হঠাৎ করে নিজের মাঝে তরুণ যুবক হয়ে উঠার অস্তিত্বটা টের পেলেই কেমন যেন আনমনা হয়ে
যায় অরুণ । ঢাকায় আসার পর কখনোই নিজেকে সম্পূর্ণ যুবক হিসেবে যাহির করতে পারেনি
কখনোই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় থাকার মত জায়গাখানিও ছিল তার কাছে এক
দুঃস্বপ্নের মত। দ্বিতীয়বারও কোথাও কূল না পাওয়ার পর ভর্তি হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত
ঢাকা কলেজে রসায়নে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের সবাই পরাজিত হার মানা
সৈনিকদের মতই দেখে। তাদের মধ্যে তাই সহজে কোন প্রাণের সঞ্চারন ঘটে না। হেরে যাওয়াদের
মধ্যেও এরা নিকৃষ্ট। আর সেখান থেকে ভালবাসার স্বপ্ন দেখাটা এক অসম্ভব সত্যের বিলাসীতা।
মাত্রই ভর্তি হওয়া ঢাকা বিস্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ছাত্রী দীপান্বিতা ।ইংরেজি পড়াশোনার
বিষয় হলেও বাংলা সাহিত্যেই তার বিচরণ। সময় গুলো তার ভালই কেটে যায় ভাই বাবা মা আর
ভাই দীপক এর সাথে । বিশেষ ধরনের কোন স্বপ্ন নেই দীপান্বিতার, যেভাবে চলছে চলতে থাকুক
কোথাও থেমে গেলে তখন দেখা যাবে। দীপান্বিতা তাই যেমন অসুখি নয় তেমনি সন্তুষ্টও নয়।
অরুণ প্রথম দীপান্বিতাকে দেখে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সরস্বতী পূজোয়। দিপান্বীতা সেদিন লাল পাড়ের
সাদা শাড়ি পরেছিল। পায়ে আলতা কপালে লাল টিপ আর হাতে কাচের চুড়ি। সমস্তটা দেখে
অরূণের ভিতরে নিভু নিভু জ্বলা যৌবনের শেষ ধুয়ায় যেন আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে গেল। আর
সিঁথিতে সিঁদূর না থাকায় আগুনটা দ্রুতই মন থেকে শরীরে ছড়িয়ে পরল। যে আগুনে তখন থেকেই
জ্বলতে শুরু করল। যেন কোন এক ঝড়ে তার ডানা হারানোর শোকের মাঝে কেউ পরম যত্নে
উষ্ণতার ডোরে টেনে নিল। আর কিছুক্ষন পরেই উড়ে যাবে। সেদিন সরস্বতী পূজোয় বিদ্যা জ্ঞান
চাইতে আসা অরুণ বিদ্যাদেবীর কাছ অন্য কিছুই চেয়ে বসল। যে চাওয়ার সাথে তার হৃদয়ের
কম্পন ক্রমেই দ্রুত হতে থাকল। অরুণ দীপান্বিতাকেই একটানা দেখে যাচ্ছিল। অরূনের চোখে
দীপান্বিতার চোখ পরতেই অরুণ চমকে উঠল। অরুণ ইতস্তত বোধ করছিল। দীপান্বিতা ভাবলেশ
হীন। দ্বিতীয়বারের মত চোখে চোখ পরতেই দীপান্বিতা চোখের ইশারায় অরুণকে কিছু জিগ্যেস
করল। অরুণ অপ্রস্তুত হয়ে গিয়ে এক অন্যরকম লজ্জায় ডুবেছিল। আর দীপান্বিতা খুব স্বাভাবিক
