বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। সময়ের ব্যবধানে এবার বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।এই ৪৯ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।
যেসব পণ্যের দাম কমানোর প্রস্তাবঃ
বর্তমানে করোনা ভাইরাস বেশ প্রভাব ফেলছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। সবাই যাতে সুচিকিৎসা পায় সেজন্য করোনাভাইরাসের টেস্ট কিটের দাম কমানোর জন্য বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া স্বর্ণের দাম কমিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে যেসব আমদানিকৃত চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন, সেগুলোর দাম কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
তাছাড়া দাম কমতে পারেঃ এলপিজি সিলিন্ডার,স্বর্ণ,স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়পার,জুতা তৈরির কাঁচামাল সরিষার তেল,চিনি,আলু ও ভুট্টা থেকে স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবার,করোনাভাইরাস টেস্ট কিট, মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই এবং আইসিইউ যন্ত্রপাতি,ডিটারজেন্ট,মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের কাঁচামাল,রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনারের কম্প্রেসার,আমদানি করা কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশ,কাগজ,প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং,সৌর ব্যাটারি,পলিস্টার, রেয়ন, কটন ও অন্যান্য সিনথেটিক সুতা এবং টেক্সটাইলের কাঁচামাল,বেইজ অয়েল, লুব্রিকেটিং অয়েল ও লিক্যুইড প্যারাফিন।
যেসব পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবঃ
সিগারেট ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এটি শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই এই ধরণের পণ্যের দাম প্রায় সব বাজেটেই বাড়ানো হয়। কার ও জিপ রেজিস্ট্রেশনসহ বিআরটিএ প্রদত্ত অন্যান্য সার্ভিস ফির ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আসবাব কেনায় ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর কর বাড়ছে। আমদানিকৃত ওয়ালফ্যান – বিদেশ থেকে ওয়ালফ্যান কিনলে তার জন্যও চড়া শুল্ক দিতে হবে। ৭.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে শুল্কের হার।
এছাড়া দাম বাড়তে পারেঃ আমদানি করা পেঁয়াজ, লবন, মধু, দুধ, দুগ্ধজাতীয় পণ্য, চকলেট,আমদানি করা অ্যালকোহল,অনলাইন কেনাকাটা,ইন্টারনেটের খরচ,মোবাইল ফোনের খরচ ও মোবাইল ফোনের সিম কার্ড,আসবাবপত্র,বিদেশি টেলিভিশন,প্রসাধন সামগ্রী,সিরামিকের সিঙ্ক, বেসিন,কার ও জিপের নিবন্ধন ব্যয়,সাইকেল ও বিদেশি মোটর সাইকেল,চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়া,শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ সার্ভিস,আলোকসজ্জা,ড্রেজার,লোহা, বাণিজ্যিক যানবাহনের যন্ত্রাংশ, ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ,ফার্নেস তেল।
এই বাজেট নিয়ে সরকার বলছে জীবিকা ও উন্নয়ন বান্ধব বাজেট হবে। অপরদিকে বিএনপির ভাষায় এটি ‘গতানুগতিক ও অন্তঃসারশূন্য’ ছাড়া আর কিছু নয়।জানা গেছে, এবারের বাজেটে নির্দিষ্ট কিছু শর্তে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেট হলো ‘মানুষকে রক্ষার বাজেট’।শুক্রবার (১২ জুন) ২০২০-২১ অর্থবছরের মোট পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এখন দেখার বিষয় এই বাজেট কি প্রভাব ফেলে বাংলাদেশের মানুষের জনজীবনে।