গত সপ্তাহেই স্প্যানিশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল লা লিগা শুরু হয়ে গিয়েছে। কি অবস্থা স্প্যানিশ জায়ান্ট এফ সি বার্সেলোনার সর্বকালের অন্যতম সেরা আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসিকে দল থেকে হারানোর পর? গত দুই ম্যাচের মধ্যে এক ম্যাচ জয় এক ম্যাচ ড্র। মেসি থাকলে কি দুটো ম্যাচই জয় সম্ভব হতো?
একসময় বার্সেলোনা পুরো ইউরোপ মাতিয়েছে। ইউরোপীয় ফুটবলে রাজত্ব করেছে কাতালানরা। একে একে পুয়োল, জাভি, ইনিয়েস্তা চলে যাওয়ার পর লিওনেল মেসিকেও ক্লাব ছাড়তেই হতো একদিন না একদিন। কিন্তু তার এভাবে ক্লাব ছেড়ে চলে যাওয়াটা অনেক ফুটবল ভক্তরাই মেনে নিতে পারছেন না। তারপর আবার ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে পাড়ি জমানোটা আরো দৃষ্টিকটু কেননা তাদের সাথে আছে নেতিবাচক ইতিহাস।
সেই ২০১৭ এর পর থেকে কাতালানদের মেসিনির্ভরতা ক্রমেই বেড়েছে। মেসিকে ফরোয়ার্ড লাইন ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে এটাকিং মিডফিল্ডার তথা প্লেমেকারের রোলে। ২০২০ এ বার্সেলোনার ডাচ কিংবদন্তী ডিফেন্ডার রোনাল্ড কোম্যান জাতীয় দলের কোচের পজিশন ছেড়ে বার্সার দায়িত্ব নেয়ার পর সেই মেসি নির্ভরতা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছিলো। এখন হুট করেই মেসির বিদায়ে যেন বার্সেলোনা তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন অংশটি হারিয়ে ফেলেছে। মেসিবিহীন বার্সাকে আপাতদৃষ্টিতে দূর্বল মনে হলেও তারা অতটা দুর্বল নয়।
গত দুই ম্যাচে ডি ইয়ং ও মেমফিস ডিপায় তাদের অবদানের মাধ্যমে সে প্রমান রেখেছে। এখন দেমির, গঞ্জালেজদের মতো তরুনরা আগের চেয়ে আরো বেশি মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছে। পেদ্রি বরাবরের মতোই তার পায়ের যাদু দেখিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এই দলের সবচেয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড় হলো পেদ্রি। তার প্রতি কোচদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। নতুন খেলোয়াড় হিসেবে এমারসন নিজেকে অতটা মেলে ধরতে না পারলেও এরিক গার্সিয়া ইতোমধ্যেই নিজেকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। সে যে বার্সার ভবিষ্যত কাপ্তান তা এখনই বোঝা যাচ্ছে।
সে ম্যাচে নিজেকে পুরোপুরি বিলিয়ে দিয়ে খেলছে। সে থাকতে প্রতিপক্ষের জন্য কোনো গোলের সুযোগ নেই। তবে বার্সেলোনার ফিনিশিং আগের চেয়ে একটু উন্নত হলেও কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। বার বার সুযোগ পেয়ে তারা লক্ষ্যভেদ করতে পারছে না। তাই বার্সার হেড কোচ রোনাল্ড কোম্যানকে এই রোল নিয়ে আরো কাজ করতে হবে। গ্রিজম্যান তার মূল্য অনুযায়ী যে অনেক বেশি ভালো খেলছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দলের সবচেয়ে প্রমিসিং মিডফিল্ডার এখন ডি ইয়ং ও পেদ্রি। যদি সবকিছু এভাবেই চলতে থাকে তাহলে ব্রাজিলিয়ান তারকা ফিলিপ কৌটিনহো ইঞ্জুরি থেকে ফিরলেও মূল দলে জায়গা হবে না। তবে হয়তোবা ম্যানেজার সামনের কোনো ম্যাচে আনসু ফাতিকে মূল দলে সুযোগ দিতে পারেন।
সবশেষ কথা হলো বার্সেলোনা যদি টিম ওয়ার্ক ভালো করতে পারে তাহলে মেসিকে ছাড়াই ইউরোপের সব বড় বড় ট্রফিগুলো জয় করা সম্ভব। সেটাই দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সারা বিশ্বের অগনিত লস ব্লাংকোস ফ্যানরা।
আজকে এখানেই শেষ করছি। ফুটবল সংক্রান্ত ভালো ভালো নিউজ পেতে grathor.com এর সাথেই থাকুন। সবাই মাস্ক পড়ুন ও সুস্থ থাকুন।