ভাবেই হেসে অরুণের দিকে তাকিয়েছিল। অরুণ যেন কিছুক্ষনের জন্য এ জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।
সতবিৎ ফিরে পেতেই দীপান্বীতা উধাও।
কিছুদিন পর অরুণ দীপান্বিতাকে আবিষ্কার করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে। ভুলে যাওয়া
আবগেটা যেন অরুণকে আবার জাগিয়ে দিল। তবে অরুণ এবার আর হারাতে চাইল না। কিন্তু
তার সাহস তার আবেগের কাছে বরাবরই নড়বরে। সেদিন শুধু অরুণ ই দেখেছিল দীপান্বিতাকে।
আর দীপান্বিতা? হয়ত ভুলেই গিয়েছিল। সেই তীর্থের কাকের মত তাকিয়ে থাকা অরুণকে।
অরুণ ভুলতে পারেনা। ভুলাতেও পারছে না। কিংবা এখন আর চাইছেও না । অরুণ যেন
অন্যরকম অরুণ হয়ে উঠল। স্বপ্নের দেখা পেয়েও যেন স্বপ্নটা ঠিক করে উঠতে পারছে না। প্রথম
শুনা হৃদকম্পন কে তাই অরুন হারাতে দিল না। শীতের ধোয়াটে কুয়াশার মত যেন অরুনের মনে
ফোটা ফোটা শিশির জমতে শুরু করছে।
এক পড়ন্ত বিকেলে অরুণ দীপান্বিতাকে খুজে পায় ব্যাস্ত রাস্তার শহরে। এবার দীপান্বিতা যখন
আড়চোখে তাকিয়েছিল অরুণের দিকে অরুণের যেন বসন্ত নেমেছিল বুকে। দীপান্বিতা চিনতে
পেরেছিল। তবে অরুণের সাহস তার চেহারার মতই ফ্যাকাসে হয়ে গেল। দীপান্বিতা হেটে যাচ্ছিল
অরুণ এবার তার অনাগত বসন্তের পিছু পিছু। এই পিছু হাটাটা দীপান্বিতাও কেন যেন উপভোগ
করছিল। আজ অরুণ দিপান্বীতার বাসাটা চিনে রাখল। আর প্রথম দেখার মত আজও অরুণ
চোখে মুখে অবাক আর বিস্ময় নিয়েই শেষটার ইতি টানল। শেষ যতক্ষন দেখা যায় ততক্ষন ই
তাকিয়েছিল দীপান্বিতার দিকে। মনে মনে আপস করে তার ভিরুতের উপর আজও নামটা জানা
হয়নি যে মানুষটার।
টানা কয়েকদিন ভোর সকালে দীপান্বিতার বাসার সামনে দাঁড়ানো ছাড়া কোন উপায়ই যেন পাচ্ছিল
না। ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বের হওয়া দীপান্বিতা বাইরে দাঁড়ানো অরুণকে এতদিন এভাবে দেখে যেন
অবাকই হয়। তবে একদিন রাগ আর অভিমানে ফোসে উঠল । এবার দীপান্বিতা সরাসরী
গিয়েই অরুণের সাথে কথা বলল।
আপনি কি কিছু চান আমার কাছে?
অরুন যেন প্রথম শোনা দীপান্বিতার কন্ঠস্বরে মুগ্ধ হয়েই রইল। তাই কিছু বলতে পারছিল না।
আপনি কিছু বলছেন না কেন?
কথা শুনছিল কিন্তু অরুণ কিছুই বুঝেছিল বলে মনে হয়নি । আপনার নামটা জানতে পারি?
অদ্ভুত তো আপনি আমার নাম কেন জানতে চাইবেন?
