আমরা কি সময়ের মর্যাদা ঠিকভাবে দিচ্ছি তো?

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্‌! সকলের সুস্বাস্থ কামনা করছি। আশা করি সবাই ভালো আছেন। শিরোনাম পড়েই বুঝে ফেলেছেন আমি কি বিষয়ে লিখতে চলেছি! হ্যা, ঠিক ভেবেছেন “সময়ের মর্যাদা”। সময় সর্বদা তার নিজ গতিতে চলতে থাকে। কারও কোনো সাধ্যি নেই যে সময়কে পিছিয়ে দিবে বা সময়কে থামাবে। এখন হয়তো অনেকে মনে মনে ভাবছেন ঘড়ির কাটাকে স্লো করে দিলেই সময় পিছিয়ে যাবে। আবার ঘড়ি থেকে ব্যাটারি খুলে ফেললেই সময় থেমে যাবে।

হাঃ হাঃ হাঃ খুবই মজার এক অভিজ্ঞতা। আপনার কাছে হয়তো মনে হবে সময় থেমে গেছে, সময় পিছিয়ে গেছে। কিন্তু কোথায়! দুনিয়ার সময় তো এক গতিতেই চলতেছে। তাকে কে থামাবে! বরং আপনাকে আমাকে সময়ের গতিতে চলতে হবে। যেখানে আধাঘন্টার (ত্রিশ মিনিটের) কাজ আছে, কিন্তু আপনি সেখানে এক ঘন্টা (ষাট মিনিট) ব্যয় করলেন। তাহলে তো আপনি সময় থেকে অনেক পিছিয়ে আছেন। নির্ধারিত সময়ে কাজ কমপ্লিট না করলে সেই কাজের ফল মিষ্টি হয় না, আনন্দদায়ক হয় না।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি এক মাদ্রাসা বা স্কুল কলেজের ছাত্র/ ছাত্রী। বাসা থেকে গন্তব্যে ঠিক সময়ে যেতে দশ মিনিট ব্যয় হয়। কিন্তু আপনি অলসতার দরুন গন্তব্যের ঠিক সময় থেকে দশ মিনিট পরে গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। তাহলে আপনি দশ মিনিট সময় থেকে পিছিয়ে আছেন। আপনার মধ্যে সময়ানুবর্তিতা নেই।

আরো ভালোভাবে বুঝালে, যেখানে আপনার ক্লাস সকাল আটটায় শুরু হয়, এবং বাসা থেকে সাতটা পঞ্চাশে বের হয়ে ক্লাসে উপস্থিত হওয়া যায়; সেখানে আপনি বাসা থেকে ঠিক সময়ে তো বের হয়েছেন কিন্তু ক্লাসে উপস্থিত হয়েছেন আটটা দশে। তারমানে আপনি দশ মিনিট রাস্তায় সময়ের অপব্যয় করেছেন। এভাবে সময়ের অপব্যয় করলে জীবনে উন্নতি করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। আমরা চাইলে দৈনন্দিন রুটিন তৈরী করতে পারি। এটা কখন কি কাজ করতে হবে সেটা বলে দেয়, এবং কাজের সুবিধাও হয়।

আমাদের সকলের উচিৎ ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করা। এতে কাজের মান ঠিক থাকে এবং এর ফলাফল খুব মিষ্টি ও আনন্দদায়ক হয়। আমরা ঠিক ঠিক সময়ে তো কাজ করবই, এছাড়াও সময়ের আগেও কাজ করার চেষ্টা করব। সময়ের আগে কাজ করাটা জিনিয়াসের লক্ষন এবং নতুন কিছু করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনার ক্লাস সকাল আটটায়; কিন্তু আপনি উপস্থিত হয়েছেন সাতটা পঞ্চাশে। আপনার কাছে এখনও দশ মিনিট সময় বাকি আছে। এখন আপনার উচিৎ হবে, পিছনের পড়াগুলো দশ মিনিটের মধ্যে আবার রিভিশন দেয়া। এতে পড়াগুলো মুখস্ত থাকে এবং ব্রেইনে ভালোভাবে গেঁথে থাকে। যারা অফিসে জব করে থাকেন, তারাও এই ট্রিকসটি ফলো করতে পারেন।

আরেকটি কথা মনে পড়লো তা হলো, মানুষ কাজের ব্যস্ততায় খোদ সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে যায়। আমি যখন ফজর নামায পড়তে মসজিদে যাই, তখন রাস্তায় মানুষের প্রতিযোগিতা।

<

কে আগে গার্মেন্টসে যেতে পারে, কে আগে নিজের কাজ করতে পারে! কাজ করুক ভালো কথা, কিন্তু এজন্য তো সৃষ্টিকর্তাকে ভুলা যাওয়া চলে না! এই দুনিয়াই আমাদের সব নয়, আখেরাত নামে একটা জীবন আছে। তার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। সেদিন সকলের জবাবদিহি এক এক করে দিতে হবে খোদ সৃষ্টিকর্তার কাছে।

Related Posts

7 Comments

মন্তব্য করুন