প্রিয় পাঠক-পাঠিকা, খারাপ সময় মানুষের মধ্যে ধৈর্য্য, আস্থা, বিশ্বাস কমে আসে আর এসবের প্রভাব সরাসরি তার জীবনের উপর পরে । খারাপ সময়, দূর সময় মানুষ কোন কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে পারে আর এরকম সময় তার কি করা উচিৎ এসব বুঝার জন্য চলুন একটা গল্প শুনি ঃ-
অনেকদিন আগে একজন ধনী ব্যবসায়ি সমুদ্রে ঘুরতে যাওয়ার জন্য একটি ছোট নৌকা বানিয়েছিলেন । একদিন সকালবেলে ঐ নৌকা নিয়ে তিনি একা সমদ্র ভ্রমনে বেরিয়ে পরেন । যখন তিনি সমদ্রের ভিতর বেসকিছুটা এগিয়ে যান তখন ঝড় শুরু হয় । ঐ প্রবল ঝড়ে তার নৌকার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়, অবস্থা খারাপ দেখে তিনি নৌকা থেকে লাফ দেন । কিছুটা দূরে তিনি একটা দ্বীপ দেখতে পান তিনি সাঁতার কাটতে কাটতে ঐ দ্বীপে পৌছান । ঐ দ্বীপে পৌছে তিনি ভাবতে লাগলেন যাক এবারের মত জীবনটা বেছে গেল । কিন্তু দুঃখের বিষয় হল সমগ্র দ্বীপ ঘুড়ে তিনি কোন মানুষ দেখতে পেলেন না । তিনি বুঝতে পারলেন এটা একটা জনমানব শূন্য দ্বীপ । দ্বীপের চারদিকে সমুদ্র হওয়ার কারনে বহুদূর পর্যন্ত তিনি কোনো মানুষ দেখতে পেলেন না । তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না এ অবস্থায় তার কি করণীয় । হঠাৎ তার মনে হল যেহেতু সৃষ্টিকর্তা তাকে বাচিয়েছেন তার সামনে কি করণীয় সেই পথটাও তিনিই দেখাবেন । এর পর তিনি খিদে মিটানোর উপায় খুজতে লাগলেন । তিনি দ্বীপ ঘুরে গাছের ফল খেয়ে খিদে মেটাতে লাগলেন । যত দিন কাটতে লাগলো তার আশাও কমতে থাকলো, বিশ্বাসও কমতে থাকলো । তিনি বসে বসে ভাবতে লাগলেন, আমি তো কারও সাথে খারাপ করিনি তাহলে আমার সাথে এমন হচ্ছে কেন । ধীরে ধীরে সৃষ্টিকর্তার উপর তার ভরসা কমতে থাকলো । একদিন তিনি চিন্তা করলেন আমাকে হয়ত এখানেই সারাটা জীবন কাটাতে হবে, তার আমাকে একটা ঝুপরি বানাতে হবে । তাপর তিনি গাছের ডাল-পালা দিয়ে একটা ঝুপড়ি বানিয়ে ফেললেন । ঝুপরি বানানোর পর তিনি ভাবতে লাগলেন আজ থেকে আমাকে আর গাছের নীচে ঘুমাতে হবে না, আজ থেকে আমি ঝুপরিতে ঘুমাবো । কয়েক ঘন্টা পর রাত হতে লাগলো ধীরে ধীরে আবহাওয়া খারাপ হতে লাগলো । প্রচন্ড শব্দ করে মেঘ ডাকছিলো হঠাৎ-ই তার ঝুপরির উপর বজ্রপাত হল । নিমিষেই তার ঝুপরিতে আগুন লেগেগেল দাউ দাউ করে তার ঝুপরিতে আগুন জ্বলতে শুরু করলো, এই ঘটনা দেখে ঐ ব্যাক্তি পুরোপুরি ভেঙ্গে পরলেন তার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এলো, তিনি আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বললেন’ ‘হে সৃষ্টিকর্তা” আমি কি এমন পাপ করেছি জার জন্য আমাকে এমন সাজা দেয়া হচ্ছে । তিনি কাঁদতে কাঁদতে সৃষ্টি কর্তাকে এসব কথা বলছিলেন, হঠাৎই একটি নৌকা ঐ দ্বীপে এসে থামলো । নৌকা থেকে কিছু মানুষ নেমে এসে বলেলেন, আমরা তুমাকে বাচাতে এসেছি আমরা এ দ্বীপের পাশদিয়েই যাচ্ছিলাম তখনি একটি ঝুপরিতে আগুন দেখতে পাই আমরা ভাবলাম কেও হয়ত বিপদে পরেছে । তুমি তুমার ঝপরিতে আগুন দিয়ে খুব ভালো কাজ করেছ, যদি তুমি তুমার ঝুপরিতে আগুন না জ্বালাতে তাহলে আমরা বুঝতে পারতামনা যে কেও এই দ্বীপে আটকে আছে । এই কথা শুনে ওই ব্যাক্তির চোখ দিয়ে জন পরতে লাগলো তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাইলেন এবং বললেন আমি জানতামনা যে আমাকে বাচানোর জন্য তুমিই আমার ঝুপড়িতে আগুন লাগিয়েছিলে । আজ আমার বিশ্বাস আরও দৃঢ় হলো যে তুমি তুমার বান্দাদের সর্বদা খেয়াল রাখ, তুমি আমার ধৈর্য্যের পরিক্ষা নিয়েছ কিন্তু আমি তাতে সফল হতে পারিনি ।
প্রিয়, পাঠক- পাঠিকা এই কাহিনী থেকে আমরা ধারনা করতে পারি পৃথিবীর কোন না কোন মানুষ, কখনো না কখনো সমস্যার মধ্যে পরবেই নানা বাধা বিপত্তি আসবেই, তবে ঐ সমস্যার সময় নিজের উপর বিশ্বাস, আস্থা, ধৈর্য হারিয়ে ফেললে আরও সমস্যায় পরে যেতে পারেন, সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে । তাই বিপদের সময় নিজের উপর ভরসা রাখুন আস্থা রাখুন । সৃষ্টিকর্তা আপনার জন্য ভালো কিছু চিন্তা করে রেখেছেন । চার্লিচ্যাপলির বিখ্যাত একটি উক্তি দিয়ে লিখাটি শেষ করবো ঃ- “Nothing Is permanent in this world, not even our troubles.—অর্থাৎ এই পৃথিবীতে কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়, এমন কি আমাদের দুঃখ কষ্টও /
প্রিয়, পাঠক – পাঠিকা আশা করছি আপনারা আমার কথা বুঝতে পেরেছেন এবং ভিডিওটি আপনার উপকারে আসবে , সত্যি যদি এতটুকি উপকৃত হন তাহলে শেয়ার করে আপনার পরিচিত জনদেরকেও জানিয়ে দিন কে জানে আপনার মাধ্যমে সেও উপকৃত হতে পারে । ধন্যবাদ ।