আজকে ভিন্ন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।একটি সাইকোলজিক্যাল রোগ নিয়ে যেটির নাম হচ্ছে Personal Disorder. খুবই ইন্টারেস্টিং একটা লেখা হতে চলেছে।তো চলুন শুরু করা যাক।
ব্যক্তিত্ব কী?আসলে ব্যক্তিত্ব বলতে আমরা বুঝি চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের উপায় যা একজন ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তির থেকে আলাদা করে তোলে। কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বা Personality অভিজ্ঞতা, পরিবেশ (পারিপার্শ্বিকতা, জীবনের পরিস্থিতি) এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সাধারণত সময়ের সাথে একই থাকে। ব্যক্তিত্বের ব্যাধি বা Personal Disorder হল চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের এমন একটি ধাপ যা সংস্কৃতির প্রত্যাশা থেকে দূরে সরে যায়, সমস্যা সৃষ্টি করে এবং সময়ের সাথে সাথে স্থায়ী হয়। নির্দিষ্ট ধরণের কিছু Personal disorder বা ব্যক্তিগত ব্যাধি রয়েছে। ব্যক্তিত্বের ব্যাধিগুলি আচরণ এবং অভ্যন্তরীণ অভিজ্ঞতার দীর্ঘমেয়াদী নিদর্শন যা কৈশোরে বা শৈশবকালের প্রথম দিকে শুরু হয় এবং ক্রিয়াকলাপে সমস্যা বা সমস্যা সৃষ্টি করে। চিকিৎসা ব্যতীত, ব্যক্তিত্বের ব্যাধি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। Personal disorder বা ব্যক্তিত্বব্যাধি র কিছু ধরণ রয়েছে যেমনঃ
Antisocial personal disorder বা অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি: অন্যের অধিকারকে অবজ্ঞা করা বা লঙ্ঘনের একটি প্যাটার্ন। অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধিগ্রস্থ ব্যক্তি সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলতে পারে না, বারবার মিথ্যা বলা বা অন্যকে প্রতারণা এদের অভ্যাম ।অর্থাৎ এরা সমাজের নীতির বিরুদ্ধে থাকতে চায়।
Avoidant Personal Disorder বা পরিহারকারী ব্যক্তিত্বের ব্যাধি: চরম লাজুকতার একটি নমুনা, অপ্রাপ্তির অনুভূতি এবং সমালোচনার প্রতি চরম সংবেদনশীলতা। পরিহারকারী পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারযুক্ত লোকেরা অন্যদের সাথে সহজে মিশতে চান না।অন্যদের পরিহার করতে ভালোবাসেন।
Borderline personality বা বর্ডারলাইন ব্যক্তিত্বের ব্যাধি :এটি ব্যক্তিগত সম্পর্কের অস্থিরতার এক প্যাটার্ন, তীব্র আবেগ, এবং দুর্বলতা।এই ব্যক্তিত্বের ব্যাধিযুক্ত ব্যক্তি পরিত্যক্ত হওয়া, বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা, অনুপযুক্ত রাগ বা শূন্যতার বোধ করা এড়াতে তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে থাকেন।
নির্ভরশীল ব্যক্তিত্বের ব্যাধি: নির্ভরশীল ব্যক্তিত্ব ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্যকে নির্ভর না করে প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত নিতে তাদের অসুবিধা হতে পারে। নিজের যত্ন নিতে অক্ষম হওয়ার ভয়ে তারা যখন একা থাকে তখন অস্বস্তি বা শক্তিহীন বোধ করে।
নারকিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার : অন্যের প্রতি সহানুভূতির অভাব। নারকিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির আত্ম-গুরুত্ব, অধিকারের বোধ,সহানুভূতির অভাব থাকতে পারে।
পারক্সিজমাল পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারঃ এই ব্যক্তিত্বের ব্যাধিজনিত লোকেরা প্রায়শই ধরে নেয় যে লোকেরা তাদের ক্ষতি করবে বা তাদের সাথে প্রতারণা করবে এবং ফলে এরা অন্যদের বিশ্বাস করবে না এবং অন্যের নিকটে আসবে না।
স্কিজয়েড পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারঃ স্কিজয়েড পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারযুক্ত ব্যক্তি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক খোঁজেন না, একা থাকতে পছন্দ করেন।কারো সাথে মিশতে চান না এরা।
এতক্ষণ আমরা যা জানলাম তা সবই Personal Disorder বা ব্যক্তিত্বজনিত রোগ।এগুলো কী নিরাময় সম্ভব?
হ্যা সম্ভব।কিছু ধরণের সাইকোথেরাপি ব্যক্তিত্বজনিত অসুবিধাগুলি নিরাময়ে কার্যকর। সাইকোথেরাপি একজন ব্যক্তিকে অন্যের উপর তার আচরণের প্রভাবগুলি বুঝতে সাহায্য করে, সাথে কীভাবে আচরণ করতে হয়, কীভাবে সমাজে বাস করতে এই বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করে। তবে চিকিৎসার ধরণটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিত্বের ব্যাধি, তার তীব্রতা এবং স্বতন্ত্র অবস্থার উপর নির্ভর করবে।।
আজ এ পর্যন্তই । সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন,ধন্যবাদ সবাইকে।