আজকে যেই আর্টিকেলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব সেটি সকলেরই পরিচিত ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে।
ন্যানো বলতেই আমাদের মনের চক্ষে অনেক ক্ষুদ্র বস্তুর চিত্র ভেসে উঠে।অর্থাৎ যেটি খুবই ক্ষুদ্র, যেমন১ ন্যানোমিটার =10^-9 মিটার। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেেন যে কতটুকু ক্ষুদ্র। আর ন্যানো প্রযুক্তিও তো ক্ষুদ্র হবেই ,এতই ক্ষুদ্র যে এটি আর আর ক্ষুদ্র করা সম্ভব নয়।
সুতরাং ন্যানো প্রযুক্তি হলো পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব ও বস্তুকে সুণিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞান।ন্যানোটেকলজির একটি পারফেক্ট উদাহরণ হচ্ছে,রোবট।।
ন্যানোসায়েন্স বলে বিজ্ঞানের আলাদা একটি শাখা রয়েছে যে শাখার কাজই হলো অণু-পরমাণু দেখা এবং নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য। ১৯৫৯ সালের ২৯ জানুয়ারি রিচার্ড ফাইনম্যান ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির এক সভায় There’s plenty of Room at the Bottomশীর্ষক এক বক্তৃতা দেন। এই বক্তৃতাটিই সর্বপ্রথম ন্যানোপ্রযুক্তির ধারণা দেয়। ১৯৮৯ সনের নভেম্বরের ৯ তারিখ ন্যানোটেকনলজির জন্য একটা অন্যতম স্মরণীয় দিন.। আবার
ন্যানোপ্রযুক্তির বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে IBM কোম্পানি । তারা ১৯৮০ সালে একটি মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার করেন(যেটির নাম দেয়া হয় STM) , এই মাক্রোস্কোপ দিয়ে অত্যন্ত ক্ষুদ্র অণু-পরমাণুর গঠন দেখা সম্ভব হতো। সুতরাং বলাই বাহুল্য যে তাদের এই মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার ই ন্যানোপ্রযুক্তির বিকাশ ঘটিয়েছে।তাদের মাইক্রোস্কোপে অত্যন্ত ক্ষুদ্র বস্তুও বিশাল বড় দেখাত।
ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক।আধুনিক যুগে ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন চিকিৎসা ক্ষেত্রে,মহাকাশ অভিযানে,কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরিতে আরও ইত্যাদিতে।।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে ন্যানো প্রযুক্তির ভূমিকা যথেষ্ট । ক্যানসার রোগ নির্ণয় ও নিরাময় করা সম্ভব ও সহজ হচ্ছে ন্যানোপ্রযুক্তি,ন্যানোসেন্সর দ্বারা। আগে ক্যান্সার হলে থেরাপি দেয়ার ফলে ক্যান্সার দ্বারা আক্রান্ত কোষের নষ্ট হওয়ার সাথে অন্য কোষের ও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকত।ফলে কিছু শারিরীক ক্ষতিসাধণ হতো কিন্তু এখন ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করে অতি সূক্ষ ভাবে কেবল ক্যান্সার অাক্রান্ত কোষকেই ধংস করা সম্ভব হচ্ছে এবং এতে অন্য কোষ ও আক্রান্ত হচ্ছে না,ফলে রোগী নিরাপদ থাকে।মহাকাশ যান ভারী হলে অনেক জ্বালানি প্রয়োজন হয় কিন্তু ন্যানোটেকলজি ব্যবহার করে মহাকাশযানগুলোের ওজন কমানো হয় ফলে জ্বালানির অপচয় হয় না।ন্যানোটেকনোলজির আশীর্বাদে এখন কৃত্রিস অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। আর মজার ব্যাপার হলো সেই কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর অনুভুতি ক্ষমতাও বিদ্যমান। ন্যানো প্রযুক্তির কল্যাণে পানিও বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে।কম্পিউটারের যন্ত্র পাতি তৈরিতো ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার ব্যপক।প্রসেসরে অতিক্ষুদ্র সার্কিট তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে এই ন্যানোটেকনোলজি। ন্যানোটেকনলজির ভিত্তিতে অনেক অনেক নতুন নতুন টেকনলজির উদ্ভব হচ্ছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি এটি সূচনা করছে এবং সেই সাথে ব্যবসায়িক সুযোগেরও দ্বার উন্মোচন করছে।
তবে ন্যানোটেকনোলজি মানুষের ক্ষতির কারণও হতে পারে।ন্যানোটেকনোলজি অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। আবার এই ন্যানো প্রযুক্তির ফলে পরিবেশ দূষণ ও হতে পারে।এই প্রযুক্তির ভুল দিকটাও কিন্তু মারাত্নক।
যাইহোক ন্যানোপ্রযুক্তি আধুনিক বিজ্ঞানকে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে দিচ্ছে। এই ন্যানোটেকনোলজির নিরাপদ ব্যবহার মানব প্রজাতির কল্যাণের কারণ হতে পারে।
আশা করি ন্যানোপ্রযুক্তি সম্পর্কে আপনারা কিছু ধারণা পেয়েছেন।সময় নিয়ে পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।আশা করি সামনে টেকনোলজি রিলেটেড আরও ইন্টারেস্টিং বিষয় পোস্ট করব।