আসসালামুয়ালাইকুম, কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা রাখি সবাই অনেক ভালোই আছেন। আজকে আপনাদের সাথে এল হঠাৎ ভালোবাসার গল্প শেয়ার করবো। পুরোটা পড়বেন আশা করি আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে। হটাৎ ভালোবাসা মানে যেই ভালোবাসা আমাদের বলে বলে হয়না, যেটা হয় প্রথম দেখাতে।
অর্থাৎ কাউকে প্রথম দেখাতেই আমাদের অনেকের ভালোবাসার অনুভূতি জন্মায় তার প্রতি। তবে আপনার যদি কাউকে প্রথম দেখায় ভালো লাগে তবে আপনি সেটিকে ভালোবাসা বলতে পারবেন না। সেটি হচ্ছে ভালোলাগা, আর অনেক ক্ষেত্রে প্রথম দেখায় ভালোবাসা হয়। এই গল্পটি ঠিকই এমন। চলুন তবে শুরু করা যাক।
একটি হঠাৎ ভালোবাসার গল্প | প্রথম দেখায় প্রেম
গল্পের ছেলেটির নাম ছিল বিজয়, আর মেয়েটির নাম ছিল নীলাদ্রি। বিজয়ের ব্যাপারে বলতে গেলে, ছেলেটা বেশ শান্ত স্বভাবের। কিন্তু বন্ধুদের সাথে বেশ ভালো সময় যায় তার, সে মেয়েদের সাথে খুব একটা কথা বলে না। দেখতে শুনতে সে খারাপ নয়, সে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।
অন্যদিকে নীলাদ্রি মেয়েটি কিছুটা রাগী স্বভাবের বলা চলে। তবে দেখতে শুনতে বেশ ভালো, এবং তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা অনেক ভালো। বিজয় যে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো একদিন হটাৎ সেখানে আগমন হয় নীলাদ্রির। বিজয় তখন ক্লাস ৯ এ পড়ে।
আসলে নীলাদ্রির বাবার বদলী হওয়াতে তাদের চলে আসতে হয় এখানে। নীলাদ্রি কে তার বাবা ভর্তি করাতে নিয়ে আসে। তখনই বিজয় তাকে প্রথম দেখাতে ভালোবেসে ফেলে।
এর আগে বিজয় অনেক মেয়ে দেখেছে, কিন্তু তার হৃদয়ে কোনো অনুভূতি প্রকাশ হয়নি। কিন্তু নীলাদ্রিকে দেখা মাত্র তার মধ্যে এক প্রকার ভালোবাসার অনুভূতির জন্ম হলো। এরপর থেকে সে নীলাদ্রিকে ফলো করে।
এভাবে কয়েক মাস কেটে যায়, নীলাদ্রি সেই স্কুলে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে, তার অনেক মেয়ে বন্ধু হয়েছে। কিন্তু সে ছেলেদের সাথে খুব একটা কথা বলে না নিজ থেকে। একদিন বিজয় সাহস করে গিয়ে তার সাথে কথা বললো।
নীলাদ্রি লেখাপড়া নিয়ে ছিল অনেক সিরিয়াস। আর তাই বিজয় সবসময় লেখাপড়ার বাহানা দিয়ে তার সাথে কথা বলতো। এতে নীলাদ্রি ভাবতো বিজয়ের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি।
এভাবে তাদের মধ্যে তৈরি হয় একটি সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক। যেটাকে বেস্ট ফ্রেন্ড বলা যেতে পারে। তাদের স্কুল জীবন শেষ হলো, এবার তারা কলেজ জীবনে পা রাখলো। তবে নীলাদ্রি অনেক ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারলেও বিজয় পারেনি। ফলে দুজন আলাদা হয়।
কিন্তু ফেসবুকে তাদের কথা হতো প্রতিদিন। একদিন বিজয় নীলাদ্রি কে সারপ্রাইজ দিতে তাদের কলেজের সামনে উপস্থিত হয়। কিন্তু সেখানে সে দেখলো নীলাদ্রি আর একটা অচেনা ছেলে হাত ধরে আসছে। তারা অনেক হাসছে এবং কথা বলতে বলতে আসছে।
হটাৎ নীলাদ্রি বিজয়কে দেখলো, এবং ছুটে এসে তার সাথে হাত মেলালো। নীলাদ্রি বিজয়ের সাথে ছেলেটির পরিচয় করিয়ে দেয়। নীলাদ্রি বলে সে ঐ ছেলেটিকে ভালোবাসে। আর এটা শুনে বিজয় অনেকটা কষ্ট পায়।
বিজয় পরদিন গ্রামে চলে আসে। মন খারাপ করে কান্নার সাথেই পার করতে থাকে দিনের পর দিন। সে নীলাদ্রিকে যে তার মনের কথা বলতে পারেনি।
কিছুদিন পর নীলাদ্রি এবং ঐ ছেলেটির ব্রেকআপ হয়ে যায়। নীলাদ্রি অনেক ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু ব্রেকআপের পর সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সে তার লেখাপড়ায় বেশি ফোকাস করবে, বাড়তি কিছু নিয়ে ভাবতে চায় না সে। এভাবে কেটে গেল একটি বছর।
বিজয় আর নীলাদ্রির অনেক মাস কথা হয়নি। কারণ বিজয় রাগ করে নীলাদ্রিকে সব নাম্বার থেকে ব্লক এবং ফেসবুকেও ব্লক করে দিয়েছিল। নীলাদ্রি অনেক কল এবং চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।
একদিন হটাৎ দুজনের দেখা। বিজয় ভেবেছিল হয়তো এখনো নীলাদ্রি ছেলেটির সাথে রিলেশনে রয়েছে। তাই জিজ্ঞেস করলো ভালোবাসার মানুষের সাথে কেমন যাচ্ছে সব। নীলাদ্রি রাগ করে চলে যেতে থাকলো, কারণ এতদিন বিজয় তার কল মেসেজ কিছুর উত্তর দেইনি। তাকে ব্লক করে রেখেছে।
বিজয় অনেক কষ্ট করে তাকে মানায়, এবং নীলাদ্রি সব কথা বিজয়কে খুলে বলে। বিজয়ের সেসব শুনে অনেক কান্না পায়। বিজয় সেখানে তার ভালোবাসার কথা বলে, নীলাদ্রি বলেছিল রাজি হতে পারি যদি বলো সারাজীবন পাশে থাকবে। বিজয় বলে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
এভাবেই একটি হটাৎ শুরু হওয়া ভালোবাসা পূর্ণতা পায়। তাদের ভালোবাসার মধ্যে অনেক বাধা আসে, কিন্তু আজ তারা একে অপরের ভালোবাসার মানুষ। গল্পটি কেমন লাগলো জানাবেন, শেষ করছি এই পর্যন্ত। আল্লাহ হাফেজ।