নাহ নামটা খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছিল।
অরুণ এতটা অসহায় যেন কখনোই হয়নি। আর দীপান্বিতা বুঝতে পারলেও খুব যে খারাপ লাগছিল
অরুণকে তেমনও না। দেখতে হুজুগে হলেও হালকা লম্বা চুল, শ্যামলা রঙে চেহারার ছাপটাতে একটা
মায়া হয়ত আছে তাই দীপান্বিতাও খুব একটা এড়িয়ে যেতে পারছিল না অরুণকে। বরং হয়ত
কোথাও একটু ভালই লাগছিল অরুণকে আর অরুণের এসব অযাচিত পাগলামী কোথায় যেন আটকে
গিয়েছে ছাড়াতেও চাইছে না থমকে দাড়াতেও পারছে তাও হয়ত এই অরুণের জন্যই।
নাম কেন জানবেন সেটা যদি বলেন তবেই না বলব।
কোন কারণ ছাড়াই নামটা জানতে ইচ্ছে হচ্ছিল।
শুধু নাম জানতে ইচ্ছে হচ্ছে বলেই কি রোজ দাড়িয়ে থাকেন? আর যদি জানতে ইচ্ছে হয় ই তবে
নিজে কেন জিগ্যেস করতে পারেননি। অরুণ একটু চিন্তায় পরে গেল কোথাও যেন অরুণের চিন্তাটা
এবার থমকে গেল।
হ্যা তাই তো, এখন জিগ্যেষ করছি আপনার নামটা ? একটু নাম বললে কি হয়?
কি হয় মানে? নাম একটু বলা যাবে নাকি? নাম বললে তো সম্পূর্ণটাই বলতে হবে।
ওইত সম্পূর্ণ নামটা একটু সময়ের জন্যই বলতেন যদি?
বাহ! আমি তো ভেবেছিলাম আপনি কথাই বলতে জানেননা!
আসলে আপনি যা ভেবেছেন তাই আমি কথা বলতে জানিনা।
অদ্ভুত তো আবার আমার কথাই আমাকে শুনাচ্ছেন?
এবার দুইজনেই হেসে উঠল। তবে দীপান্বিতা মুহুর্তেই নিজেকে সামলে নিল। দীপান্বিতা হাটা শুরু
করল অরুণ ও পিছু পিছু হাটতে শুরু করল।
আচ্ছা আপনি প্রথম আমাকে সরস্বতী পুজোয় দেখেছিলেন না? অরুণ যেন এবার অবাক হল।
অরুণকে আরো অবাক করে দিয়ে দীপান্বিতা আরো বলে উঠল আপনি আমাকে একদিন টিএসসিতেও
দূর থেকে দেখেছিলেন। এবার অরুণ লজ্জাই পেল। তাই চুপ করে থাকল। দীপান্বিতাই নিরবতা
ভাঙল । আচ্ছা আপনার নামটা বলুন তো ?
অরুণ চক্রবর্তি। বাহ ভাল নাম। তবে আমার নামটা বলব না আপনাকে? এই কথা বলেই
দীপান্বিতা এক রহস্যময় হাসি দিল। যে হাসিতে দীপান্বিতার রহস্যজালে আরো শক্তভাবে আটকে গেল
অরুণ। সেদিন দীপান্বিতার সাথে প্রথম হেটেছিল অরুণ।
একদিন অরুন দাঁড়িয়েছিল দীপান্বিতার বাসার পাশে দীপান্বিতা দেখেও না দেখার ভান করে হেটে
যাচ্ছিল অরুণ লক্ষ্য করে নি প্রথমে তাই যখন বুঝল তখন দৌড়ে এসে পথ আটকাল দীপান্বিতার।
আজ অরুণ নামটা জানবেই। অরুণের তরুন প্রেমে পরা হৃদয় সাগরের বিশাল ঢেঊ আছড়ে পরল
দীপান্বিতার উপর। আজ আর না বলে থাকতে পারেনি দীপান্বিতা। নাম বলার পর থেকে
দীপান্বিতা যেন অরুনের আরো কাছাকাছি আসতে চাচ্ছিল। এবার দীপান্বিতা অরুণকে পছন্দ করতে
শুরু করল। বাসা থেকে দীপান্বিতা অরুণকে সাথে নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যেত। অরুণকে একটা
