MRI এর উপযোগীতা ও অসুবিধা।

#MRI  এর উপযোগীতা ও অসুবিধা [Utility And disadvantage of MRI]:

MRI  বা ম্যাগনেটিক  রেজোন্যান্স  ইমেজিং [Magnetic Resonance Imaging] হলো চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ে একটি অত্যধুনিক বিশেষ কার্যকর পরীক্ষা পদ্ধতি । এই পদ্ধতিতে  এম আর আই মেশিনে শক্তিশালী  চৌম্বক ক্ষেত্র ( magnetic field ) ও রেডিও-তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শক্তির প্রভাবে এ মেশিনে  থাকা মানব দেহের অসুস্থ  কোষে  NMR পরমানু সৃষ্টিকারি পরমানুযুক্ত  পানির ঘনোমাত্রার বিভিন্নতার ওপর নির্ভর করে  পরীক্ষাধিন দেহেংশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন তন্ত্র বা (organ)-এর ত্রিমাত্রিক  (3D) ডিজিটাল ছবি  বের হয়ে আসে। এই ত্রিমাত্রিক ছবিকেই MRI বলে।

একটি Neuclear Magnetic Resonance Imaging (MRI) পর্যবেক্ষণ  যন্ত্রে একজন রোগীকে একটি বৃহত ও শক্তিশালী চুম্বক দারা সৃস্ট চুম্বক ক্ষেত্রে রাখা হই, যা শরীরের অভ্যন্তরীণ পরমানু নিউক্লিয়াস  সমুহের চৌম্বক আবেশকে সারিবদ্ধ করে এবং একটি বেতার তরঙ্গীয় চৌম্বক-ক্ষেত্রের সাহায্যে এ চৌম্বক আবেশকে পালাক্রমে আবর্তিত করা হয়। ফলে নিউক্লিয়াস সমূহ একটি আবর্তিত চৌম্বক ক্ষেত্রের তথ্য পর্যবেক্ষণ যন্তের সাহায্যে ধারন করে দেহের পর্যবেক্ষণক্রিত স্থানের চিত্ররূপে প্রকাশ করা হয়।

 MRI
MRI Machine

উপযোগিতাঃ

  • ক্যান্সার আক্রান্ত  শরীর যেকোনো  অঙ্গ যেমন – মূত্রথলি, যকৃত,  বৃক্ক, হৃদপিন্ড, হাড় প্রভৃতি শনাক্ত করতে MRI বিশেষভাবে সাহায্য  করে।
  •   MRI এর সহায়তায় কেন্দ্রীয়  স্নায়ুর সাদা ও ধুসর বস্তুর পার্থক্য শনাক্ত করা যায় বলে স্পাইনাল কডে অনেক রোগ এ পদ্ধতির সাহায্যে নির্নয় করা হয়।
  •  MRI এর সাহায্যে ধমনি ও শিরায় রক্ত প্রবাহের ধরন সম্পর্কে ধারণা  লাভ করা যায়।
  • MRI দেহ ও কোষের কঠিন এবং তরল অংশগুলো সুন্দরভাবে পৃথক করতে পারে।
  • এ পদ্ধতিতে  কোনো ধরনের  তেজস্ক্রিয় রশ্মির ব্যাবহার নেই বলে শরীর এর কোনো কলার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকেনা।
  • দেহের প্রতিচ্ছবি  ধারণ এর জন্য X-Ray অপেক্ষা  MRI অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।
  • MRI  কঠিন, নরম ও তরল অংশ সমুহ ভালোভাবেই শনাক্ত করতে পারে।
  • শরীরের যেকেনো অংশের অসুস্থ  ও আক্রান্ত কলার (tissue) পরিবর্তন এই পদ্ধতিতে  শনাক্ত করা যায়।
  • বিভিন্ন শারীর ভিত্তিক অবস্থায় দেহ কলার পরিবর্তনকে অতিসহজেই এর মাধ্যমে নির্ণয় করা যায়।
  • এই পদ্ধতিতে শরীরের কোনো ক্ষতি হয না।
  • এটি একটি স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি।

তবে  MRI এর বেশ কিছু  অসুবিধাও রয়েছে:

  • রোগীর দেহে পেশ্মেকার সংযুক্ত  থাকলে এ পদ্ধতির সাহায্যে  রোগ  নির্ণয়ের  ক্ষেত্রে  অসুবিধার  সৃষ্টি  হয়।  কারণ  MRI চুম্বক ধর্মের উপর নির্ভরশীল।
  • রোগীর শরীরে হাড় বা অন্য কোনো অঙ্গে  কোনো ধরনের  ধাতব বস্তুর সংযোগ করা হলে  MRI প্রতিচ্ছবিকে প্রভাবিত  করে।
  • এটি একটি  অত্যন্ত  ব্যয়বহুল পদ্ধতি।
  • একজন ব্যক্তি ৩_৪ বার এর বেশি এই পদ্ধতি  অবলম্বন করতে পারবেন না। কারণ এই পদ্ধতি  পুরোটিই Magnetic Resonance এর সাথে সম্পর্কিত হওয়ায় অনেকবার চৌম্বক ক্ষেত্রে আসলে ব্যক্তির হাড় অনেকটা লুজ হয়ে যাবে।  তাই সামান্য আঘাতেই শরীরের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভআবনা বেড়ে যায়।  বলতে পারেন আপনি জীবনে মাত্র এক অথবা দুই বার এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। 

বিঃদ্রঃ মনে রাখবেন মানব দেহের প্রতিচ্ছবি ধারণ এর  জন্য   X-ray অপেক্ষা   MRI অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। কারণ  X-ray ব্যবহার  এর  ফলে শরীরের সজীব কোষ কলার ধংশ হয় এবং ক্যান্সার সৃষ্টির ক্ষেত্রে  সহায়ক ভূমিকা পালন করে  কিন্তু MRI শ্বস্থ্যসম্মত।  

ধন্যবাদ। 

Related Posts

12 Comments

মন্তব্য করুন