ব্লগিং শব্দটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত, আবার অনেকেই আছি যারা ব্লগিং সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। আজকে আপনাদের জানাতে চলেছি ব্লগিং সম্পর্কিত এমন ৫টি কারণ সম্পর্কে যা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে যে আপনার ক্ষেত্রে ব্লগিং শুরু করা উচিত হবে কি না।
ব্লগিং সম্পর্কে কথা বলার আগে ব্লগিং কি তা জানা প্রয়োজন। তো চলুন জেনে নিই ব্লগিং জিনিসটা আসলে কি?
ব্লগিং কি?
কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা দৈনন্দিন জীবনের কোনো ঘটনার উপর ধারাবাহিক ভাবে লেখালেখি করে সে গুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকলের সাথে শেয়ার করাকে ব্লগিং (Blogging) বলা হয়। আর এই লেখাগুলো যে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় সেগুলোকে ব্লগ বা ব্লগসাইট বলে। আপনি এখন এই আর্টিকেলটি যে ওয়েবসাইটে পড়ছেন এটিও একটি ব্লগসাইট। যারা ব্লগ সাইটে লেখালেখি করে তাদেরকে ব্লগার বলা হয়।
এবার জানা যাক ৫টি কারণ সম্পর্কে যা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে যে আপনার ক্ষেত্রে ব্লগিং শুরু করা উচিত হবে কি না।
১. রয়্যালটি উপার্জন
রয়্যালটি উপার্জন বলতে বোঝায়, আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করবেন এবং তার পরবর্তীতে আপনি বেশ কিছুদিন কাজ করা বন্ধ করে রাখলেও আপনার উপার্জন ঠিকই হতে থাকবে। এটাকেই বলা হয় রয়্যালটি উপার্জন পদ্ধতি। ধরুন আপনি একজন লেখক, আপনি একটি বই লিখলেন এবং সেটাকে পাবলিশ করলেন। বইটিকে পাবলিশ করার পর থেকে কিন্তু সেটা বিক্রি থেমে থাকে না। কম হোক বা বেশি সেটা বিক্রি হতেই থাকে। এই পদ্ধতিই মূলত রয়্যালটি উপার্জন।
ব্লগিং করার মাধ্যমেও আপনি এই সুযোগটি তৈরি করতে পারবেন। আপনি নিয়মিত আপনার ব্লগে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় সম্পর্কে লেখালেখি করবেন। আপনার ব্লগের একটা পাঠক গোষ্ঠী তৈরি হবে। তারপর ধীরে ধীরে আপনার ব্লগটি জনপ্রিয় হতে শুরু করবেন। তখন যদি আপনি কোনো কারণে বেশ কিছুদিন ব্লগে কাজ নাও করতে পারেন তাহলেও কিন্তু আপনার উপার্জন থেমে থাকবে না।
২. কাজের স্বাধীনতা
মনে করুন আপনি কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন কর্মকর্তা। আপনাকে কিন্তু সকাল ৯ থেকে ১০ মধ্যে কাজের জায়গায় হাজির হতে হবে এবং সেই প্রতিষ্ঠানের নিয়মমাফিক কাজ গুলো শেষ করে তবেই আপনার ছুটি।
কিন্তু আপনি যদি ব্লগিং করেন তাহলে কিন্তু আপনাকে সেসব কিছু নিয়ে কোনো মাথা ঘামাতে হবে না। ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আপনার কাজের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আপনার নিজের। আপনার ইচ্ছা মত যখন তখন আপনি কাজ করতে পারবেন। কেউ আপনাকে ধরতেও আসবে না বাঁধতেও আসবে না। আপনার কাজের আপনিই রাজা। ব্যাপারটি মাজার না! হ্যাঁ আপনিও ইচ্ছা করলে এই সুযোগটি পেয়ে যাবেন ব্লগিং করার মাধ্যমে। আমরা কিন্তু কোনো মতেই চাকরির সাথে ব্লগিং এর তুলনা করছি না। আপনি যদি ইতিমধ্যে কোনো চাকরি করতে থাকেন তাহলে তা করতে থাকুন। আপনি ইচ্ছা করলে চাকরির পাশাপাশি বাড়তি সময়েও ব্লগিং করতে পারবেন।
৩. ইংরেজির প্রতি দুর্বলতা দূর করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ইংরেজিতে দুর্বল। সঠিক ভাবে ইংরেজি লিখতে বা বলতে গেলে বেশ সমস্যার সৃষ্টি হয়। এজন্য অনেকেই চায় তাদের ইংরেজির উপর দক্ষতা বৃদ্ধি করতে। কিন্তু কোনো না কোনো কারণে সেটা আর হয়ে ওঠে না। তবে আপনি যদি ব্লগিং করেন তাহলে ধীরে ধীরে আপনার ইংরেজির প্রতি দুর্বলতা কমতে থাকবে এবং এক সময় দেখা যাবে আপনার ইংরেজি লেখা ও বলার দক্ষতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর নিয়মিত লেখালেখি করবেন তখন ধীরে ধীরে আপনার ইংরেজির প্রতি দুর্বলতা বেশ অনেকাংশে কমে আসবে।
৪. অল্প বিনিয়োগে কাজ শুরু করা
মনে করুন আপনি একটি ব্যবসা করতে চাচ্ছেন। সেই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনাকে বেশ ভাল পরিমাণের অর্থ খরচ করতে হবে যেটা আপনার কাছে এখন নেই। কিন্তু ব্লগিং শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে এতো অর্থ খরচ করতে হবে না। ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যেই আপনি একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট সেটআপ করতে পারবেন। ধরলাম আপনার কাছে এই পরিমাণ টাকাও নেই। সেক্ষেত্রেও আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। একটি ডোমেইন নেম কিনে গুগল ব্লগারের মাধ্যমে আপনি কাজ শুরু করে দিন।
৫. অর্থ উপার্জনের একাধিক উৎস
আমরা লাইফে যেটাই করি না কেন তার কিছু কারণ অবশ্যই থাকে। আমরা যে কাজ করি বা করতে চায় সেটা থেকে যেন একটা সময় ভাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যায় সেটা সবারই ইচ্ছা থাকে। ব্লগিং এর ক্ষেত্রেও সেটা ব্যতিক্রম কিছু নয়। আপনি যদি সঠিকভাবে ব্লগিং করতে পারেন তাহলে ব্লগিং এর মাধ্যমেও আপনার একটি শক্তিশালী ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন। প্রয়োজন শুধু কাজ করার মানসিকতা ও ধৈর্য।
ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনি একাধিক উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। সেগুলোর মধ্যে কিছু উপায় উল্লেখ করা হলোঃ
- গুগল অ্যাডসেন্স
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- স্পন্সর অ্যাড
- নিজের তৈরি প্রোডাক্ট সেল করা। ইত্যাদি
এছাড়াও বেশ কিছু উপায়ে ব্লগিং এর মাধ্যমে ইনকাম করা সম্ভব। সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত টিউটোরিয়াল খুব শীঘ্রই পাবলিশ করা হবে।
পরবর্তীতে কোন কোন বিষয়ের উপর আপনি আর্টিকেল চাচ্ছেন তা কমেন্টে জানিয়ে দিন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সে বিষয় গুলোর উপর আর্টিকেল পাবলিশ করার চেষ্টা করবো। আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।