অভ্যেসে পরিণত করেছিল দীপান্বিতা। যে অভ্যাসের গোল চক্রে ভালবাসা নামক আবেগে জড়িয়ে
পরছিল দীপান্বিতা । আর অরুণ ? অরুণ তো সেই কবেই দীপান্বিতার মাঝে নিজেকে হারিয়ে বসে
আছে।
কিন্তু অরুণ কখনোই দীপান্বিতাকে বলবে না যে সে ভালবাসে তাকে। সেটা দীপান্বিতা যেন খুব
ভাল করেই বুঝেছিল। এতদিনে যতটা কাছে তাঁরা এসেছিল তার চেয়ে বেশী যেন নিজেদের কে
নতুন করে জেনেছিল। তাই দীপান্বিতা এবার আর কিছু না ভেবে এই অরুনের হৃদ কম্পণকে শান্ত
করতে চাইল। দীপান্বিতা সেদিন সেদিনের সেই লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরেছিল, হাতে কাচের চুড়ি
পায়ে আলতা আর কপালে লাল টিপ পরে , ব্যাগে তিনটা লাল গোলাপ নিয়ে গিয়েছিল অরুণের
সাথে দেখা করতে । অরুণের আসার কথা থাকলেও সেদিন অরুন আসে নি । কোন খোঁজ
পাওয়া যায়নি অরুণের । সেদিন পুরো শহরটাকে মিথ্যে মনে হয়েছিল দীপান্বিতার । অজস্র সপ্নে
যে নতুন করে সাজিয়েছিল নিজের পৃথিবীটাকে তার নিজের হাতে যত্ন করে গাথা সেই স্বপ্নটা যেনো
তাকেই ধোকা দিল । আর সবার মত যেন তার ভালবাসার গল্পটাও সাধারণ একটা গল্পের মতই
হয়ে গেল শেষটায় । এর এক সপ্তাহ পর অরুণ ফিরল শহরে । অরুণের মা সেদিন পৃথিবী থেকে
বিদায় নিয়েছিল । অরুণের জীবনে কেবল অরুণের মা ই ছিল। সব সপ্নের মিথ্যে সেদিন অরুণের
ও হয়েছিল। পরের দিন অরুণ দীপান্বিতা খোঁজ করতে গিয়ে আশাহত হয়েই ফিরল। দীপান্বিতারা
বাসা বদলেছে। পরিচিত শহরটা যেন মুহূর্তেই অচেনা হয়ে উঠল অরুণের । খুব সহজেই যেন
শহরটা এভাবে বসবাস অযোগ্য হবে বুঝতেই পারেনি। যেই পথে অরুণ হেটে যেত রোজ দীপান্বিতার
সাথে সে পথে আজও হেটে যায় তবে একা। প্রতিটা পদ চিহ্ন যেন লেগে আছে অরুণের চোখে।
শহরের রাতের বাতি যখন সব নিভে যায়, তখন অরুনের নিখোঁজ হওয়া ভালবাসা কিছু অশ্রু খুজে
পায় এই নিস্থব্ধ শহরে।
প্রতি রাত যেন এক উৎসবে মাতে দীপান্বিতার সাথে জড়ানো স্মৃতিগুলো। এর মধ্যে অরুণ একজন
গ্রাজুয়েট। একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কেমিস্ট হিসেবে চাকরীটাও পেয়ে যায়। তবে আজও
দীপান্বিতাকে খুঁজে বেড়ায় এর ব্যাস্ত ইট কাঠ পাথরের শহরের মানুষগুলেওর ভিড়ে।
দীপান্বিতা বিয়েটা এখনো করেনি তবে বিয়ে করার ইচ্ছে না থাকলেও এখন আর নিজেকে একা
রাখতেও পারছে না। সেদিন থেকে দীপান্বিতাও কত খুজেছে তবে নিয়তি যেন তাকে নিয়ে খেলাই
করে যাচ্ছে কেবল।
একদিন ভোর সকালে যখন অরুণ অফিসে যাচ্ছিল, সোনালী রোদের ঝলাকনিতে দূর থেকে দেখল
