে এমন এক পরিস্থিতিতে ফেলেছে, যেখানে নাগরিক অধিকার এবং সমাজের সমতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাকি আরও বলেন, বর্তমান সময়ের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তিনি শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য বেতন, অধিকার ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। মালিকদের কাছে শ্রমিকদের বেতন বাকি থাকলে, সরকারকে এগিয়ে আসার এবং দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। শ্রমিকদের আর্থিক সংকট এবং বেতনবকেয়া যেন তাদের জীবনযাত্রায় প্রভাব না ফেলে, সে বিষয়ে তিনি জোর দেন।
জনসাধারণের সামনে দেওয়া এই বক্তব্যে সাকি শ্রমিকদের দৈনন্দিন সংকট থেকে মুক্তি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা দেন। তার মতে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের মর্যাদা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের উচিত সমাজের প্রতিটি স্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।