দীপান্বিতা বসেছিল পার্কের বেঞ্চিতে। অরুণের অভিমান হলেও সামনে গেল। এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল
দীপান্বিতার দিকে। দীপান্বিতা চমকে গেলেও চুপ করেই তাকিয়েছিল । এভাবে দুইজন কতক্ষণ
তাকিয়ে থেকেছিল তাদের মনে নেই। জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হচ্ছিল খুব কিন্তু অভিমান রাগ কোনটাই
তাতে সায় দিল না। অরুণ বসল দীপান্বিতার পাশেই। দীপান্বিতা সরে বসল। কেউ কোন কথা
বলেনি। তবে অনেক কথাই হয়েছিল সেদিন। শেষে সেই পুরনোদিনের মতই দীপান্বিতাকে বাসা পর্যন্ত
পৌছে দিয়েছিল অরুণ। সেদিন ফিরে অরুণ নিজেকে সেই পুরনো অরুনের মতই আবিষ্কার
করেছিল। অরুণ পরের দিন অফিস থেকে দুইদিনের ছুটি নিয়ে সোজা দীপান্বিতার বাসায় গিয়ে
হাজির। দীপান্বিতা অপ্রস্তুত হলেও খুশি হয়েছিল খুব। দীপান্বিতার বাবা মৃত্যুঞ্জয় ঠাকুর অরুণকে
পছন্দ করতে পারেনি। অরুণ ছিল তাদের চেয়ে নিচের কূল এর বংশের ছেলে।
দীপান্বিতার আকাশে এখন ঘন মেঘ। এতদিন পর ফিরে পাওয়া ভালবাসার শুকনো পাপড়িগুলোকেও
নিজের দাবী করতে পারছেনা । দীপান্বিতা বিয়ে করবে না বলেই বাসায় জানিয়ে দেয়। আর অরুণ
কিছু বুঝে পাচ্ছিল না কি করবে। অরুণ আর দীপান্বিতা দুইজনই এক এমন অনিশ্চয়তার মুখোমুখি
যে তাদের ভয় হচ্ছে না তবে সুখের রেখায় নিজেদেরকেও মিলাতে পারছে না।
দীপান্বিতার অমতেই দীপান্বিতার বিয়ে ঠিক করা হল। সপ্নের রেখায় এক দাগের নিয়তি কেউ ই
মানতে পারছিল না।
আজ আসার কথা দীপান্বিতার অরুণের সাথে দেখা করার কথা। অরুণ দীপান্বিতাকে লাল পাড়ের
সাদা শাড়ি হাতে কাচের চুড়ি কপালে লাল টিপে আর পায়ে আলতায় আবিষ্কার করল । যেন
এক সপ্নের পরীকে আবার অনেকদিন পর স্বপ্নে বাঁধতে পারল অরুণ। অরুণ দীপান্বিতাকে কিছু না
বলে ঢাকেশ্বরী মন্দীরে নিয়ে গেল। সেদিন ছিল সরস্বতী পুজো। আজ বিধি যেন ঠিক সেদিনের
দুইজনকেই নতুন করে গেঁথেছিল এক গাঁথায়। দীপান্বিতা আজ ইতস্তত বোধ করছিল। দীপান্বিতার
কাছে ছিল তিনটা লাল গোলাপ। গোলাপগুলো দীপান্বিতা অরূণকে দিয়ে বলেছিল, ভালবাসি অরুণ।
অরুণ যেন কিছুই শুনেনি দীপান্বিতা সেভাবেই অবাক হয়ে তাকিয়েছিল অরুণের দিকে যেদিন প্রথম
মুখোমুখি দেখায় অরুণ তাকিয়ে থেকেছিল দীপান্বিতার দিকে । অরুণ আজকে খুব কাছ থেকে
দেখছিল দীপান্বিতাকে সবটা ঠিক থাকা সত্বেও কি যেন নেই দীপান্বিতাতে। অরুণ আবিষ্কার করল
দীপান্বিতার সিঁথি এখনো ফাকা। সিঁদুর ছাড়া দীপান্বিতাকে একদম অসম্পূর্ণ লাগছিল এবার অরুণ
দীপান্বিতাকে আর অসম্পূর্ণ রাখল না, সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে সম্পূর্ন দীপান্বিতাকে সম্পূর্ণ ভাবে
অরুণের করে নিল।